Writing

পরিচয় দিয়ে কথা বলা

কোনো অপরিচিত কিংবা পরিচিত ব্যক্তি যিনি অপরিচিত ব্যক্তির মতো যদি আপনাকে হঠাৎ ফোন করে বা মেসেজ দিয়ে বলেন ‘হ্যালো’, তারপর অন্য কথাবার্তা শুরু করেন তখন আপনার কেমন লাগবে, বলুন তো?
নিশ্চয়ই আপনি প্রথমেই ভাববেন লোকটা কে? তার পরিচয় না দেওয়ার বিষয়টি আপনাকে একটু হলেও বিরক্ত করবে। এছাড়া, তাকে চিনতে না পারায় তার সাথে কথা বলতেও তেমন একটা মুড থাকবে না। আপনার অবচেতন মন বিরক্তসূচকভাবে এটাই মনে মনে বলবে, পরিচয় না দিয়ে এভাবে ‘হ্যালো’ বলার মানে কী?

আমরা অনেক সময় কারো সাথে ফোনে কিংবা মেসেজে কথা বলার সময় নিজের পরিচয় না দিয়ে সোজা ‘হ্যালো’ বলে অন্যান্য কথাবার্তা শুরু করে দিই। এটা মোটেও ইসলামিক ম্যানার নয়। ইসলামিক শিষ্টাচার হচ্ছে আগে নিজের পরিচয় তুলে ধরে তারপর কথা বলতে হবে। হোক সে আপনার পরিচিত তবু্ও কখনো অপরিচিত নাম্বারে যোগাযোগ করলে তাকে আগে আপনার পরিচয় দিতে হবে। আর এই সুন্দর শিক্ষা স্বয়ং আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে কুরআনের মাধ্যমে দিয়েছেন।

আল্লাহ যখন মূসা (আঃ) এর সাথে কথা বলা শুরু করেন তখন কীভাবে শুরু করেছিলেন, জানেন? নিজের পরিচয় দিয়ে শুরু করেছিলেন। সুবহান’আল্লাহ! কত সুন্দর শিক্ষা।
আল্লাহ তা’য়ালা মূসা (আঃ) এর সাথে কথা বলার শুরুতেই বলেছেন,
নিশ্চয় আমি তোমার রব; সুতরাং তোমার জুতা জোড়া খুলে ফেলো, নিশ্চয় তুমি পবিত্র ‘তুওয়া’ উপত্যকায় রয়েছ’।
[সূরা ত্ব-হা: ১২]

আমরা অনেকসময় কারো বাসায় গেলে ভেতর থেকে কেউ ‘কে’ জিজ্ঞেস করলে কিংবা ফোন রিসিভ করে একই প্রশ্ন করলে বলি ‘আমি’ বলছি। আরে আমাকে তুমি চিনছো না! ‘আমি’ তোমার অমুক। এভাবে অনেক কথা বলে ফেলি কিন্তু ‘আমি’টা কে সেটা সহজে স্পষ্ট করি না। একবার এক সাহাবীর এ ধরণের আচরণ রাসূল (সাঃ) এর মোটেও পছন্দ হয় নি। তিঁনি খুবই বিরক্তিবোধ করেছিলেন। জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একবার আব্বার করযের ব্যাপারে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরজায় এসে করাঘাত করলাম। তিঁনি জিজ্ঞেস করলেন, কে? বললাম, আমি। তিঁনি অসন্তুষ্টির স্বরে বললেন, ‘আমি আমি’ (অর্থাৎ জানতে চাওয়া হয়েছে নাম পরিচয় আর তুমি বলছ,‘আমি’!)
[সহীহ বুখারী, ৬২৫০; সহীহ মুসলিম, ২১৫৫]

এজন্য কথা বলার সময় আমরা যেন শুরুতেই আসসালামু’ আলাইকুম বলে নিজের পরিচয় দিয়ে কথা বলি। যেমন আমি আপনার ভাতিজা ‘আব্দুল্লাহ’ বলছি, আমি তোমার বন্ধু ‘আব্দুর রহমান’ বলছি, তারপর মূল কথা বলবো। এভাবে পরিচয় দিয়ে কথা বললে যে কারো এটেনশন সহজে পাওয়া যাবে। এতে আপনার কমিউনিকেশন আরও সুন্দর হবে।

লিখেছেন

পরকালীন তথা স্থায়ী জীবনের লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি। নিজে হেদায়েতের ওপর অটল থাকার পাশাপাশি অন্যেদেরকেও হেদায়েতের দিকে আহবান করা তথা পথ হারাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনাই আমার লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture