সিরিজ: নবীদের জীবন কাহিনী – নূহ (আঃ)

ইদ্রিসের (আ:) মৃত্যুর পর মুসলিমরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। যেহেতু, তাদের মধ্য থেকে অন্য কাউকে নবী হিসাবে মনোনীত করা হয়নি, তাই তারা হেদায়েতের জন্য ইদ্রিসের (আ:) ধার্মিক সাহাবীদের অনুসরণ করতে শুরু করে। তারা এই ধার্মিক ব্যক্তিদের সম্মান করত এবং যখনই কোন সমস্যায় পড়ত তাদের সাথে পরামর্শ করত। সময়ের পরিক্রমায় এই ধার্মিক লোকরাও একসময় মৃত্যুবরণ করলেন। আরো একবার মুসলিমরা পথপ্রদর্শনের জন্য একজন নেতার অভাব অনুভব করল, এবং আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় ভীত ও চিন্তিত হয়ে পড়ল।

শয়তান মুসলিমদের এই দুরাবস্থা পর্যবেক্ষণ করে একজন পুরুষের ছদ্মবেশে এসে বলল, “আমরা যদি এইসব ধার্মিক লোকদের মূর্তি তৈরি করি, তাহলে এটা আমাদের উপাসনায় আনন্দের একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে, এবং আমাদেরকে তাদের কথা বেশি বেশি স্মরণ করিয়ে দিবে।” লোকেরা সহজে এতে রাজি হল, কারণ তাদের মধ্যে সবচেয়ে ধার্মিক পুরুষদের মূর্তি নির্মাণে ক্ষতির বিষয়টি তারা উপলব্ধি করতে পারেনি। তারা ভাবল উপরন্তু এই মূর্তিগুলো তাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিবে এবং বেশি বেশি ভালো কাজ করতে অনুপ্রাণিত করবে।

শয়তান সফলভাবে তার কলুষিত বীজ রোপণ করেছিল। এই ক্ষেত্রে সে ধৈর্যশীল ছিল কারণ সে জানতো যে মানুষকে দিয়ে অন্যের উপাসনা করানো একটি ধীর প্রক্রিয়া। যখন সেই প্রজন্ম গত হল, নতুন প্রজন্মের লোকেরা মূর্তি স্থাপনের পিছনের উদ্দেশ্য ভুলে গেল, আর তখন শয়তান লোকদের কানে ফিসফিস করে বলল: “তোমাদের পূর্বপুরুষরা এই মূর্তিগুলির পূজা করতো, এই মূর্তিগুলো তাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতো।” এভাবেই মূর্তি পূজা মানুষের অন্তরে শিকড় গেড়ে বসলো।

শতাব্দী পেরিয়ে গেল, এবং আল্লাহ মুশরিকদেরকে সত্যের দিকে ফেরানোর জন্য একজন নবী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। এই পবিত্র কাজের জন্য আল্লাহর মনোনীত নবী ছিলেন নূহ (আ:)। আল্লাহ তাঁর এই অনুগত বান্দাকে বাকপটুতা এবং অপরিসীম ধৈর্য দিয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন, যাতে তিনি সফলতার সাথে তাঁর দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

তাই নূহ (আ:) তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে এই বিশাল মহাবিশ্বের রহস্য সম্পর্কে প্রচার করতে শুরু করলেন। তিনি তাদেরকে রাত ও দিন, চাঁদ ও তারা, উদ্ভিদ ও প্রাণী এবং আকাশ ও পৃথিবী সম্পর্কে অবহিত করলেন। তিনি তাদের বুঝালেন যে, মানুষকে আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর মহিমা ঘোষণা করা ও ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। নূহ (আ:) তাদেরকে আরো বললেন আল্লাহর একত্বের কথা, এবং জগতের রহস্যের মধ্যেই রয়েছে এক সত্য ইলাহর অস্তিত্বের প্রমাণ এবং তা মহান আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নন। তিনি তাদের ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে বললেন যে শয়তান তাদের মূর্তি পূজার মাধ্যমে বিভ্রান্ত করেছে, এবং এই বিষয়েও সতর্ক করলেন যে তারা তাদের মূর্তি পূজা অব্যাহত রাখলে আল্লাহর পক্ষ থেকে ভয়ানক শাস্তির আশঙ্কা রয়েছে।

لَقَدۡ أَرۡسَلۡنَا نُوحًا إِلَىٰ قَوۡمِهِۦ فَقَالَ يَٰقَوۡمِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنۡ إِلَٰهٍ غَيۡرُهُۥٓ إِنِّىٓ أَخَافُ عَلَيۡكُمۡ عَذَابَ يَوۡمٍ عَظِيمٍ
আমি তো নূহকে তার কওমের নিকট প্রেরণ করেছি। অতঃপর সে বলেছে, ‘হে আমার কওম, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর। তিনি ছাড়া তোমাদের কোন (সত্য) ইলাহ নেই। নিশ্চয় আমি তোমাদের মহাদিনের আযাবের ভয় করছি’।
[সূরা আল-আ'রাফ-৭:৫৯]

নূহের (আ:) সম্প্রদায় অত্যন্ত বিভ্রান্তি ও ধৈর্যের সাথে তাঁর কথা শুনল। সম্প্রদায়ের সবচেয়ে দুঃখী এবং হতাশ ব্যক্তিরা নবীর কথায় আশা এবং সান্ত্বনা খুঁজে পেতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে ইসলামের ছায়াতলে প্রবেশ করে, আর বিত্তশালীরা ক্রোধান্বিত হয়ে তাঁকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। তারা নূহকে (আ:) বলল, “আমরা তোমাকে আমাদের মতই একজন মানুষ দেখতে পাচ্ছি।”

فَقَالَ ٱلۡمَلَأُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِن قَوۡمِهِۦ مَا نَرَىٰكَ إِلَّا بَشَرًا مِّثۡلَنَا وَمَا نَرَىٰكَ ٱتَّبَعَكَ إِلَّا ٱلَّذِينَ هُمۡ أَرَاذِلُنَا بَادِىَ ٱلرَّأۡىِ وَمَا نَرَىٰ لَكُمۡ عَلَيۡنَا مِن فَضۡلٍۢ بَلۡ نَظُنُّكُمۡ كَٰذِبِينَ
অতঃপর তার কওমের নেতৃস্থানীয়রা, যারা কুফরী করেছিল, তারা বলল, ‘আমরা তো তোমাকে আমাদের মত একজন মানুষ ছাড়া আর কিছু দেখছি না এবং আমরা দেখছি যে, কেবল আমাদের নীচু শ্রেণীর লোকেরাই বিবেচনাহীনভাবে তোমার অনুসরণ করেছে। আর আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব আমরা দেখছি না; বরং আমরা তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করছি’।
[সূরা হুদ-১১:২৭]

নূহ (আ:) তাদের বুঝিয়ে বললেন যে তিনি অবশ্যই তাদের মতই একজন মানুষ এবং আল্লাহ বিশেষভাবে একজন মানবকে নবী হিসাবে মনোনীত করেছেন কারণ পৃথিবী মূলত মানুষের দ্বারা দখলকৃত। আর যদি পৃথিবী ফেরেশতাদের দখলে থাকত, তাহলে আল্লাহ অবশ্যই একজন ফেরেশতা বার্তাবাহককে পাঠাতেন তাঁর বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয়রা নূহের (আ:) কাছে এসে বলল,
“শুনুন, আপনি যদি চান আমরা আপনার প্রতি বিশ্বাস আনি, তাহলে আপনার অনুসারী বিশ্বাসীদের তাড়িয়ে দিন। তারা হতদরিদ্র, আর আমরা অভিজাত এবং ধনী; কোন বিশ্বাসই আমাদের উভয় দলকে একত্রে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে না।”
নূহ (আ:) বিত্তবানদের অজ্ঞতা সম্পর্কে ভালোভাবেই অবগত ছিলেন। তিনি জানতেন যে খুব শান্তভাবে তাদেরকে বুঝাতে হবে যে বস্তুবাদী সম্পদ আল্লাহর দৃষ্টিতে মূল্যহীন এবং মানুষের অন্তরের বিশ্বাসটাই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নূহ (আঃ) তাদের উত্তর দিলেন-

وَيَٰقَوۡمِ لَآ أَسۡئَلُكُمۡ عَلَيۡهِ مَالًاۖ إِنۡ أَجۡرِىَ إِلَّا عَلَى ٱللَّهِۚ وَمَآ أَنَا۠ بِطَارِدِ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْۚ إِنَّهُم مُّلَٰقُواْ رَبِّهِمۡ وَلَٰكِنِّىٓ أَرَىٰكُمۡ قَوۡمًا تَجۡهَلُونَ
আর হে আমার কওম, এর বিনিময়ে আমি তোমাদের কাছে কোন সম্পদ চাই না। আমার প্রতিদান শুধু আল্লাহর কাছে। যারা ঈমান এনেছে, আমি তাদের তাড়িয়ে দিতে পারি না। নিশ্চয় তারা তাদের রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে। কিন্তু আমি তো দেখছি তোমরা এক অজ্ঞ জাতি’।
[সূরা হুদ:২৯]
وَيَٰقَوۡمِ مَن يَنصُرُنِى مِنَ ٱللَّهِ إِن طَرَدتُّهُمۡۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ
‘হে আমার কওম, যদি আমি তাদেরকে তাড়িয়ে দেই, তবে আল্লাহর আযাব থেকে কে আমাকে সাহায্য করবে? এরপরও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না’?
[সূরা হুদ:৩০]
وَلَآ أَقُولُ لَكُمۡ عِندِى خَزَآئِنُ ٱللَّهِ وَلَآ أَعۡلَمُ ٱلۡغَيۡبَ وَلَآ أَقُولُ إِنِّى مَلَكٌ وَلَآ أَقُولُ لِلَّذِينَ تَزۡدَرِىٓ أَعۡيُنُكُمۡ لَن يُؤۡتِيَهُمُ ٱللَّهُ خَيۡرًاۖ ٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِمَا فِىٓ أَنفُسِهِمۡۖ إِنِّىٓ إِذًا لَّمِنَ ٱلظَّٰلِمِينَ
আর আমি তোমাদের বলছি না যে, ‘আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডারসমূহ আছে’ এবং আমি গায়েব জানি না আর আমি এও বলছি না যে, ‘আমি ফেরেশতা’। তোমাদের চোখে যারা হীন, তাদের সম্পর্কে আমি বলছি না যে, ‘আল্লাহ তাদেরকে কখনো কোন কল্যাণ দান করবেন না’। তাদের অন্তরে যা আছে, সে সম্পর্কে আল্লাহ অধিক অবগত। (যদি এরূপ উক্তি করি) তাহলে নিশ্চয় আমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হব’।
[সূরা হুদ:৩১]

মুশরিকরা ক্ষিপ্ত ছিল। তারা নূহের অবিরাম প্রচার ও তর্ক-বিতর্ক অনেকদিন সহ্য করেছিল। তারা ক্ষুব্ধ হয়ে নূহকে চ্যালেঞ্জ করল-

قَالُواْ يَٰنُوحُ قَدۡ جَٰدَلۡتَنَا فَأَكۡثَرۡتَ جِدَٰلَنَا فَأۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَآ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ
তারা বলল, ‘হে নূহ, তুমি আমাদের সাথে বাদানুবাদ করছ এবং আমাদের সাথে অতিমাত্রায় বিবাদ করেছ। অতএব যার প্রতিশ্রুতি তুমি আমাদেরকে দিচ্ছ, তা আমাদের কাছে নিয়ে আস, যদি তুমি সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও’।
[সূরা হুদ:৩২]

নূহ (আ:) উত্তর দিলেন –

قَالَ إِنَّمَا يَأۡتِيكُم بِهِ ٱللَّهُ إِن شَآءَ وَمَآ أَنتُم بِمُعۡجِزِينَ
সে বলল, ‘আল্লাহই তো তোমাদের কাছে তা হাজির করবেন, যদি তিনি চান। আর তোমরা তাকে অক্ষম করতে পারবে না’।
[সূরা হুদ:৩৩]
وَلَا يَنفَعُكُمۡ نُصۡحِىٓ إِنۡ أَرَدتُّ أَنۡ أَنصَحَ لَكُمۡ إِن كَانَ ٱللَّهُ يُرِيدُ أَن يُغۡوِيَكُمۡۚ هُوَ رَبُّكُمۡ وَإِلَيۡهِ تُرۡجَعُونَ
আর আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিতে চাইলেও আমার উপদেশ তোমাদের কোন উপকারে আসবে না, যদি আল্লাহ তোমাদের বিভ্রান্ত করতে চান। তিনি তোমাদের রব এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে’।
[সূরা হুদ:৩৪]

এইসব অবিশ্বাসীরা নূহের (আ:) ব্যাপারে ধৈর্য হারিয়ে ফেলল, তারা আল্লাহর রসূলকে ইসলাম প্রচার থেকে বিরত থাকার ভয় দেখালো এবং তাকে অপমানিত করার চেষ্টা করল।

قَالَ ٱلۡمَلَأُ مِن قَوۡمِهِۦٓ إِنَّا لَنَرَىٰكَ فِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ
তার কওম থেকে নেতৃবর্গ বলল, ‘নিশ্চয় আমরা তোমাকে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে দেখতে পাচ্ছি’।
[সূরা আল-আ'রাফ:৬০]

ধৈর্যের সাথে নূহ (আ:) উত্তর দিলেন –

قَالَ يَٰقَوۡمِ لَيۡسَ بِى ضَلَٰلَةٌ وَلَٰكِنِّى رَسُولٌ مِّن رَّبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ
সে বলল, ‘হে আমার কওম, আমার মধ্যে কোন ভ্রান্তি নেই; কিন্তু আমি সকল সৃষ্টির রবের পক্ষ থেকে রাসূল’।
[সূরা আল-আ'রাফ:৬১]
أُبَلِّغُكُمۡ رِسَٰلَٰتِ رَبِّى وَأَنصَحُ لَكُمۡ وَأَعۡلَمُ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا تَعۡلَمُو
আমি তোমাদের নিকট পৌঁছাচ্ছি আমার রবের রিসালাতসমূহ এবং তোমাদের কল্যাণ কামনা করছি। আর আমি আল্লাহর কাছ থেকে এমন কিছু জানি, যা তোমরা জান না’।
[সূরা আল-আ'রাফ:৬২]

ক্রমাগত ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও প্রত্যাখ্যান সত্ত্বেও নূহ (আ:) সাড়ে নয়শ বছর ধরে তাঁর জাতিকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে অবিচল ছিলেন। কিন্তু প্রতিটি প্রজন্ম নুহকে (আ:) প্রত্যাখ্যান করেছিল যেমনটি তাদের বাপ দাদারা করেছিল। প্রতিটি শিশুকে বোধগম্যতার বয়সে পৌঁছলে তাদের নবী নূহের (আ:) শিক্ষার বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে সতর্ক করা হত। যখনই নূহ (আ:) তাদের কাছে যেতেন তখনই তারা কোন না কোন অজুহাতে পালিয়ে যেত। নূহ (আ:) বুঝতে পারলেন যে অবিশ্বাসীদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেখানে বিশ্বাসীদের সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে। তিনি তার সম্প্রদায়ের লোকদের উপর বিরক্ত হলেন এবং তাদের উপর ভয়ানক দুর্দশার আশঙ্কা করলেন, কিন্তু তিনি ছিলেন অনন্যোপায়।

তাই নূহ (আ:) আল্লাহর কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন এবং বললেন –

قَالَ نُوحٌ رَّبِّ إِنَّهُمۡ عَصَوۡنِى وَٱتَّبَعُواْ مَن لَّمۡ يَزِدۡهُ مَالُهُۥ وَوَلَدُهُۥٓ إِلَّا خَسَارًا * وَمَكَرُواْ مَكۡرًا كُبَّارًا * وَقَالُواْ لَا تَذَرُنَّ ءَالِهَتَكُمۡ وَلَا تَذَرُنَّ وَدًّا وَلَا سُوَاعًا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسۡرًا * وَقَدۡ أَضَلُّواْ كَثِيرًاۖ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا ضَلَٰلًا
নূহ বলল, ‘হে আমার রব! তারা আমার অবাধ্য হয়েছে এবং এমন একজনের অনুসরণ করেছে যার ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কেবল তার ক্ষতিই বাড়িয়ে দেয়’। আর তারা ভয়ানক ষড়যন্ত্র করেছে। আর তারা বলে, ‘তোমরা তোমাদের উপাস্যদের বর্জন করো না; বর্জন করো না ওয়াদ, সুওয়া‘, ইয়াগূছ, ইয়া‘ঊক ও নাসরকে’। বস্তুত তারা অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে, আর (হে আল্লাহ) আপনি যালিমদেরকে ভ্রষ্টতা ছাড়া আর কিছুই বাড়াবেন না’।
[সূরা নূহ:২১-২৪]

আল্লাহ শীঘ্রই নূহকে (আ:) ওহীর মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন যে, এরপর তাঁর সম্প্রদায়ের আর কেউ ইসলামের ছায়াতলে প্রবেশ করবে না। দুঃখিত ও হতাশ হয়ে নবী নূহ (আ:) আল্লাহকে বলেছিলেন –

وَقَالَ نُوحٌ رَّبِّ لَا تَذَرۡ عَلَى ٱلۡأَرۡضِ مِنَ ٱلۡكَٰفِرِينَ دَيَّارًا * إِنَّكَ إِن تَذَرۡهُمۡ يُضِلُّواْ عِبَادَكَ وَلَا يَلِدُوٓاْ إِلَّا فَاجِرًا كَفَّارًا
আর নূহ বলল, ‘হে আমার রব! যমীনের উপর কোন কাফিরকে অবশিষ্ট রাখবেন না’। আপনি যদি তাদেরকে অবশিষ্ট রাখেন তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং দুরাচারী ও কাফির ছাড়া অন্য কারো জন্ম দেবে না’।
[সূরা নূহ:২৬-২৭]

আল্লাহ নূহ (আ:) এর দূ’আ কবুল করেছিলেন। তিনি নূহকে (আ:) নির্দেশ দিয়েছিলেন:

وَٱصۡنَعِ ٱلۡفُلۡكَ بِأَعۡيُنِنَا وَوَحۡيِنَا وَلَا تُخَٰطِبۡنِى فِى ٱلَّذِينَ ظَلَمُوٓاْۚ إِنَّهُم مُّغۡرَقُونَ
আর তুমি আমার চোখের সামনে ও আমার ওহী অনুসারে নৌকা তৈরী কর। আর যারা যুলম করেছে, তাদের ব্যাপারে তুমি আমার কাছে কোন আবেদন করো না। নিশ্চয় তাদেরকে ডুবানো হবে’।
[সূরা হুদ:৩৭]

শহরের সীমানার বাইরে, সমুদ্র থেকে দূরে, নবী নূহ (আ:) ফেরেশতাদের সহায়তা ও নির্দেশনায় নৌকা তৈরির কাজ শুরু করেন। মানুষের ক্রমাগত ঠাট্টা-বিদ্রুপের মধ্যেও দিনরাত চলতে থাকে নির্মাণ কাজ। তারা নূহকে (আ:) বিদ্রুপ করে বললো, “ওহে নূহ, নবুওয়াতের চেয়ে মিস্ত্রির কাজ কি তোমার কাছে এখন বেশি আকর্ষণীয়? এই নৌকাটি টেনে কি তুমি পানিতে নিয়ে যাবে, নাকি বাতাস এটা তোমার জন্য বহন করবে?”

وَيَصۡنَعُ ٱلۡفُلۡكَ وَكُلَّمَا مَرَّ عَلَيۡهِ مَلَأٌ مِّن قَوۡمِهِۦ سَخِرُواْ مِنۡهُۚ قَالَ إِن تَسۡخَرُواْ مِنَّا فَإِنَّا نَسۡخَرُ مِنكُمۡ كَمَا تَسۡخَرُونَ
আর সে নৌকা তৈরী করতে লাগল এবং যখনই তার কওমের নেতৃস্থানীয় কোন ব্যক্তি তার পাশ দিয়ে যেত, তাকে নিয়ে উপহাস করত। সে বলল, ‘যদি তোমরা আমাদের নিয়ে উপহাস কর, তবে আমরাও তোমাদের নিয়ে উপহাস করব, যেমন তোমরা উপহাস করছ’।
[সূরা নূহ:৩৮]

নূহ তখন উত্তর দিয়েছিলেন –

فَسَوۡفَ تَعۡلَمُونَ مَن يَأۡتِيهِ عَذَابٌ يُخۡزِيهِ وَيَحِلُّ عَلَيۡهِ عَذَابٌ مُّقِيمٌ
অতএব, শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে, কার উপর সে আযাব আসবে যা তাকে লাঞ্ছিত করবে এবং কার উপর আপতিত হবে স্থায়ী আযাব।
[সূরা নূহ:৩৯]

নৌকা তেরির কাজ শেষ হলে আল্লাহ নূহকে (আ:) নির্দেশ দিলেন, যখন তাঁর বাড়ির চুলা থেকে পানি উথলে উঠতে শুরু করবে, তখন যেন তিনি বিশ্বাসীদের নিয়ে জাহাজে আরোহন করেন। এটিই ছিল বন্যার শুরুর প্রথম চিহ্ন যা কাফেরদের ধ্বংস করবে। আল্লাহর নির্দেশ মত আনতিবিলম্বে সেই ভয়ানক দিনের আবির্ভাব হল, নূহের (আ:) বাড়ির চুলা থেকে পানি উথলে উঠলো এবং নূহ (আ:) বুঝতে পারলেন এখনই জাহাজে আরোহণের সময়। সকল ঈমানদার সহ নূহ (আ:) প্রত্যেক জোড়ার দুটি করে পশু, পাখি ও পোকামাকড় নিয়ে জাহাজে আরোহন করলেন।

حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءَ أَمۡرُنَا وَفَارَ ٱلتَّنُّورُ قُلۡنَا ٱحۡمِلۡ فِيهَا مِن كُلٍّ زَوۡجَيۡنِ ٱثۡنَيۡنِ وَأَهۡلَكَ إِلَّا مَن سَبَقَ عَلَيۡهِ ٱلۡقَوۡلُ وَمَنۡ ءَامَنَۚ وَمَآ ءَامَنَ مَعَهُۥٓ إِلَّا قَلِيلٌ
অবশেষে যখন আমার আদেশ আসল এবং চুলা উথলে উঠল, আমি বললাম, ‘তুমি তাতে তুলে নাও প্রত্যেক শ্রেণী থেকে জোড়া জোড়া এবং যাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে তাদের ছাড়া তোমার পরিবারকে এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে। আর তার সাথে অল্পসংখ্যকই ঈমান এনেছিল।
[সূরা হুদ:৪০]
وَقَالَ ٱرۡكَبُواْ فِيهَا بِسۡمِ ٱللَّهِ مَجۡرىٰهَا وَمُرۡسَىٰهَآۚ إِنَّ رَبِّى لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ
আর সে বলল, ‘তোমরা এতে আরোহণ কর। এর চলা ও থামা হবে আল্লাহর নামে। নিশ্চয় আমার রব অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
[সূরা হুদ:৪১]

অবিশ্বাসীরা নূহের (আ:) এই অদ্ভুত আচরণ দেখে আরো একবার হেসে বলল, “নিশ্চয়ই নূহের মাথা খারাপ হয়েছে, সে কি কারনে পশুদের নৌকায় চারাচ্ছে?”

শীঘ্রই, ক্রুদ্ধ আকাশ থেকে প্রবল বর্ষণ শুরু হল এবং পৃথিবীর প্রতিটি ফাটল দিয়ে পানি উঠতে লাগল। পানির স্তর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং সমস্ত ভূপৃষ্ঠ পানির অতলে তলিয়ে যায়।

নূহ (আ:) তাঁর সম্প্রদায়ের উপর যে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছিল তা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তিনি জানতেন কাফেরদের আল্লাহর গজব থেকে রেহাই নেই। কাফেরদের মধ্যে হযরত নূহের (আ:) স্ত্রী এবং পুত্র ছিল যারা তাঁর নৌকায় চড়তে অস্বীকার করেছিল। নূহ (আ:) মরিয়া হয়ে ছেলেকে ডাকলেন –

وَهِىَ تَجۡرِى بِهِمۡ فِى مَوۡجٍ كَٱلۡجِبَالِ وَنَادَىٰ نُوحٌ ٱبۡنَهُۥ وَكَانَ فِى مَعۡزِلٍ يَٰبُنَىَّ ٱرۡكَب مَّعَنَا وَلَا تَكُن مَّعَ ٱلۡكَٰفِرِينَ
আর তা পাহাড়সম ঢেউয়ের মধ্যে তাদেরকে নিয়ে চলছিল এবং নূহ তার পুত্রকে ডাক দিল, আর সে ছিল আলাদা স্থানে- ‘হে আমার পুত্র, আমাদের সাথে আরোহণ কর এবং কাফিরদের সাথে থেকো না’।
[সূরা হুদ:৪২]

নূহের (আ:) অজ্ঞ পুত্র উত্তর দিয়েছিল-

قَالَ سَئَاوِىٓ إِلَىٰ جَبَلٍ يَعۡصِمُنِى مِنَ ٱلۡمَآءِ
সে বলল, ‘অচিরেই আমি একটি পাহাড়ে আশ্রয় নেব, যা আমাকে পানি থেকে রক্ষা করবে’।
[সূরা হুদ:৪৩]

নূহ (আ:) তাঁর পুত্রকে বলেছিলেন –

لَا عَاصِمَ ٱلۡيَوۡمَ مِنۡ أَمۡرِ ٱللَّهِ إِلَّا مَن رَّحِمَۚ
যার প্রতি আল্লাহ দয়া করেছেন সে ছাড়া আজ আল্লাহর আদেশ থেকে কোন রক্ষাকারী নেই’।
[সূরা হুদ:৪৩]
وَحَالَ بَيۡنَهُمَا ٱلۡمَوۡجُ فَكَانَ مِنَ ٱلۡمُغۡرَقِينَ
এরপর তাদের উভয়ের মধ্যে ঢেউ অন্তরায় হয়ে গেল। অতঃপর সে নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
[সূরা হুদ:৪৩]

যখন প্রতিটি অবিশ্বাসী ধ্বংস হলো, আল্লাহ আসমান এবং জমিনকে আদেশ করলেন –

وَقِيلَ يَٰٓأَرۡضُ ٱبۡلَعِى مَآءَكِ وَيَٰسَمَآءُ أَقۡلِعِى وَغِيضَ ٱلۡمَآءُ وَقُضِىَ ٱلۡأَمۡرُ وَٱسۡتَوَتۡ عَلَى ٱلۡجُودِىِّۖ وَقِيلَ بُعۡدًا لِّلۡقَوۡمِ ٱلظَّٰلِمِينَ
আর বলা হল, ‘হে যমীন, তুমি তোমার পানি চুষে নাও, আর হে আসমান, বিরত হও’। অতঃপর পানি কমে গেল এবং (আল্লাহর) সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হল, আর নৌকা জুদী পর্বতের উপর উঠল এবং ঘোষণা করা হল, ‘ধ্বংস যালিম কওমের জন্য’।
[সূরা হুদ:৪৪]

সহসাই আকাশ পরিষ্কার হলো, ঝলমলে সূর্য উদিত হলো, এদিকে, নূহের (আ:) নৌকা শান্তিপূর্ণভাবে জুদি পর্বতে অবতরণ করল। আল্লাহ তার নবীকে নির্দেশ দিলেন –

قِيلَ يَٰنُوحُ ٱهۡبِطۡ بِسَلَٰمٍ مِّنَّا وَبَرَكَٰتٍ عَلَيۡكَ وَعَلَىٰٓ أُمَمٍ مِّمَّن مَّعَكَ
বলা হল, ‘হে নূহ, তোমার ও তোমার সাথে যে উম্মত রয়েছে তাদের উপর আমার পক্ষ থেকে শান্তি ও বরকতসহ অবতরণ কর।
[সূরা হুদ:৪৮]

নির্দেশ অনুসারে, নবী নূহ (আ:) মুমিনদের সাথে জাহাজ থেকে নামলেন, উদ্ধারকৃত পশু, পাখি এবং পোকামাকড়কে সবুজ জমিতে ছেড়ে দিলেন। নূহ (আ:) কপাল মাটিতে ঠেকিয়ে তাঁর প্রভুকে সিজদা করলেন এবং তাঁর করুণা ও আশীর্বাদের জন্য তাঁকে অশেষ ধন্যবাদ জানালেন। ভয়ঙ্কর অগ্নিপরীক্ষা থেকে রক্ষা করার জন্য মুমিনরা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হলো এবং কৃতজ্ঞতাস্বরূপ একদিন রোজা পালন করল।

নূহের (আ:) জীবন থেকে শিক্ষণীয় বিষয়:

সকল নবীর দাওয়াত ছিল এক ও অভিন্ন এবং তা ছিল নির্ভেজাল তাওহীদের প্রতি দাওয়াত।
মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকতে হবে সহজ এবং বোধগম্য ভাষায়। নূহ (আ:) তাঁর জাতির লোকদেরকে খুব সহজ ভাষায় বলেছিলেন তারা কি ভুল করছে, এবং এর পরিনাম কি হতে পারে। তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য কি করতে হবে তাও তিনি তাদের বাৎলে দিয়েছিলেন সহজ সুন্দর ভাষায়, এবং এর উত্তম পরিনাম সম্পর্কেও তাদের অবহিত করেছিলেন।

নূহ (আ:) দীর্ঘকাল যাবত অবর্ণনীয় নির্যাতন ভোগ করা সত্ত্বেও তাঁর জাতির লোকদেরকে হেদায়াতের ব্যাপারে নিরাশ হননি। তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল তাওহীদ প্রচার করা এবং সেই লক্ষ্যে তিনি ছিলেন অবিচল। তিনি জানতেন হেদায়েত আসে একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে, এবং তাঁর কাজ হচ্ছে শুধুমাত্র প্রচার করে যাওয়া।

নবী-রাসূলরা তাদের স্বীয় জাতির বিরোধিতা সত্ত্বেও সমাজ সংস্কারের কাজ বন্ধ রাখেননি। তবে তাঁরা যদি কখনো বদদোয়া করেন তবে আল্লাহর গজব নেমে আসে।

নবী পরিবারের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও ঈমান না আনার কারণে নূহের স্ত্রী ও পুত্র নাজাত লাভে ব্যর্থ হয়েছে। ভালো মানুষের পরিবারেও খারাপ সন্তান জন্ম নিতে পারে। অসৎ সঙ্গীর কারণে মানুষের ইহকাল ও পরকালে সর্বনাশ হয়। কাফির ও মুশরিক সন্তান বা কোন নিকটাত্মীয়ের মাগফেরাতের জন্য আল্লাহর নিকটে দু‘আ করা জায়েয নয়।

ইমান পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ। আল্লাহর কাছে ইমানদারের মর্যাদা সবচেয়ে বেশি, যদি সে দুনিয়ায় দীনহীন গরিবও হয়। নবী রাসুলদের জীবনী পর্যালোচনা করলে আমরা দেখব যে সমাজের দীনহীন লোকেরাই সবসময় সবার আগে ঈমান এনেছে।

সমাজে নেতৃস্থানীয় ধনী লোকদের খুশী করার জন্য ঈমানদার গরীবদের দূরে সরিয়ে দেওয়া যাবে না।

শিরক জঘন্যতম এবং অমার্জনীয় অপরাধ। শিরকের কারণে নূহের (আ:) জাতি সহ অতীতের আরো অনেক জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে। এই মহাপাপ থেকে জাতিকে রক্ষা করার জন্য আলেমদের এবং রাষ্ট্রীয় নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে।

সমাজ নেতাদের পথভ্রষ্টতার কারণেই দেশে আল্লাহর গযব নেমে আসে। অতএব তাদেরকেই সবার আগে হুঁশিয়ার হওয়া কর্তব্য।

বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সাথে সাথে সাধ্যমত বাস্তব প্রচেষ্টা চালাতে হয়। যেমন নূহ (আঃ) প্রথমে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। অতঃপর গযব থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর হুকুমে নৌকা তৈরী করেন।

আল্লাহর উপর যথাযথ ভরসা করে বাহ্যিক উপকরণ অবলম্বন করা ‘তাওয়াক্কুল’ পরিপন্থী নয়।

নূহ (আ:) জানতেন কখন কোথায় কতটুকু মনোযোগ দিতে হয়। দীর্ঘদিন ইসলামের বাণী প্রচারের পরে আল্লাহ তা’আলা একপর্যায়ে তাঁকে জানিয়ে দিলেন তাঁর জাতি থেকে আর কেউ ইসলাম গ্রহণ করবে না। তখন তিনি প্রচারকাজ বন্ধ করে আল্লাহর নির্দেশে মহাপ্লাবনের প্রস্তুতির জন্য নৌকা তৈরীর কাজে মনোনিবেশ করলেন।

আল্লাহ তা’আলা সবসময় ঈমানদারদের পক্ষে থাকেন, এবং তাদের হয়ে তাদের শত্রুদের প্রতিশোধ নিয়ে থাকেন। নূহের (আ:) শত্রুদেরকে আল্লাহ প্লাবনে ডুবিয়ে মারেন, এবং তাঁর ঈমানদার সঙ্গীদেরকে রক্ষা করেন।

মহান আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে নবীদের হাতে যুগে যুগে বিভিন্ন শিল্পকর্মের সূচনা করেছেন। তিনি আদম (আ:)-এর মাধ্যমে কৃষিকাজ ও চাকার প্রচলন করেছেন, নূহ (আ:)-এর মাধ্যমে জাহাজশিল্পের সূচনা করেছেন।

এই দুনিয়ায় জৌলুষ এবং সাফল্যই প্রকৃত সাফল্য নয়, মুমিনদেরকে চেষ্টা করতে হবে চূড়ান্ত সাফল্য অর্থাৎ আখিরাতে সাফল্যের জন্য।

লিখেছেন

ফাহমিনা হাসানাত

কিছুটা লেখালেখি করি, ইসলামিক লাইনে কিছুটা পড়াশোনা করি। তাজউইদ, গ্রামার এবং কুরআন মেমোরাইজেশন এর ক্লাস করছি আলহামদুলিল্লাহ।
নিজে শিখছি, অন্যকেও শিখাচ্ছি। লেখালেখিটাও ঠিক এরকম। নিজে জানার জন্য মনের আনন্দে লিখি, শেয়ার করি।

লেখকের অন্যান্য সকল পোষ্ট পেতে ঘুরে আসুন

কিছুটা লেখালেখি করি, ইসলামিক লাইনে কিছুটা পড়াশোনা করি। তাজউইদ, গ্রামার এবং কুরআন মেমোরাইজেশন এর ক্লাস করছি আলহামদুলিল্লাহ।
নিজে শিখছি, অন্যকেও শিখাচ্ছি। লেখালেখিটাও ঠিক এরকম। নিজে জানার জন্য মনের আনন্দে লিখি, শেয়ার করি।

Exit mobile version