খাদিজা (রাঃ) এর জীবনী : পর্ব ৩

রাসুল (সাঃ) এর সাথে পরিচয়।
রাসুল (সাঃ) কিভাবে খাদিজা (রাঃ) এর জীবনে আসলেন, কিভাবে তাঁর ব্যাবসার সাথে জড়িত হলেন?
রাসুল (সাঃ) ছিলেন মেষপালক। জীবনের কোনো না কোনো এক পর্যায়ে, সব নবীরাই মেষপালক ছিলেন, কারণ, এর মধ‍্যে দিয়েই আল্লাহ তাঁদের চরিত্র গঠন করেছেন। রাসুল (সাঃ) বিশেষ করে তাঁর চাচা আবু তালিবের মেষপালক ছিলেন, তিনি তার ব্যাবসাও দেখাশুনা করতেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি বেনিয়ান বা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিলেন। মুদরাহাবার মাধ‍্যমে যোগাযোগ, যেখানে একজন সক্রিয় ও একজন নিষ্ক্রিয় অংশীদার থাকে, বিক্রেতার পক্ষ থেকে তিনি ঐ ধরেন এক ব্যাবসায় নিযুক্ত হলেন। তাদের পক্ষ থেকে তিনি নিজে কখনো সিরিয়া বা ইয়েমেন যান নি।

রাসুল (সাঃ) এর শৈশবে, আবু তালিব তাঁকে নিয়ে একবার সিরিয়া গিয়েছিলেন। সেখানকার এক সন্ন্যাসী রাসুল (সাঃ) কে ঐখানে আনতে নিষেধ করেছিলেন। এরপর আবু তালিব রাসুল (সাঃ) কে আর সেখানে নিয়ে যান নি। বড় হওয়ার পর, এই দ্বিতীয়বার তিনি সিরিয়া বা শাম নগরী গেলেন। খাদিজা (রাঃ) কিভাবে রাসুল (সাঃ) সম্পর্কে জানতে পারলেন?
নিজের ব্যবসা নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন এবং একজন সৎ ও বিশ্বাসী লোক খুঁজছিলেন। একদিন বোন হালার সাথে এ ব্যাপারে কথা বলছিলেন।

হালা তাকে রাসূল (সাঃ) এর কথা উল্লেখ করেন। রাসূল (সাঃ) ছিলেন হালারও মেষপালক। তাঁর সম্পর্কে হালা বলেন, “মুহাম্মদ (সাঃ) অত্যন্ত বিশ্বাসী ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী, তুমি তাকে বলে দেখতে পারো।”
তিনি খাদিজা (রাঃ) কে রাসূল (সাঃ) এর পিতৃসম আবু তালিবের সাথে কথা বলতে বললেন। যদিও আবু তালিব ছিলেন রাসূল (সাঃ) এর চাচা, তথাপি তিনি বাবার ভূমিকাই পালন করেছিলেন। খাদিজা (রাঃ) যখন আবু তালিবকে বললেন, তিনি প্রথমে দ্বিধাগ্রস্থ ছিলেন, তিনি চান নি রাসুল (সাঃ) ব্যাবসার কাজে সিরিয়া যাক।

কয়েকবার অনুরোধ করার পরে আবু তালিব অবশেষে রাজি হলেন। সেই বছর রাসুল (সাঃ) বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে সিরিয়া বা শাম নগরী গেলেন। খাদিজা (রাঃ) এর পক্ষ থেকে তাঁর সাথে একজন সঙ্গী গিয়েছিলেন, যার নাম মাইসরাহ। তিনি রাসুল (সাঃ) এর ব্যাবহারে যারপরনাই মুগ্ধ হলেন।

তিনিই বলেছিলেন, মেঘ কখনো রাসুল (সাঃ) কে ছেড়ে যায় নি, তাঁর বিশ্রামের সময় গাছ তার শাখা প্রসারিত করে ছায়ায় ঢেকে রাখে তাঁকে। বাজারে গেলে রাসুল (সাঃ) কে যখন লাত ও উজ্জার নামে শপথ করতে বলা হতো, তিনি বলতেন তিনি এসবের নাম কখনো শপথ করেন নি। মাইসারাহ রাসুল (সাঃ) এর সৎচরিত্র ও নিষ্ঠায় মুগ্ধ হন।

সেই সফরে রাসুল (সাঃ) উটের সংখ‍্যা দ্বিগুন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সেইবার তিনি খুব ভালো ব্যবসা করলেন, উপরন্তু তাঁর মহৎ চরিত্রের কথা মাইসারাহ খাদিজা (রাঃ) কে বলেছিলেন। তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট‍্য ও একেশ্বরবাদীতার কথা শুনে খাদিজা মুগ্ধ হয়েছিলেন, কারণ তিনি নিজেও ছিলেন একেশ্বরবাদী।

(চলবে, ইন শা আল্লাহ)

ডঃ ওমর সুলাইমান

লিখেছেন

ফাহমিনা হাসানাত

কিছুটা লেখালেখি করি, ইসলামিক লাইনে কিছুটা পড়াশোনা করি। তাজউইদ, গ্রামার এবং কুরআন মেমোরাইজেশন এর ক্লাস করছি আলহামদুলিল্লাহ।
নিজে শিখছি, অন্যকেও শিখাচ্ছি। লেখালেখিটাও ঠিক এরকম। নিজে জানার জন্য মনের আনন্দে লিখি, শেয়ার করি।

লেখকের অন্যান্য সকল পোষ্ট পেতে ঘুরে আসুন

কিছুটা লেখালেখি করি, ইসলামিক লাইনে কিছুটা পড়াশোনা করি। তাজউইদ, গ্রামার এবং কুরআন মেমোরাইজেশন এর ক্লাস করছি আলহামদুলিল্লাহ।
নিজে শিখছি, অন্যকেও শিখাচ্ছি। লেখালেখিটাও ঠিক এরকম। নিজে জানার জন্য মনের আনন্দে লিখি, শেয়ার করি।

Exit mobile version