Writing

পুরুষের পর্দা

পর্দা শুধু নারীর উপরে ফরজ এজন্য আমরা শুধু নারীর পর্দা বিষয় লেখালেখি করি,ওয়াজ-মাহফিল ইত্যাদি জায়গায় বলি।কিন্তু হায় আফসোস, আমরা নারীদের পর্দা এবং নারীদের ভুল ধরতে ধরতে নিজেদের বিষয় খেয়াল করি না।
পর্দা পুরুষের উপরও ফরজ এটা অনেকেই জানেন না,শুধু জানেন নারীদের উপর পর্দা ফরজ করা হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে প্রথমে পুরুষের পর্দার বিষয় আদেশ করেছেন!
আল্লাহ তায়ালা বলেন…

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
[সূরা আন্-নূর : ৩০]

এরপর নারীর পর্দার বিষয়ে আদেশ করেছেন!
তিনি (আল্লাহ) বলেন..

“আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে।……”
[সূরা আন্-নূর : ৩১]

পুরুষের মূল পর্দার হলো দৃষ্টি এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করা!
দৃষ্টি থেকেই বেশি পাপের সূচনা হয়।
চোখ আমাদের সকল পরিক্ষার মূল প্রশ্নপত্র। চোখের উত্তরটা ঠিক ঠাক লিখলে ভুরি ভুরি নাম্বার অর্জন করা সম্ভব, ইন শা আল্লাহ। তাই একই সংযত করতে হবে, নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) বলেন
‘চোখ নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত, পাপ নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব।’

মনে রাখবেন ভাই,
দৃষ্টি সংযত থাকলে মস্তিষ্ক সংযত থাকে, অন্তরে কু ধারণা আসেনা।মস্তিষ্ক আর অন্তরের কানেকশন।আর অন্তর সংযত হলে লজ্জাস্থান সংযত!একটার সাথের আরেকটার সম্পর্ক বেশ গভীর ভাবুন চিন্তা করুন কতইনা সুন্দর ব্যবস্থা, সুবহা-নাল্লা-হ।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে নারীরা যদি বেপর্দা চলাচল করে তাহলে আমরা কি করব?
দৃষ্টি তো সে দিকে যাবেই!
হ্যাঁ,সেটাই স্বাভাবিক! তবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে, ইন শা আল্লাহ!

হাদিসে দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায়।

বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বুরাইদাহ্ (রাঃ)হতে মারফূ’ হিসেবে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে ‘আলী! বারবার (অননুমোদিত জিনিসের প্রতি) তাকাবে না। তোমার প্রথম দৃষ্টি জায়িয ( ও ক্ষমাযোগ্য) হলেও পরের দৃষ্টি (ক্ষমাযোগ্য) নয়।
[জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৭৭৭]

জারীর ইবনু ‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে(কারো প্রতি) হঠাৎ দৃষ্টি পড়া বিষয়ে প্রশ্ন করলাম। তিনি আমাকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে আদেশ করলেন।
[জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৭৭৬]

লজ্জাস্থান সম্পর্কে লিখতে গেলে পোস্ট অনেক বড় হয়ে যাবে। কিন্তু দৃষ্টি হেফাজত করতে পারলে লজ্জাস্থান খুব সহজেই হেফাজত করা সম্ভব,
ইন শা আল্লাহ!

আল্লাহ আমাদের সকলকে (নারী-পুরুষ উভয়কেই) দৃষ্টি এবং লজ্জাস্থান হেফাজতের তৌফিক দান করুন!
আমিন!

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture