Writing

পরিবারে ইসলামের দাওয়াত

[১]

দ্বীনি দাওয়াতী কাজে সম্পৃক্ত অনেকেই ঘরের বাইরে দাওয়াত দেওয়াতে যতোটা তৎপর থাকেন নিজ ঘরে দাওয়াত দেওয়াতে ঠিক ততোটাই যেন উদাসীন থাকেন। ইসলামের দাওয়াতের ক্ষেত্রে নিজের পরিবারকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে সেটা যেন তারা বেমালুম ভুলেই যান। অবশ্য, কিছু কিছু ক্ষেত্রে দাওয়াত দেওয়া হলেও সেখানে থাকে প্রজ্ঞার অনুপস্থিতি। তাই তো নিজেকে দ্বীন পালনে সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যেতে পারলেও পরিবারের মানুষেরা দ্বীন থেকে অনেক দূরে থেকে যায়। তারা দ্বীনের আলোর কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও দ্বীনের সঠিক বার্তা সঠিকভাবে না পাওয়ায় অন্ধকারে থেকে যায় তাদের পদচারণা।

নিজ পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে যাওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা আল্লাহর সেই বাণী থেকে বুঝতে পারি যেখানে আল্লাহ তার বান্দাকে দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনুপ্রেরণা দিয়ে বলেছেন, তার চেয়ে উত্তম কথা আর কোন ব্যক্তির হতে পারে যে মানুষদের আল্লাহ তা’য়ালার দিকে ডাকে এবং সে নিজেও নেক আমল করে এবং বলে আমি তো মুসলমানদেরই একজন। [সূরা হা-মীম আস সাজদা: ৩৩]

অর্থাৎ আল্লাহর দিকে আহবান করা ব্যক্তিকে আল্লাহ বলছেন, তুমি কোনো সাধারণ কাজ করোনি, তুমি ‘উত্তম কাজ’ করেছো। সুবহান’আল্লাহ! আল্লাহর এমন বলা বান্দার জন্য কতোটা দামি, কতোটা ইন্সপায়ারিং তা কি আমরা উপলব্ধি করতে পারছি? সত্যিকার অর্থে, এমন বিষয় আমাদের উপলব্ধিতে এসে থাকলে দাওয়াতী কাজে নিজেকে কখনোই পিছিয়ে রাখার কথা নয়। তখন দাওয়াতী কাজে নিজেকে আরো বেশি সম্পৃক্ত রাখার স্পৃহা জাগার কথা। আল্লাহর স্পেশাল মোটিভেশন জেনে আমরা কি চাইবো না এমন কাজ করি যে কাজ করলে স্বয়ং মহান রবের কাছ থেকে আমরা ‘উত্তম কাজ’ এর স্বীকৃতি পাবো? নিশ্চয়ই আমাদের প্রত্যেকেরই তা-ই চাওয়ার কথা।

[২]

দাওয়াতের কাজ বাইরে করা যতোটা জরুরি তার চেয়ে বহুগুণ জরুরি নিজের ঘরে সেই একই কাজ করে যাওয়া, নিজের ঘরের মানুষকে সঠিক পথে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে তাদের পেছনে বেশি বেশি দাওয়াতী মেহনত করা। কেননা নিজের পরিবারের কেউ আল্লাহর অবাধ্য হয়ে চললে পরিবারের কর্তা তথা অধীনস্থের জিম্মাদার হিসেবে আপনাকেই তার জবাবদিহি করতে হবে। এছাড়া, নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে আগে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর ব্যাপারে আল্লাহ তা’য়ালা তাগিদ দিয়ে বলেছেন, হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই আগুন থেকে বাঁচাও যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর; যেখানে রয়েছে নির্মম ও পাষাণ হৃদয়ের ফেরেশতারা, আল্লাহ তাদেরকে যে নির্দেশ দিয়েছেন তারা সে ব্যাপারে তাঁর অবাধ্য হয় না। আর তারা তা-ই করে যা তাদেরকে আদেশ করা হয়। [সূরা আত তাহরীম: ০৬]

এই আয়াতের আলোকে দ্বীনি দাওয়াতের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম নিজ পরিবার প্রাধান্য পাওয়ার জোর দাবি রাখে। এজন্য আমরা বাইরে দ্বীনি কাজে সময় দিতে গিয়ে দ্বীনি দাওয়াতের ব্যাপারে আমাদের পরিবারের কথা যেন বেমালুম ভুলে না যাই। পরিবারকে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় নিশ্চিত করা বেশি জরুরি তা তুলে ধরা হলো।

সুন্দর সম্বোধনঃ

কুরআন হাদীস থেকে আমরা দাওয়াতের বিভিন্ন টেকনিক জানতে পারি। আমরা যদি ‘সূরা লোকমান’ এর দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো, লোকমান আলাইহিস সালাম তাঁর সন্তানকে নসীহত করার সময় তিন-তিন বার ‘ইয়া বুনাইয়া’ অর্থাৎ ‘ও আমার আব্বু’ বলে চমৎকার ভাষায় সম্বোধন করেছেন। এছাড়া, ইয়াকুব (আঃ), ইব্রাহিম (আঃ), নূহ (আঃ) একই কায়দায় তাঁদের সন্তানকে সম্বোধন করেছেন। এখান থেকে আল্লাহ আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন, কাউকে নসীহত করার ক্ষেত্রে, কোনো কিছু বলার ক্ষেত্রে সর্বোপরি সুপথে আনার লক্ষ্যে তাকে হাসিমুখে সুন্দর ভাষায় বলতে হবে যেন সে কথাগুলো খুশিমনে গ্রহণ করে, যেন সে আপনার বলা কথাগুলো মেনে চলার গুরুত্ব অনুভব করে। বলাই বাহুল্য, ‘সম্বোধন’ বিষয়টির মধ্যে অন্যরকম এক জাদু রয়েছে যা দাওয়াতের ক্ষেত্র খুবই কার্যকর। এটা যেন আমরা মাথায় রাখি।

চরিত্রবান হওয়াঃ

বিশেষ করে পরিবারিক দাওয়াতের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম নিজের চরিত্র ঠিক করতে হবে। ককর্শ মেজাজের হলে হবে না। নিজের ব্যবহার এমন হতে হবে যে ব্যবহারে চুম্বকের মতো আকর্ষণ থাকে। সুন্দর ব্যবহার এতোটাই পাওয়ারফুল একটি বিষয়, এটি দিয়ে নিজের শত্রুকেও কাছে টেনে আনা সম্ভব। এছাড়া, যার চরিত্র যত উন্নত মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতাও তত বেশি থাকে।

দূর্ব্যবহার করে, ধামকি দিয়ে আপনি কখনো কাউকে হেদায়েতের পথে আনতে পারবেন না। এটা কোনো দাওয়াতী পন্থা হতে পারে না। একমাত্র অজ্ঞ লোকের দ্বারাই দূর্ব্যবহার, ধমক, রুক্ষ মেজাজ প্রদর্শনের মতো মূর্খসুলভ আচরণ করা সম্ভব। অতএব সবার সাথে নিজের সুন্দর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কেউ দ্বীনের দাওয়াত গ্রহণ না করলেও তার সাথে দূর্ব্যবহার করা যাবে না। তার পিছেন সময় দিয়ে যেতে হবে। নিজের ব্যবহার দিয়ে তাকে ইমপ্রেস করে আগে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তখন দেখবেন সে খুব সহজেই আপনার দ্বীনি কথা গ্রহণ করছে।

হক সম্পর্কে সচেতনঃ

পরিবারের সকলের হক সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। যার যে পাওনা আছে তাকে পাই পাই করে খুশিমনে তা বুঝিয়ে দিতে হবে। এতে আপনার প্রতি পরিবারের আস্থা ও সম্মান দুটোই বাড়বে। একইসাথে, পরিবারও তাদের ওপর থাকা অন্যের হক পালন নিয়ে সচেতন হবে। আপনাকে দেখে দেখে তারা হক পালনের গুরুত্বপূর্ণ লেসন পেয়ে যাবে।

হাদিয়া প্রদানঃ

পরিবারের সদস্যদেরকে হাদিয়া দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আর সেটা যতো অল্প দামেরই হোক না কেন। এই অভ্যাসটা গুণী মানুষের অভ্যাস। এতে পারস্পরিক মহব্বত বাড়ে এবং সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়। সহজে পরিবারের সদস্যের কাছে যেকোনো বিষয়ে রিচ করা যায়। কেননা আপনি যখন কাউকে কিছু না কিছু দিয়ে যাবেন তখন দেখবেন তাকে কখনো কিছু বললেও সহজে সে আপনার কথা ফেলতে পারবে না। সে ভাববে, আরে! লোকটি আমাকে এত কিছু দেয়, আমাকে মহব্বত করে আর আমি তাঁর ভালো কথাটি কীভাবে ফেলে দেই। এভাবে তাঁকে মাঝে মাঝে আপনার হাদিয়া দেওয়ার বিষয়টি আপনার প্রতি তাঁকে দূর্বল করে দেবে, ভালোবাসার সৃষ্টি করবে। ফলে যেকোনো বিষয়েই তাঁর প্রতি আপনার অ্যাকসেস সহজ হয়ে যাবে যা দাওয়াতের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

নিজেকে অনুকরণযোগ্য করাঃ

আমাদের সমাজে কিছু লোক আছে যারা দ্বীনি বিষয় নিয়ে অন্যেকে নসীহত করায় যতোটা এগিয়ে নিজে মানার ব্যাপারে ঠিক ততটাই যেন পিছিয়ে। এরা আসলে নিজেরা কতটুকু বিশুদ্ধ সেটাই তাদের কর্মকান্ড প্রশ্নবিদ্ধ করে। ফলে মানুষেরা এদের নসীহতকে পাত্তা দিতে চায় না বরং পিছনে গিয়ে তাদেরকে নিয়ে আরও মশকরা করে। যার দরুন কাজের কাজ কিছুই হয় না। এজন্য কেবল নসীহত করে গেলেই হবে না। নিজেকে আগে সেগুলো ধারণ করতে হবে। সর্বোপরি নিজেকে সেই নসিহতের মডেল হতে হবে। তখন দেখবেন আপনার পরিবার থেকে শুরু করে আশেপাশের মানুষগুলো এতো দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে যা আপনি ভাবতেও পারবেন না। তাতেই আপনার চারপাশের পরিবেশ জান্নাতী এক পরিবেশে পরিণত হয়ে উঠবে।

নসীহতে লেগে থাকাঃ

পরিবারের অতি আপনজন আপনার স্বামী বা স্ত্রীকে কিংবা সন্তান-সন্তনিদেরকে বারবার দাওয়াত দিতেই থাকুন। এটা একদিনের কাজ না। এই কাজে কখনো বিরক্তবোধ করবেন না। একবার বললেই তিনি সাথে সাথেই হেদায়েতের পথে চলে আসবেন এমনটা মনে করা সমীচীন নয়। কেননা আল্লাহ হেদায়েতের মালিক। তিনি না চাইলে তো হবে না। সেজন্য তাদেরকে দাওয়াতের পাশাপাশি আল্লাহর কাছে তাদের হেদায়েতের জন্য সবসময় কায়মনোবাক্যে চাইতে থাকতে হবে।

আপনার পার্টনারকে কোনো কিছু গিফট করতে করতে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলুন যে, ও আমার প্রিয়তম কিংবা প্রিয়তমা, তুমি কি চাও না আমি তোমাকে ভালোবাসি? তিঁনি নিশ্চয়ই বলবেন, হ্যাঁ। তখন আপনি বলতে পারেন, তাহলে এবার বলো তো, আমার যে ভালোবাসা আমার সঙ্গীকে জান্নাতের উপযুক্ত করতে পারলো না সে ভালোবাসার কি কোনো মূল্য থাকলো? নিশ্চয়ই তিঁনি তখন ‘না’ বলবেন। এই সুযোগে আপনি বলতে পারেন, তাহলে তোমাকে নামাজীদের, পর্দানশীনদের অন্তর্ভুক্ত না করা সর্বোপরি আল্লাহর অনুগতদের একজনে পরিণত করতে না পারা কি তোমার প্রতি আমার ভালোবাসার প্রকাশ পায়, তুমিই বলো? মনে রেখো, আপন সঙ্গীকে আল্লাহর অনুগত করতে পারাতেই ভালোবাসার আসল স্বার্থকতা নিহিত, ‘I love you’ বলাতে নয়, রোমান্টিকতা দেখানোতেও নয়।

একইভাবে, আপনার সন্তানকেও সুন্দর করে বলুন, ও আমার কলিজার টুকরোরা! তোমরা কি চাও না তোমাদের সাথে আমি জান্নাতে থাকি? তারা নিশ্চয়ই হ্যাঁ-সূচক বলবে। তখন আপনি বলতে পারেন, তাহলে তোমরা কখনো সালাত ত্যাগ করবে না, কুরআন তেলাওয়াত থেকে দূরে থাকবে না, পর্দা লঙ্ঘন করবে না সর্বোপরি এমন কোনো কাজ করবে না যে কাজে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। তোমাদের কোনো কাজে যদি আল্লাহ অসন্তুষ্ট হয়ে যান তাহলে বাবা হিসেবে আমাকে আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, আল্লাহর আযাবের মুখোমুখি হতে হবে। যার ফলে যে জান্নাত নিয়ে আমি এত রঙিন স্বপ্ন দেখছি আমার সে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। আমার সন্তান হিসেবে তোমরা এমন কোনো কাজ করবে না যে কাজ তোমাদের বাবার স্বপ্ন পূরণে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, যে কাজ আমাকে খারাপ পরিণতির দিকে নিয়ে যায়।

পুরস্কার ঘোষণাঃ

সন্তানকে কিংবা আপনার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মাঝে মাঝে পুরস্কারের ঘোষণা করতে পারেন যে, তোমরা যদি আল্লাহর হুকুম সঠিকভাবে মেনে চলো তাহলে তোমাদেরকে পুরস্কার দেবো। পুরস্কার ঘোষণার বিষয়টি তাদেরকে আরও কাছাকাছি টেনে আনতে সাহায্য করবে। পুরস্কারের বিষয়টি সবসময় যে কারো নিকটই অন্য রকম আগ্রহের সৃষ্টি করে।

পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে অর্থসহ কুরআনের বিভিন্ন সূরা এবং দোয়া শিখিয়ে সেগুলো আপনাকে শুনানোর কথা বলতে পারেন। এছাড়া, একই বিষয় সামনে রেখে আপনি তাদেরকে কুরআন হাদীসে বর্ণিত বিভিন্ন ঘটনা শুনিয়ে তাদের মুখ থেকে সেটা আবার শুনে নিতে পারেন। এতে করে তাদের মাথায় বিষয়টি খুব সহজে গেঁথে থাকবে। তখন দেখবেন তাদের জীবনে চলার পথে সেসব বিষয়ের অনেক বড়ো প্রভাব থাকবে যা তাদেরকে সঠিক পথে ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

এভাবে আদর করে করে মুখে মুচকি হাসি জিইয়ে রেখে বিনীত কন্ঠে বুঝিয়ে বলতে থাকবেন। কখনো বিরক্ত বোধ করবেন না, হাল ছেড়ে দেবেন না। এছাড়া, ভালো পরিবেশের মধ্যে রাখবেন, ভালো মানুষের সংস্পর্শে রাখবেন। ভালো মানুষের সোহবত অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একইসাথে, আল্লাহর কাছে বিনীত ভঙ্গিতে বেশি বেশি দোয়া করতে থাকবেন।

এতো চেষ্টার করার পরও যদি তারা আল্লাহর অবাধ্য হতেই থাকে তাহলে অবশ্যই তাদের প্রতি শুরুর শিথিলতা থেকে সরে আসতে হবে। তখন কিছুটা কঠোরতার দিকে যেতে হবে। কেননা এটা আল্লাহর অবাধ্য হওয়ার প্রশ্ন, জান্নাত থেকে বিচ্যুত হওয়ার বিষয়। আল্লাহর নাফরমানী এবং জান্নাত হারানোর প্রশ্নে নিজের অধীনস্থদেরকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না। কঠোরতা অবলম্বন করে হলেও তাদেরকে আল্লাহর হুকুমের দিকে ফিরানোর চেষ্টা অব্যহত রাখতে হবে। এমন কঠোরতা আসলে ‘কঠোরতা’ নয় তাদের প্রতি এক ধরনের ‘দয়া’ বটে।

বাসায় এসে সন্তান ঠিকমতো খেয়েছে কি-না, অসুস্থ হলে ঔষধ খেয়েছে কি-না এইসব প্রশ্ন যেমন আপনি করছেন ঠিক একইভাবে সন্তান সালাত আদায় করেছে কি-না, কুরআন তেলাওয়াত করেছে কি-না এসব প্রশ্নও গুরুত্বের সাথে করতে হবে। সন্তানের দুনিয়ায় ভালো থাকার যেমন দরকার আছে তেমনি আখিরাতেও ভালো থাকার দরকার কাছে। সেজন্য সন্তানের দুনিয়াবি খবর নেওয়ার মতোই আখরাতের পাথেয় সংক্রান্ত খবরও নিতে হবে। স্থায়ী বিবেচনায় এটা বরং আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার দাবি রাখে। এমন বিষয়কে এড়িয়ে যাওয়া পরকালে পস্তানোর কারণ হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

মনে রাখবেন, আপনার সন্তান নামকরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ডক্টরেট ডিগ্রীধারী – এগুলো আপনার জন্য প্রকৃত অর্থে আনন্দের বিষয় নয়। আপনার সন্তান সিজদাকারীর অন্তর্ভুক্ত হতে পারা আপনার জন্য আনন্দের বিষয়। কারণ এই গুণের সন্তানই আল্লাহর কাছে আপনার মুখ উজ্জ্বল করবে, আপনাকে রবের সামনে সম্মানীত করবে, ডক্টরেট ডিগ্রীধারী নয়।

পক্ষান্তরে, তার চেয়ে বড়ো কপালপোড়া আর কেউ হতে পারে না যে তার সন্তানের দুনিয়াবি সফলতাকে অমুক তমুককে বুকে ফুলিয়ে দম্ভভরে বলে বেড়ায় অথচ সন্তানের সিজদাকারীর অন্তর্ভুক্ত হতে না পারার বিষয়টি তাঁকে একবারও ভাবিয়ে তুলে না। তাঁর জীবনে দুশ্চিন্তার অনেক কারণ থাকলেও এ বিষয়টি কখনোই তার দুশ্চিন্তার কারণ হয় না। হায়, আপসোস! কতই-না দূর্ভাগা সে! আমরা যেন কেউ-ই এমন দূর্ভাগা না হই।

লিখেছেন

পরকালীন তথা স্থায়ী জীবনের লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি। নিজে হেদায়েতের ওপর অটল থাকার পাশাপাশি অন্যেদেরকেও হেদায়েতের দিকে আহবান করা তথা পথ হারাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনাই আমার লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture