Q/AAbdullahil Hadi

দুআ কবুলের শর্তগুলো কী এবং কার দুআ কবুল হয় না?

দুআ কবুলের শর্ত তিনটি:
১.খালিস ভাবে একমাত্র আল্লাহর নিকট দুআ করা।
২.রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পদ্ধতির আলোকে দুআ করা।
৩.হালাল উপার্জন ও হালাল খাদ্য গ্রহণ করা।

কাদের দুআ কবুল হয় না?

উপরে বর্ণিত শর্তগুলো যার মধ্যে পাওয়া যাবে না তার দুআ আল্লাহর দরবারে গৃহীত হবে না। এ ছাড়াও আরও তিনজন ব্যক্তির কথা হাদিসে বিশেষভাবে বর্ণিত হয়েছে যাদের দুআ কবুল করা হবে না। তারা হল: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

” ثلاثة يدعون فلا يستجاب لهم : رجل كانت تحته امرأة سيئة الخلق فلم يطلقها , و رجل كان له على رجل مال فلم يشهد عليه ، و رجل آتى سفيها ماله و قد قال الله: وَلَا تُؤْتُوا السُّفَهَاءَ أَمْوَالَكُمُ

“তিন ব্যক্তি এমন যে তাদের দুআ কবুল করা হয় না। যথা:

– এক. যে ব্যক্তির অধীনে দুশ্চরিত্রা নারী আছে কিন্তু সে তাকে তালাক দেয় না।
– দুই. যে ব্যক্তি অন্য লোকের কাছে তার পাওনা আছে কিন্তু সে তার সাক্ষী রাখেনি।
– তিন. যে ব্যক্তি নির্বোধ ব্যক্তিকে সম্পদ দিয়ে দেয়।

অথচ আল্লাহ বলেন,

وَلَا تُؤْتُوا السُّفَهَاءَ أَمْوَالَكُمُ
“তোমরা নির্বোধদেরকে তোমাদের সম্পদ দিও না।”

হাদিসটি ইমাম হাকিম তার মুস্তাদরাক কিতাবে উল্লেখ করে তাকে ইমাম বুখারি ও মুসলিমের শর্ত মোতাবেক সহিহ বলেছেন, আর ইমাম যাহাবি তাতে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি বলেন, এটি মাউকুফ বা সাহাবির উক্তি। আর ইমাম আলবানি বলেন, হাদিসটি সহিহ-মারফু বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উক্তি। [সিলসিলা সহীহা ৪/৪২০]

◈ হাদিসটির ব্যাখ্যা:

◆ এই হাদিসের অর্থ হল, কেউ যদি নিজের দুশ্চরিত্রা স্ত্রীর বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে বদদুআ করে তাহলে তা গৃহীত হবে না। কারণ তার ক্ষমতা ছিল, তাকে তালাক দেওয়ার কিন্তু সে তা করেনি।

◆ কেউ যদি সাক্ষী এবং প্রমাণ ছাড়া কাউকে ঋণ দেয় এবং সে ঋণগ্রহীতা তা অস্বীকার করে তাহলে সে ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে ঋণদাতা যদি আল্লাহর কাছে বদদুআ করে তাহলে গৃহীত হবে না। কারণ আল্লাহ ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সে তা পালন করেনি।

◆ অনুরূপভাবে, কেউ যদি নির্বোধের হাতে তার অর্থ-সম্পদ তুলে দেয় ফলে সে তা আত্মসাৎ করে বা নষ্ট করে তাহলে সে ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে বদদুআ আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে না। কারণ আল্লাহ নিজেদের হাতে সম্পদ তুলে দেওয়া বারণ করেছেন।

মোটকথা এই ব্যক্তি আল্লাহর বিধান উপেক্ষা করে নিজের উপরে নিজেই শাস্তি চাপিয়ে নিয়েছে। যার ফলে এই সকল ক্ষেত্রে তার দুআ আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে না। [ইমাম মুনাবি]

এই হাদিস দ্বারা এটা বোঝায় না যে, তার অন্য কোন দুআ কবুল হবে না। অন্যান্য দু্আ ক্ষেত্রে এই হাদিস প্রয়োগ করা ঠিক নয়।

আল্লাহু আলাম।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture