Writing

সন্তানের জন্য দোয়া করুন

আপনি কি মনে করেন যে, আপনার সন্তান অস্বাভাবিক?
প্রায়ই অসুস্থ থাকে?
রোগবালাই লেগেই থাকে?
রোগা?
ঘুমের সমস্যা?
বুদ্ধিমত্তা নিয়ে সংশয়?
কথাবার্তা, আচরণে অন্য দশজনের মতো নয়?

আপনি যদি নিশ্চিত হয়ে থাকেন, আপনার সন্তানের শারীরিক মানসিক কোনো প্রকার সমস্যা আছে, তাহলে আপনার উচিত কুরআন হাদিসে উল্লেখিত দুয়ার সাহায্যে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া দুয়া করা ঝাড়ফুঁক করা অর্থাৎ রুকইয়া করা।
ধনসম্পদ কম বেশি এবং শারীরিক অসুস্থতা আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা।

আল্লাহ বলেছেন,

আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা বিশেষভাবে পরীক্ষা করে থাকি। আর আমারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
(সূরা আম্বিয়া:৩৫)

এসকল পরীক্ষায় যারা সবর করতে পারেন, তাদের জন্য রয়েছে মহা পুরষ্কার।
আল্লাহ বলেছেন,

কেবল ধৈর্যশীলদেরকেই তাদের প্রতিদান পূর্ণরূপে দেয়া হবে কোন হিসাব ছাড়াই।
(সূরা যুমার:১০)

সন্তানের শারিরীক মানসিক সমস্যার কারণে বাবামার মন-মানসিকতা নষ্ট হয়ে যায়, ভেঙ্গে যায়। তবে এটা মনে রাখা দরকার, সন্তানের জন্য সবচেয়ে বেশি দুয়া কবুল হয় বাবামার। তাই সন্তানের জন্যে সবসময় দুয়া করুন।

এ দুয়াটি পড়া যায় ইনশাআল্লাহ।

رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন’।
(সূরা ফুরক্বান:৭৪)

এই দুয়াটি পড়ে বারবার সন্তানের শরীরে ফু দিতে পারেন ইনশাআল্লাহ।
একদা জিবরীল আ. রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে এসে বললেন, ইয়া মুহাম্মদ! আপনি কি অসুস্থতা বোধ করছেন? তিনি ﷺ বললেন, হ্যাঁ। তিনি (জিবরীল) বললেন,

بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللَّهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
অর্থাৎ, আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি, সে সব জিনিস থেকে, যা আপনাকে কষ্ট দেয়, সব প্রাণের অনিষ্ট কিংবা হিংসুকের বদ নজর থেকে আল্লাহ আপনাকে শিফা দিন; আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি।
(মুসলিম:৫৫১২)

রাসূলুল্লাহ ﷺ হাসান ও হুসাইন রাযি.-কে এই বাক্যগুলো দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করতেন,

‏ أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
অর্থাৎ, আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহ্‌র কালামের আশ্রয়ে রাখতে চাই সব ধরনের শয়তান হতে, কষ্টদায়ক বস্তু হতে এবং সব ধরনের বদ-নজর হতে।
(দোয়াটি একটি ছেলে সন্তানের জন্য পড়লে ‘উয়ীযুকা’, একটি মেয়ে সন্তানের জন্য ‘উয়ীযুকি’ দুইজনের জন্য ‘উয়ীযুকুমা’ আর দুইয়ের অধিক হলে ‘উয়ীযুকুম’ বলতে হবে।) (বুখারী:৩৩৭১)

সন্তানদেরকে উক্ত দোয়া প্রতি দিন তিন বা ততোধিক বেজোর সংখ্যক বার পড়ে ফুঁ দিতে পারেন।

রাসূলুল্লাহ ﷺ এই বলে দোয়া করতেন যে,

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْبَرَصِ وَالْجُنُونِ وَالْجُذَامِ وَمِنْ سَيِّئْ الْأَسْقَامِ
হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাইছি আপনার কাছে শ্বেতকুষ্ঠ, উম্মাদ রোগ, কুষ্ঠ রোগ ও তামাম খারাপ ব্যধি থেকে।
(আবূ দাঊদ:১৫৫৪)

সুতরাং এ দোয়াটি পড়ে সন্তানদের গায়ে ফুঁক দিন এবং এটি বারবার করুন।

এছাড়া যারা কথা বলতে পারে না বা অটিস্টিক তাদের সূরা বানী-ইসরাঈল পড়ে রুকইয়াহ করার কথাও প্রসিদ্ধ। পড়তে না পারলে অডিও শুনাতে পারেন নিয়ত করে।

মুসলিম উম্মাহর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ২টি মহাষৌধ হচ্ছে: কালিজিরা এবং মধু।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

এতে (মধু) মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার।
(সূরা নাহল:৬৯)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
কালিজিরায় মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের নিরাময় আছে।
(ইবনে মাজাহ:৩৪৪৭)

সন্তানের শারিরীক মানসিক যেকোনো সমস্যার জন্য কালিজিরা প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ ২বেলা খাওয়াতে পারেন; মধু মিক্সড করে পানি পান করাতে পারেন ইনশাআল্লাহ।

নিয়ত করে নেবেন, আমল চালিয়ে যাবেন, ধীরে ধীরে মহান আল্লাহ সুস্থ করে দেবেন, ইনশাআল্লাহ।

লিখেছেন

বস্তুত চোখ তো অন্ধ হয় না, বরং অন্ধ হয় বক্ষস্থিত হৃদয়।
(২২ঃ৪৬)

Picture of মাহমুদ হাসান

মাহমুদ হাসান

বস্তুত চোখ তো অন্ধ হয় না, বরং অন্ধ হয় বক্ষস্থিত হৃদয়।
(২২ঃ৪৬)

লেখকের অন্যান্য সকল পোষ্ট পেতে ঘুরে আসুন
Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture