Q/AAbdullahil Hadi

নাকের ছিদ্রের পশম তুলে ফেলা জায়েজ কি?

নাকের ছিদ্রের পশম তুলে ফেলার শরয়ী বিধান এবং স্বাস্থ্যগত নির্দেশনা। হাদিসে দাড়ি মুণ্ডন অথবা কাটতে নিষেধ করা হয়েছে। চোখের ভ্রু তুলে চিকন করা (ভ্রু প্লাক করা) কে অভিসম্পাত যোগ্য কাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। (কবিরা গুনাহ/বড় পাপ)। সুতরাং এগুলো থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

অনুরূপভাবে মোচ কেটে ছোট করতে বলা হয়েছে। বগলের লোম তুলে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং নাভির নিচের লোম চেঁছে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অত:এব এগুলো যথানিয়মে করা উচিত (মুস্তাহাব)। কিন্তু নাকের ছিদ্র বা নাসারন্ধ্রের চুল সহ শরীরের অন্যান্য পশম এর ব্যাপারে আদেশ-নিষেধ কোনটাই আসেনি।

সুতরাং মানুষ প্রয়োজনবোধে তা রাখতে পারে আবার তুলে ফেলতে বা কাটতেও পারে। এতে কোনও গুনাহ নেই ইনশাআল্লাহ। কিন্তু একথা অনস্বীকার্য যে, মহান আল্লাহ নাসারন্ধ্রে যে লোম দিয়েছেন তা আমাদের শারীরিক সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত দরকারি। কারণ তা শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে বাহিরের ময়লা-আবর্জনা, কীটপতঙ্গ এবং নানা জীবাণু শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশের ক্ষেত্রে ফিল্টার হিসেবে কাজ করে।

নাকের ভেতরের চুল ওঠানো কেন স্বাস্থ্যসম্মত নয়?
এ প্রশ্নে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাকের ভেতরের চুল আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে দেহে বাইরের জীবাণু প্রতিরোধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এ বিষয়ে নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ড. এরিখ ভয়েট বলেন, নাকের ছিদ্রর ভেতরে যে চুলগুলো রয়েছে তা প্রতিদিন আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসকে ফিল্টার করতে সহায়তা করে।
নাকের ভেতর দুই ধরণের চুল রয়েছে। এর একটি ধরণ আপনি দেখতে পাবেন। এটি নাকের বাইরের দিকেই থাকে। অনেকেই এটি তুলে ফেলতে চান। অন্যটি আপনি দেখতে পাবেন না। নাকের ভেতরের দিকে থাকে এ ধরণের চুলগুলো।

নাকের বাইরের দিকের চুলগুলো বড় ধূলিকণা থেকে নাককে রক্ষা করে। অন্যদিকে নাকের ভেতরের দিকের চুলগুলো সূক্ষ্ম কণা ও জীবাণু প্রবেশে বাধা দেয়।
নাকের চুল উঠিয়ে ফেললে তা যেমন বাইরের নানা ধূলিকণা ও জীবাণু প্রবেশ করতে বাধা দিতে পারে না তেমন উঠিয়ে ফেলা চুলের শূন্যস্থানে সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে। নাক অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। কারণ এখানে যে ধমনীর মাধ্যমে রক্ত আসে ঠিক সেই ধমনি দিয়েই রক্ত মস্তিষ্কে চলে যায়। ফলে এখানে যে কোনও সংক্রমণের প্রভাব মস্তিষ্কে পড়তে পারে।

এক্ষেত্রে সমাধান কী?
এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাকের পশম টেনে তোলা যাবে না কোনোক্রমেই। তার বদলে কিছুদিন পর পর তা কাঁচি দিয়ে ছেঁটে দেওয়া যেতে পারে। অন্যথায় সেখানে সংক্রমণ হতে পারে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।”
[উৎস: কালের কণ্ঠ অনলাইন পত্রিকা]

সুতরাং নাকের ভিতরের পশম অতিরিক্ত বড় অথবা বিরক্তিকর ও কষ্টের কারণ না হলে না তোলাই উত্তম।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture