Q/AAbdullahil Hadi

স্মৃতির উদ্দেশ্যে কুরবানির পশু জবাইয়ের ছবি তোলার বিধান

বর্তমান শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফকিহ আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমিন রহ. এর নিকট প্রশ্ন করা হয়:
কুরবানির সময় মানুষ প্রচুর পরিমাণে একটা গুনাহের কাজ করে থাকে। তা হল, কুরবানি করা অবস্থার ছবি তোলা। তাদের দাবী, এতে স্মৃতি ধরে রাখা হয়। অথচ তাতে কোনও উপকার নেই। এ ক্ষেত্রে আপনার উপদেশ কী? জাযাকাল্লাহ খাইরান।

উত্তরে তিনি বলেন,
“এ বিষয়টা আমি প্রথম শুনলাম যে, মানুষ স্মৃতির উদ্দেশ্যে কুরবানির পশু জবাই করার সময় ছবি তোলে। এটা আবার কুরবানির পশুর কোন ধরণের স্মৃতি? সব মানুষই জবাই করে। সবাই জবাই করতে জানে।

নিশ্চিতভাবে এটা আমাদের নিকট আমদানিকৃত একটি অপসংস্কৃতি। অন্যথায় তা আমাদের পরিচিত ছিল না।

যাহোক, স্মৃতির উদ্দেশ্যে কুরবানির এ সব ছবি তোলা জায়েজ নাই। কারণ স্মৃতির উদ্দেশ্যে ছবি তোলা সর্বাবস্থায় হারাম-চায় তা হাতের কাজ (রং তুলির মাধ্যমে অঙ্কন) হোক বা ইনস্ট্যান্ট ফটোগ্রাফি মেশিনের সাহায্যে হোক বা এমন ফটোগ্রাফি মেশিনের সাহায্য হোক যার মাধ্যমে তোলা ছবি পরবর্তীতে ডেভলোপ করা হয়। এগুলো সবই হারাম

যে কোনও পরিস্থিতিতে ছবি তোলা হারাম একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া। যেমন: জাতীয় পরিচয়পত্র, মুদ্রার মধ্যে যে সব ছবি থাকে, লাইসেন্স ইত্যাদি-যে সবক্ষেত্রে মানুষ ছবি বর্জন করতে সক্ষম নয়। তবে কেবল স্মৃতির উদ্দেশ্যে হলে, আমি এ জায়গা (মক্কার মসজিদুল হারাম) থেকে বলছি, যার নিকট কেবল স্মৃতির উদ্দেশ্য ছবি আছে তার জন্য আবশ্যক হল, সেগুলো পুড়িয়ে ফেলা।

অন্যথায় সে গুনাহগার হবে। বিশেষ করে কিছু মানুষ যেটা করে যে, তারা পরিচয়পত্রে (বা এ্যালবামে) থাকা বাবা, চাচা, খালু প্রমুখের ছবিগুলো সংরক্ষণ করে তাদেরকে স্মরণ করে। এটা হারাম। এতে অপরিহার্য ভাবে মৃতের সাথে অন্তর ঝুলে থাকে। যার ফলে আকিদার ক্ষেত্রে ত্রুটি সৃষ্টি হতে পারে।

মোটকথা, আমি বলব, যার কাছে কোনও ছবি আছে স্মৃতির উদ্দেশ্যে তার জন্য সেগুলো পুড়িয়ে ফেলা আবশ্যক। তবে যদি ছবি রাখা প্রয়োজন হয় এবং এ ছাড়া উপায় না থাকে তাহলে সে ক্ষত্রে মাজুর (অপরাগ)। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ
“আর তিনি দীনের মধ্যে এমন কিছু রাখেন নি যে, তোমরা সমস্যায় পতিত হও।”
[সূরা হজ্জ]

অত:এব, কুরবানির পশু জবেহ করার সময় স্মৃতির উদ্দেশ্যে ছবি তোলা জায়েজ নাই। আর যদি স্মৃতির উদ্দেশ্যে যদি জায়েজ না হয়ে থাকে তাহলে বাকি থাকলো- এই ছবি তোলাটা অনর্থক কাজ-যাতে কোনও উপকার নাই যদিও তা ইনস্ট্যান্ট ফটোগ্রাফি মেশিনের সাহায্যে হয়।”

মক্কা মুকাররমার মসজিদুল হারামে আল্লামা মুহাম্মদ সালেহ আল উসাইমিন রহ. কর্তৃক প্রদত্ত ফতোয়ার অডিও থেকে অনুদিত।
[ফাতাওয়াল হারামিল মাক্কী, ১৪১০ হিজরি, ক্যাসেট নং-১২]

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture