Q/AAbdullahil HadiScholar Bangla

মহিলাদের জন্য ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার বিধান কি

ওয়াজ শোনার উদ্দেশ্যে নারী/মহিলাদের জন্য ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার বিধান কি?
যেসব ওয়াজ মাহফিলে কুরআন ও সহিহ সুন্নাহ ভিত্তিক ওয়াজ/আলোচনা হয় সেগুলোতে ইসলাম সম্পর্কে বিশুদ্ধ জ্ঞানার্জন, সৎ আমল এবং সঠিক পথ নির্দেশনা পাওয়ার উদ্দেশ্যে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল মুসলিমদের অংশগ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নারী-পুরুষ উভয়েই জ্ঞানার্জন ও সৎকর্ম করতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশিত।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً ۖ وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
“যে ব্যক্তি ঈমান অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে চাই সে পুরুষ হোক কিংবা নারী হোক- আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব যা তারা করত।”
[সূরা নাহল: ৯৭]

তিনি আরও বলেন,

وَمَن يَعْمَلْ مِنَ الصَّالِحَاتِ مِن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَٰئِكَ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ وَلَا يُظْلَمُونَ نَقِيرًا ‎
“যে সব মানুষ-পুরুষ হোক কিংবা নারী হোক-কোন সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রাপ্য তিল পরিমাণ ও নষ্ট হবে না।”
[সূরা নিসা: ১২৪]

তিনি আরও বলেন,

أَنِّي لَا أُضِيعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنكُم مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ ۖ بَعْضُكُم مِّن بَعْضٍ ۖ
“আমি তোমাদের কোন আমল কারীর আমল বিনষ্ট করি না-চাই সে পুরুষ হোক অথবা মহিলা হোক।”
[সূরা আলে ইমরান: ১৯৫]

নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেক মুসলিমদের জন্য ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা ফরজ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
طَلَبُ العِلْمِ فَرِيْضَةٌ عَلَىْ كُلِّ مُسْلِمٍ
“ইলম (শরিয়ত সংক্রান্ত জ্ঞান) অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরজ।”
[সহিহুল জামে-আলবানি হা/৩৯১৪]

সুতরাং কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক ওয়াজ মাহফিলে‌ পুরুষরা যেমন অংশগ্রহণ করবে তেমনি নারীরাও অংশ গ্রহণ করবে যদি তাদের ওয়াজ শোনার মত নিরাপদ ও সুব্যবস্থা থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে কতিপয় শর্ত মেনে চলা আবশ্যক। যেমন:

  1. ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার জন্য স্বামী অথবা অভিভাবকের সম্মতি থাকা।
  2. মাহফিলে কোনও ধরণের ফিতনা-ফ্যাসাদে জড়িয়ে না পড়া।
  3. পরিপূর্ণ পর্দা রক্ষা করা।
  4. স্বামী বা মাহরাম পুরুষ (যেমন: বাবা, ভাই, দাদা, চাচা, মামা ইত্যাদি) ছাড়া ওয়াজ শোনার দূর-দূরান্তে সফর না করা।
  5. পর-পুরুষদের সাথে ফ্রি মিক্সিং না থাকা।
  6. পরপুরুষদের সামনে নিজের সাজসজ্জা প্রকাশ না করা।
  7. বাড়ির বাইরে বের হলে আতর-সুগন্ধি ব্যবহার থেকে বিরত থাকা।
  8. মাহফিলে যাওয়ার কারণে যদি তার ঘর-বাড়ি অনিরাপদ হয়ে যায় বা তার অনুপস্থিতিতে তার অর্থ-সম্পদ বা সন্তান-সন্ততির ক্ষতির আশঙ্কা থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং সন্তানদের প্রতি যত্ন নিবে।

উল্লেখ্য যে, বর্তমান যুগে আমাদের দেশে যে সব ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় সেগুলো অধিকাংশই গভীর রাত অবধি চলে। সেখানে দেখা যায়, মাহফিলের নামে অনেক পাপাসক্ত যুবক-যুবতী রাতের আধারে হারাম ও অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার সুযোগ খোঁজে।

সুতরাং এ সব রাতের ওয়াজ মাহফিলগুলোতে যুবক-যুবতীদের অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রত্যেক অভিভাবকের সতর্ক দৃষ্টি রাখা আবশ্যক।
আল্লাহু আলাম।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture