Q/A

কীভাবে সন্তানদের সম্মান করবো

সম্মান করার কথা আসলে প্রথমেই বড়দের সম্মানের কথা আসে। পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, গুরু-শিক্ষক, পীর-বুযুর্গের সম্মানের ছ‌বি আমাদের মানসপটে ভেসে ওঠে। কিন্তু নিজের সন্তানকেও যে সম্মান করতে হয়, সেটা আমরা অনেকেই জা‌নি না।
হাঁ, আমাদের পেয়ারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তানকে সম্মানের আদেশ করেছেন। বলেছেন-

” أَكْرِمُوا أَوْلَادَكُمْ وَأَحْسِنُوا أَدَبَهُمْ “
তোমরা তোমাদের সন্তানদের সম্মান ক‌র এবং ওদেরকে সুন্দর আদব শিক্ষা দাও!
[ইবনু মাজাহ : ৩৬৭১]

কীভাবে সন্তানদের সম্মান করবো?

ওদেরকে সুন্দর নামে ডাকা, তাদের নাম বিকৃ‌তি না করা, মায়াবী সুরে ডাকা ঝাঁঝালো কণ্ঠে নয়, তাদের সমস্যাগুলোকে গুরুত্বের সাথে নেওয়া, গুরুত্বের সাথে তাদের কথা শোনা, শাসনের সময় তাদের ব্যক্তিত্ব রক্ষা করে শাসন করা, কথায় কথায় অপমান না করা, ঠাট্টা‌বিদ্রুপ তুচ্ছতা‌চ্ছিল্য না করা ইত্যাদি।

ওরা আমাদের সন্তান ও ছেলেপুলে মনে করে তাদের সাথে যাচ্ছে তাই ব্যবহার ক‌রা, তাদেরকে ইচ্ছেমত গালমন্দ ক‌রা তাদের প্রতি সম্মানবোধের প‌রিপ‌ন্থি।

উদাহরণত, হাসানকে ‘হাসাইননা’ না‌-ডেকে হাসান বলে ডাকুন। সাঈদকে ‘সাইদ্দা’ না বলে সাঈদ বলে ডাকুন। ছেলেকে বাবা বা বেটা বলে ডাকুন। মেয়েকে মা বা বে‌টি বলে ডাকুন। গরু, গাধা, ডাঙ্কি মা‌ঙ্কি, বোকা, বোবা ইত্যাদি না ডেকে মানুষরূপে ডাকুন। এভাবে অন্যান্য বিষয়ে এমনভাবে আচরণ করুন, যেন সে এবং অন্য সবাই বোঝে, আপনার সন্তান আপনার কাছে অনেক মূল্যবান ও সম্মা‌নিত। এতে করে সে নিজেকে মূল্যায়ন করতে শিখবে এবং অন্যেরাও তার মূল্যায়ন করবে।

তবে সম্মান করার অর্থ তাকে মাথায় তোলা নয়, তাকে ভালোমন্দ সব বিষয়ে প্রশ্রয় দেওয়া নয়। তার ওপর থেকে শাসনের লা‌ঠি স‌রিয়ে ফেলা নয়। বরং সম্মানবোধের সাথে তাকে সু‌শিক্ষা, সুন্দর আদব ও শিষ্ঠাচার শিক্ষা দেওয়া জরুরি। যথাসময়ে প্রয়োজনীয় আদব শিক্ষা দেওয়া আবশ্যক। তার প্রতি সম্মানবোধ যেন সু‌শিক্ষা দানে প্রতিবন্ধক না হয়, সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। এজন্য নবী‌জি সাথে সাথে বলেছেন :

واحسنوا أدبهم
তাদের সুন্দর আদব শিক্ষা দাও!
অন্য রেওয়াতে নবী‌জি সা. বলেছেন :

مَا نَحَلَ وَالِدٌ وَلَدًا مِنْ نُحْلٍ أَفْضَلَ مِنْ أَدَبٍ حَسَنٍ “.
“কোনো পিতা তার সন্তানকে সুন্দর শিষ্টাচার শিক্ষাদানের চাইতে শ্রেষ্ঠ কিছু দান করে না।”
[তির‌মিযী : ১৯৫২]

কাজেই সন্তানকে মূল্যায়ন করুন এবং তাকে উত্তম আচরণ শিক্ষা‌ দিন।

লিখেছেন

‌শিক্ষকতা, দাওয়াহ, লেখা‌লে‌খি, সস্পাদনা, খুতবা প্রদান

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture