Q/A

নামাযের সময় হাসলে নামাযের হুকুম কি

কোনো কারণে নামাজে দাঁড়িয়ে হাসলে বা কোন কিছু দেখে বা হটাত কোন কথা মনে পড়ে হেসে ফেললে তখন কি ওযু ভেঙ্গে যাবে?
নামাজ ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে-

أَوّلُ مَا يُحَاسَبُ بِهِ الْعَبْدُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ صَلَاتُهُ
কিয়ামত দিবসে বান্দার সর্বপ্রথম হিসাব নেওয়া হবে নামাযের মাধ্যমে।
-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬৯৪৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৮৬৬

হযরত উমর রা.-এর প্রসিদ্ধ বাণী-

إِنّ أَهَمّ أَمْرِكُمْ عِنْدِي الصّلَاةُ. فَمَنْ حَفِظَهَا وَحَافَظَ عَلَيْهَا، حَفِظَ دِينَهُ. وَمَنْ ضَيّعَهَا فَهُوَ لِمَا سِوَاهَا أَضْيَعُ.
নিশ্চয়ই আমার কাছে তোমাদের সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নামায। যে ব্যক্তি নামাযের হেফাযত করল, যত্ন সহকারে তা আদায় করল, সে তার দ্বীনকে হেফাযত করল। আর যে তাতে অবহেলা করল, (দ্বীনের) অন্যান্য বিষয়ে সে আরো বেশি অবহেলা করবে।
-মুয়াত্তা মালেক, বর্ণনা ৬; মুসান্নাফে আবদুর রযযাক, বর্ণনা ২০৩৮

তাই নামাযে হাসি আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার দরবারে শিষ্টাচারের পরিপন্থী।

অতএব, নামায মনোযোগ সহকারে ‘তাযীম’ বা আল্লাহর প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে আদায় করা উচিত। কারণ, আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন,

حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطَىٰ وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ
সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও।
[২:২৩৮]

সালাতে হাঁসা- এক্ষেত্রে তিনটি সুরত হতে পারে।

  • যদি শুধুমাত্র দাঁত খোলা হয় এবং হাসির আওয়াজ একেবারেই শোনা না যায় – তাহলে নামায ভঙ্গ হবে না। ওযুও ঠিক থাকবে আবার নতুন করে ওযু করতে হবে না; তবে এটা মাকরূহ।
  • আর যদি এত বেশি আওয়াজ হয় যে, সে নিজে বা তার খুব কাছের মানুষ শুনতে পায় এই হাসির আওয়াজ তবেই নামায ভেঙ্গে যাবে।
  • কিন্তু যদি কেউ এত জোরে হাসে যে অন্য লোক বা মজলিসে থাকা লোকেরা এই হাসির আওয়াজ শুনতে পায় – তাহলে নামায ও অযু উভয়ই ভেঙ্গে যাবে।

তবে এ বিষয়গুলো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রযোজ্য হবে, কেননা হাসির কারণে নাবালকদের অযু ও নামাজ নষ্ট হবে না।

হাদিস শরিফে এসেছে, আনাস রাযি. বলেন,

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ –ﷺ– يُصَلِّي بِنَا ، فَجَاءَ رَجُلٌ ضَرِيرُ الْبَصَرِ ، فَوَطِئَ فِي خَبَالٍ مِنَ الْأَرْضِ ، فَصُرِعَ ، فَضَحِكَ بَعْضُ الْقَوْمِ ، فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ –ﷺ– مَنْ ضَحِكَ أَنْ يُعِيدَ الْوُضُوءَ وَالصَّلَاةَ
রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে নিয়ে নামাজ পড়ছিলেন। তখন এক অন্ধ ব্যক্তি এসে পিচ্ছিল মাটিতে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল। তাতে কতক লোক হেসে দিলো (নামাজরত অবস্থায়)। যারা হেসেছিল রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদেরকে পুনরায় অজু করে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিলেন।
(দারাকুতনী ৫৮০)

ইমরান বিন হুসাইন রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে,
مَنْ ضَحِكَ فِي الصَّلَاةِ قَرْقَرَةً ، فَلْيُعِدِ الْوُضُوءَ وَالصَّلَاةَ
যে ব্যক্তি নামাযে উচ্চস্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামায পুনরায় আদায় করবে।

হাসান বিন কুতাইবা রহ. বলেন,

إِذَا قَهْقَهَ الرَّجُلُ أَعَادَ الْوُضُوءَ وَالصَّلَاةَ
যখন কোনো ব্যক্তি উচ্চস্বরে হাসি দেয়, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে।
(সুনানে দারা কুতনি ১/১৫৬)

فتاوی عالمگیری

“(ومنها القهقهة) وحد القهقهة أن يكون مسموعا له ولجيرانه، والضحك أن يكون مسموعا له ولا يكون مسموعا لجيرانه، والتبسم أن لا يكون مسموعا له ولا لجيرانه كذا في الذخيرة. القهقهة في كل صلاة فيها ركوع وسجود تنقض الصلاة والوضوء عندنا، كذا في المحيط، سواء كانت عمدا أو نسيانا كذا في الخلاصة، ولا تنقض الطهارة خارج الصلاة، والضحك يبطل الصلاة ولا يبطل الطهارة، والتبسم لا يبطل الصلاة ولا الطهارة، ولو قهقه في سجدة التلاوة أو في صلاة الجنازة تبطل ما كان فيها ولا تنقض الطهارة، كذا في فتاوى قاضي خان.والقهقهة من الصبي في حال الصلاة لا تنقض الوضوء كذا في المحيط.”
(الفتاوى الهندية: كتاب الطهارة، الباب الأول في الوضوء، الفصل الأول في فرائض الوضوء 1/ 12، ط. رشيديه)
الفتاوی الھندیه:(12/1، ط: دار الفکر)

القهقهة في كل صلاة فيها ركوع وسجود تنقض الصلاة والوضوء عندنا. كذا في المحيط سواء كانت عمدا أو نسيانا كذا في الخلاصة.

ولا تنقض الطهارة خارج الصلاة والضحك يبطل الصلاة ولا يبطل الطهارة والتبسم لا يبطل الصلاة ولا الطهارة، ولو قهقه في سجدة التلاوة أو في صلاة الجنازة تبطل ما كان فيها ولا تنقض الطهارة. كذا في فتاوى قاضي خان.
والقهقهة من الصبي في حال الصلاة لا تنقض الوضوء كذا في المحيط.

আল্লাহু আলাম

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture