Q/AAbdullahil Hadi

জিনা থেকে বাঁচার ১৫ উপায়

নি:সন্দেহে দুনিয়ায় যত ভয়াবহ ও বড় গুনাহ আছে সেগুলোর মধ্যে যিনা অন্যতম। এর জন্য দুনিয়াতে যেমন ইসলামি ফৌজদারি আইনে কঠোর শাস্তি রয়েছে তেমনি আখিরাতে রয়েছে ভয়াবহ আজাব। তাই এমন কঠিন গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা প্রত্যেক ইমানদার যুবক-যুবতীর জন্য ফরজ
নিচে জিনা থেকে বাঁচার কয়েকটি নির্দেশনা প্রদান করা হল:

১) এমন কোনো কাজ করা যাবে না যা জিনার দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে।
যেমন:
কোন পর নারীর সাথে নির্জনে দেখা-সাক্ষাত, বিনা প্রয়োজনে তার সাথে ফোনালাপ, লিখিত বা ভিডিও চ্যাটিং, বিনা প্রয়োজনে তার আশে পাশে অবস্থান করা, ছবি দেখা, স্পর্শ করা, হাসি- তামাশা করা ইত্যাদি।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَىٰ
“আর তোমরা জিনার কাছেও যেও না।” (সূরা ইসরা: ৩২)

২) মনে কুবাসনা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলে তৎক্ষণাৎ ‘আউযুবিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম’ ”আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি” পাঠ করা এবং ঐ কু চিন্তা থেকে নিবৃত হওয়া।

৩) বিয়ে করে স্ত্রীর সাথে সময় কাটানো। কিন্তু কোন কারণে বিয়ে করা সম্ভব না হলে বা বিয়ের পরে স্ত্রী সাথে না থাকলে জৈবিক চাহিদা দমনের জন্য নিয়মিত নফল রোযা রাখা।

৪) তরজমা ও ব্যাখ্যা সহ নিয়মিত কুরআন ও হাদিস পাঠ করা, কুরআন তিলাওয়াত শোনা ও বিজ্ঞ আলেমদের বক্তব্য শোনা।

৫) ভালো ও উপকারী কাজে ব্যস্ত থাকা, মানুষের উপকার করা ও জিকির-আজকারে সময় দেয়া ও কুরআন মুখস্থ করা।

৬) বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যেখানে-সেখানে ঘোরাফেরা না করা আর বাড়িতে থাকা কালীন যথাসম্ভব নির্জন ঘরে একাকী সময় না কাটানো। এর পরিবর্তে বাবা-মা ও ভাই-বোনদের সাথে সময় কাটানো। বিবাহিত হলে স্ত্রী-পরিবারে সাথে থাকা।

৭) জিনার ভয়াবহ পরিণতি তথা দুনিয়ার শাস্তি, লাঞ্ছনা ও আখিরাতের কঠিন আজাবের কথা স্মরণ করা।

৮) মহান আল্লাহকে ভয় করা এবং এ কথা মনে রাখা যে, দুনিয়ার কোন মানুষ আমাকে না দেখলেও বিশ্বচরাচরের মালিক মহান আল্লাহর চোখের সামনে এতটুকু গোপন নাই।

৯) খারাপ, অশ্লীল ছবি, ভিডিও ও ম্যাগাজিন ইত্যাদি না দেখা, পর্দা হীন যুবতী মেয়েদের উপস্থিতি আছে এমন স্থান থেকে যথাসাধ্য দূরে থাকা। হঠাৎ কোন বেপর্দা নারীর দিকে দৃষ্টিপাত হলে দৃষ্টি অবনত করা।

১০) গান-বাজনা না শোনা এবং কনসার্ট ও নৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ না করা। গান-বাজনা মানুষের মনে মদের মত কাজ করে, মনের মধ্যে কুচিন্তা জাগ্রত করে এবং কামনার আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

১১) মদ ও নেশাদার বস্তু থেকে দূরে থাকা। এগুলোর মাধ্যমে অন্তরে কুবাসনা মাথা চাড়া দিয়ে উঠে এমনকি হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে মানুষ নারী ও শিশু ধর্ষণের মত জঘন্য কাজ করতেও পিছপা হয় না।

১২) মদ ও নেশা গ্রহণ করে, নানা পাপাচারে জড়িত, সালাত আদায় করে না ও বাজে কাজে সময় অপচয় করে এ জাতীয় খারাপ বন্ধুদের সংশ্রব ত্যাগ করে সৎ, চরিত্রবান, দ্বীনদার ও নামাযী বন্ধুদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করা।

১৩) দ্বীনদার বন্ধুদের সাথে দ্বীন চর্চা, জ্ঞানার্জন ও সামাজিক উন্নয়ন মূলক কাজে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে সময়কে কাজে লাগানো।

১৪) যৌন উদ্দীপক খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা।

১৫) ফেসবুকে বাজে আড্ডা, প্রেম, ক্রাশ, মেয়ের ছবি ও ভিডিও আপলোড দেয় এবং ফালতু বিষয়ে সময় নষ্ট করে এ জাতীয় গ্রুপ বা পেইজে থাকলে সেগুলো থেকে বের হয়ে আসা। এর পরিবর্তে কুরআন-হাদিস ও বিশুদ্ধ আকিদা নির্ভর পেইজ ও গ্রুপের ভালো ভালো ইসলামি পোস্টগুলো অনুসরণ করা এবং ভালো আলেমদের প্রশ্নোত্তর বা বিভিন্ন লেখুনি থেকে উপকৃত হওয়া এবং ভালো মানের উপকারী ভিডিও আপলোড দেয় এমন ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে সাবস্ক্রাইব রাখা।

আল্লাহ তাওফিক দান করুন এবং আমাদেরকে সব ধরণের আল্লাহর নাফরমানি থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

আরও পড়ুন:
পাপ থেকে বাঁচার ১০ উপায়: যা সকল মুসলিমের জানা আবশ্যক

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture