Writing

মাথা ব্যাথার দোয়া

হাদিসের আলোকে মাথা ব্যাথার চিকিৎসা।
পড়তে বসেছেন। কয়েক লাইন পড়ার পরেই মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে। কোনমতেই মনোযোগ বসাতে পারছেন না। এ মাথা ব্যাথা আপনার মস্তিষ্ককে একদম কাবু করে রেখেছে। উঠতে বসতে প্রায়ই এ মাথাব্যথার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পড়ালেখা, কাজকর্ম কোন কিছুতেই মনোযোগ বসাতে পারছেন না।

জীবনে কখনো মাথা ব্যথায় ভোগেননি এমন লোক হয়তো খুঁজে পাওয়া মুশকিল। প্রায় অধিকাংশ মানুষই মাথা ব্যথায় ভুগে থাকেন। তবে কারো কম কারো বেশি। কেউ প্রতিনিয়ত মাথা ব্যথায় ভুগে থাকেন, আর কেউ কেউ মাঝে মাঝে। কারো রয়েছে সাময়িক মাথা ব্যাথা, আর কারো রয়েছে স্থায়ী মাথা ব্যাথা। বিভিন্ন কারণে মাথা ব্যথা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, দুশ্চিন্তা, মাইগ্রেন, অতিরিক্ত ধূমপান, ব্যথানাশক ওষুধের বেশি ব্যবহার, শরীরের পানি শূন্যতা ইত্যাদি।

মাথা ব্যাথা অতি সেনসিটিভ একটি বিষয়। মাথা ব্যথার কারণে মস্তিষ্কের রক্তসঞ্চালনে সমস্যা এমনকি জেনেটিক্যালি সমস্যাও হতে পারে। এ জন্য সঠিক সময়ে সঠিক ট্রিটমেন্ট না নিলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

মাথা ব্যাথা থেকে মুক্তির জন্য অনেকেই ব্যাথা নাশক ঔষধ খেয়ে থাকেন। কেউ বা শরণাপন্ন হন চিকিৎসকের কাছে। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যাথা নাশক ঔষধ স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। এই ঔষধে রয়েছে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এই মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে অনেকের আবার মাথা ব্যাথা বৃদ্ধি পায়। অনেক ক্ষেত্রে ডাক্তাররা বেশী বেশী ব্যাথা নাশক ওষুধ খেতে বারণ করে থাকেন।

দীর্ঘদিন ধরে মাথা ব্যথায় ভুগছেন। ব্যাথা নাশক ঔষধও নিয়েছেন। তাতে কয়েকদিন ভালো, পরে আবার যেই সেই। এখন আপনি কী করবেন? সারাজীবন মাথাব্যথায় ভোগবেন?
না, কেউ-ই এভাবে ভোগান্তির শিকার হতে চায় না। তাহলে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?
আসুন দেখি এ ব্যাপারে শারই কোন ট্রিটমেন্ট আছে কিনা! মাথা ব্যথা দূর করতে রাসুল (সা:) এর কোন দিক নির্দেশনা আছে কিনা! দেখিতো এ ব্যাপারে হাদিস কী বলে……

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খাদেম সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, কেউ মাথাব্যথার অভিযোগ নিয়ে (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এলে তিনি তাকে বলতেনঃ (হিজামা) রক্তমোক্ষণ করাও। [সুনানে আবু দাউদ – ৩৮৫৮]

অর্থাৎ, কেউ কেউ যদি মাথাব্যথার অভিযোগ নিয়ে রাসুল (সাঃ) এর নিকট আসতো, তখন তিনি রক্তমোক্ষণ করাতে বলতেন। রক্তমোক্ষণ যাকে হিজামা বলা হয়। এটাকে শিঙ্গা লাগানোও বলে। অনেকে অনেক নামে চিনে। যাইহোক, রাসুল (সাঃ) মাথা ব্যথার জন্য হিজামা করতে বলেছেন। আর এটা খুবই কার্যকরী।

হিজামা হচ্ছে একটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি ,যাতে মানুষের সকল প্রকার শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সুস্থতা বিদ্যামান রয়েছে। আর এটি হচ্ছে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর রেখে যাওয়া একটি সুন্নতি চিকিৎসা পদ্ধতি। যদিও এ চিকিৎসা এখনো অনেকের কাছে অপরিচিত কিন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ চিকিৎসার বেশ প্রচলন রয়েছে। বর্তমানে মাশা’আল্লাহ আমদের দেশেও এ চিকিৎসার বেশ প্রসার ঘটছে ।

হিজামার মাধ্যমে দূষিত রক্ত গুলো চুষে নেওয়া হয়। রক্ত সঞ্চালনে হিজামা অগাধ ভূমিকা রাখে। আর তাছাড়া মাইগ্রেন জনিত মাথা ব্যাথার ক্ষেত্রে এই হিজামা অধিক কার্যকরী। তাই, ব্যাথা নাশক ট্যাবলেট এর চেয়ে হিজামার মাধ্যমে মাথা ব্যথার চিকিৎসা করা অতি উত্তম। তাই যাদের অতিমাত্রায় মাথা ব্যাথা রয়েছে তারা হিজামার মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। ইনশা’আল্লাহ ভাল ফলাফল পাবেন।

বর্তমানে ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্যই হিজামার ব্যবস্থা রয়েছে। মেয়েদের ক্ষেত্রে মহিলা হাজেম দিয়ে হিজামা করা হয়। তাই মেয়েরাও এই চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন।

লিখেছেন

Picture of মাহমুদ বিন নূর

মাহমুদ বিন নূর

আমি ফুল হয়ে ফুটতে চাই;
প্রভাতের স্নিগ্ধ আলো গায়ে মেখে,
নতুন করে সাজতে চাই

লেখকের অন্যান্য সকল পোষ্ট পেতে ঘুরে আসুন
Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture