Q/AAbdullahil Hadi

ইসলামের দৃষ্টিতে নারীদের শাড়ী পরার বিধান

ইসলামে নারীদের শাড়ী পরার অনুমতি আছে কি?
ইসলাম নারী-পুরুষ কারো জন্য নির্দিষ্ট কোন পোশাক পরিধানকে বাধ্যতা মূলক করে নি। বরং প্রত্যেক জাতি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি অনুযায়ী পোশাক পরিধান করবে। তবে পোশাকের মৌলিক কিছু শর্ত বেধে দেয়া হয়েছে। সেগুলো ঠিক রাখা আবশ্যক।

যেমন, তা যেন সর্বাঙ্গ ঢাকে, প্রশস্ত হয়, পাতলা-ফিনফিনে না হয়, শরীরে যে অঙ্গগুলো ঢাকা আবশ্যক সেগুলো যেন প্রকাশিত না হয়, বিপরীত লিঙ্গ ও কাফেরদের ধর্মীয় পোশাকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ না হয় ইত্যাদি।

শাড়ী মূলত: ভারতবর্ষের নারীদের একটি সাধারণ পোশাক। কাল পরম্পরায় মুসলিম ও অমুসলিম নির্বিশেষে নারীরা এটি পরিধান করে আসছে। সুতরাং এটি উপরোক্ত শর্তাবলী ঠিক রেখে মুসলিম নারীর উক্ত শাড়ী পরিধান করতে কোন বাধা নেই ইনশাআল্লাহ।

মহিলারা তাদের স্বামীর সামনে শাড়ী পরিধান করতে পারে। অনুরূপভাবে শালীনতা বজায় রেখে মাহরাম পুরুষ এবং নারী অঙ্গনেও পরিধান করতে পারে।

তবে যেহেতু শাড়ী সাধারণত: প্রচুর কালার ফুল, ফ্যাশেনেবল ও বিভিন্ন আকর্ষণীয় ডিজাইনের হয়ে থাকে সেহেতু এটি পরে বাইরে পর পুরুষের সামনে চলাফেরা করা ঠিক নয়। কারণ নারীদেরকে নন মাহরাম পুরুষদের সামনে তাদের সৌন্দর্য (শারীর, পোশাক, অলঙ্কার ইত্যাদি) প্রকাশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলে:

وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ “তারা (নারীরা) যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।” (স্বামী এবং উক্ত আয়াতে উল্লেখিত মাহরাম পুরুষগণ ছাড়া অন্যদের সামনে )
[সূরা নূর: ৩১]

সুতরাং কালার ফুল শাড়ী পরে বাইরে যেতে চাইলে তার উপরে বোরকা পরিধান করা আবশ্যক যেন শাড়ীর সৌন্দর্য পরপুরুষেরে সামনে প্রকাশিত না হয়।

দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, আমাদের সমাজে অনেক মুসলিম নারী পাতলা ফিনফিনে শাড়ী পরিধান করে রাস্তাঘাটে চলাফেরা করে এবং বিবাহ বা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে হাজির হয়। অনেকে নাভি, পেট, পীঠ ইত্যাদি শরীরের বিভিন্ন অংশ উন্মুক্ত রাখে! ইসলামের দৃষ্টিতে এভাবে চলাফেরা করা শুধু হারাম নয় বরং অশালীনতা বহির্ভূত, গর্হিত ও নিন্দনীয় কাজ। এটি সমাজে অশ্লীলতা প্রসার ও ফিতনা ছড়ায়।

সুতরাং প্রত্যেক স্বামী এবং অভিভাবকের জন্য তাদের স্ত্রী ও কন্যাদেরকে পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে চলাফেরা করার নির্দেশ দেয়া এবং তাদেরকে পর্দা হীনতার ব্যাপারে নিষেধ করা ফরয। অন্যথায় বেপর্দা হিসেবে চলাফেরার কারণে উক্ত নারী যেমন জাহান্নামের ইন্ধন হবে তেমনি তার স্বামী বা অভিভাবকও আল্লাহর নিকট দাইউস হিসেবে পরিগণিত হবে। আর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, “দাইউস জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমীন।
والله أعلم بالصواب

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture