Writing

The Best life Style: চুল

চুল নিয়ে চুলোচুলি আমরা সবাই করি। ইদানীং কালের যুবক ভাইদের চুলের কিছু স্পেশাল ধরন:
লাচ্ছা সেমাই (লাল রঙা সেমাই চুল)
তাজা ঘাস ( সবুজ রঙের ঘাস চুল)
আম্মু চুল (মেয়েদের মতো লম্বা চুল)
এরোপ্লেন চুল (চুল কেটে প্লেন ডিজাইন)
মোরগ চুল (দুপাশে ছেঁটে মাঝখানে ঝুঁটি)
আরও আছে, গম্বুজ চুল, পুঞ্জ চুল, আওলা চুল, ঝাউলা চুল, লেয়ার চুল, ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি…

চুলকে নানা রঙে, নানা ঢঙে, নানা আকৃতিতে কেঁটে ছেঁটে কেউ হতে চাই নায়ক, কেউ গায়ক, কেউ খেলোয়াড়, কেউ টিকটকার, কেউ আল্ট্রা স্মার্ট, কেউ বা আবার গুন্ডা।
কতো ডিজাইনা আর মডেলের চুল যে রাখি আমরা তার কোনো শেষ নাই। নিজের মনের মতো কার্ট দিয়ে স্মার্ট হয়ে মেয়ে পটানোর জন্য যে পিপারেশন নিতে হবে! তাই চুলকে করতে হবে সবার থেকে আলাদা ভিন্ন রূপে ভিন্ন রঙে! এতে বিধর্মীদের অনুসরণ হোক, আর কাফেরদের অনুসরণ হোক। তাতে আমার কোনো যায় আসে না। ব্যাপারটা দাড়িয়েছে ঠিক এমনই!
অথচ রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন,

‘যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের অনুকরণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’
(আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৩১)

নবী (সঃ) চুলের যে স্টাইল দেখিয়ে গেছেন সেটাই সবচেয়ে সেরা স্টাইল। আমাদের মন মানষিকতা নষ্ট হয়ে গেছে দেখে আমরা জংলী সাজি, অদ্ভুত সাজি, কিম্ভুত সাজি। কিন্তু নবী (সঃ) এর চুলের যে তরিকা দেখিয়ে গেছেন সেটাকে কল্পনায় নিয়ে এসে বাকিগুলোর সাথে তুলনা করে দেখুন না কোনটা বেশি সুন্দর, কোন স্টাইলটা সেরা, কোনটা শরীরের জন্য উপকারী?
আপনি বলতে বাধ্য হবেন, নবী (সঃ) এর চুলের তরিকাটিই সবচেয়ে সেরা। তাহলে কেনো আমরা এমন কার্ট দেই? কেনো?

আপনি কি চান না, আল্লাহ পাক আপনাকে ভালোবাসুক, রহম করুক, মোহাব্বত করুক? যদি চান তাহলে নবী (সঃ) এর তরিকা অনুসরণ করুন।
বলিউড, ঢালিউড নয়, মেসি রোনালদো নয়, টিকটক লাইকি নয়। এগুলোর কারণে যদি বিধর্মীদের সাথে হাসরের ময়দানে উপস্থিত হতে হয়, কেমন হবে তখন?

আমাদের তথাকথিত জনপ্রিয় স্টাইলগুলো হলো, শর্ট কাট বা আন্ডার কাট, ক্লাসিক কাট, ফেড কাট, ক্রু কাট, বাজ কাট, লেয়ার স্পাইক, ইমো সুইপ ইত্যাদি। যেগুলোর কোনোটিকেই ইসলাম সমর্থিত কাট বলা যায় না। কারণ প্রতিটি স্টাইলেই মাথার কিছু অংশে বড় চুল ও কিছু অংশে ছোট চুল রাখা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু অংশ ছেঁটে ফেলা হয়। রাসুল (সাঃ) এভাবে চুল কাটতে নিষেধ করেছেন।
হজরত ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সাঃ)-কে ‘ক্বাজা’ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি। (বর্ণনাকারী ওবায়দুল্লাহ বলেন) আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘ক্বাজা’ কী?

তখন আবদুল্লাহ (রাঃ) আমাদের ইঙ্গিতে দেখিয়ে বললেন, শিশুদের যখন চুল কামানো হয়, তখন এখানে-ওখানে চুল রেখে দেয়। এ কথা বলার সময় ওবায়দুল্লাহ তাঁর কপাল ও মাথার দুই পাশে দেখালেন। ওবায়দুল্লাহকে আবার জিজ্ঞেস করা হলো, বালক ও বালিকার জন্য কি একই নির্দেশ? তিনি বলেন, আমি জানি না। এভাবে তিনি বালকের কথা বলেছেন।

ওবায়দুল্লাহ বলেন, আমি এ কথা আবার জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, পুরুষ শিশুর মাথার সামনের ও পেছনের দিকের চুল কামানো দোষণীয় নয়। আর (অন্য এক ব্যাখ্যা মতে) ‘ক্বাজা’ বলা হয়—কপালের ওপরে কিছু চুল রেখে বাকি মাথার কোথাও চুল না রাখা। তেমনিভাবে মাথার চুল এক পাশ থেকে অথবা অন্য পাশ থেকে কাটা।
(বুখারি, হাদিস : ৫৯২১)

চলুন নবী (সঃ) কেমন চুল রাখতেন জেনে নেই।
বাবরি চুল রাখা। বাবরি চুল রাখার তিনটি সুন্নত পদ্ধতি রয়েছে।
ওয়াফরা তথা কানের লতি পর্যন্ত চুল রাখা।
(আবু দাউদ, ৪১৮৫)

লিম্মা তথা ঘাড় ও কানের লতির মাঝামাঝি পর্যন্ত চুল রাখা।
(আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮৭)

জুম্মা তথা ঘাড় পর্যন্ত রাখা।
(আবু দাউদ, হাদিস : ৪১৮৩)

হজ্জ এবং উমরাহের সময় নবী (সঃ) মাথা মুণ্ডিয়ে ফেলতেন। বাকি সময় বাবরি চুলই রাখতেন।
আপনি যদি বাবরি চুল না রাখেন তাহলে সব চুল সমান করে কাটতে হবে। যাদের হেয়ার স্টাইলের কার্ট বিধর্মীদের সাথে মিলে যায় তারা একটু সচেতনভাবে কাটলেই গুনাহ থেকে বেঁচে যেতে পারেন। সামনে পিছনে সব চুল সমান করে কেঁটে।

আরেকটা ব্যাপার হলো প্রতিটি কাজই নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। কেউ যদি সুন্নত তরিকায় বাবরি রাখে কিন্তু তার নিয়ত থাকে হলিউড অভিনেতার অনুকরণ, তবে সে সুন্নতের সওয়াব পাবে না। তাই যেকোনো কাজ করার ক্ষেত্রে ইসলাম সমর্থিত পদ্ধতিতে শুদ্ধ নিয়তে করতে হবে।

লিখেছেন

লালমনিরহাট সরকারি কলেজের বাংলা ডিপার্টমেন্ট অনার্স ৩য় বর্ষে পড়াশোনা করছি।
আমার জীবন মরন সবকিছু স্রষ্টার জন্য

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture