HadithWriting

করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে রাসুল (সা.) এর শেখানো পদ্ধতিতে চলছে চীন

করোনা ভাইরাসে বিধ্বস্ত চীন। চীনের উহান শহর থেকে এ ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় ১৪টি দেশে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই ভাইরাসে চীনে মারা গেছে ১০৬ জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ১৯৩ জন। গবেষকরা ধারণা করছেন যদি এ ভাইরাস বিশ্বে ছড়িয়ে পরে তাহলে প্রায় ছয় কোটি মানুষ মৃত্যুর মুখে পড়তে পারে।

চীন এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে যে নীতি অবলম্বন করছে, এ নীতি রাসুল সা. আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগে বলে দিয়েছেন। রাসুল সা. বলা সেই নীতিই আজ গ্রহণ করছে এ ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে।

মহামারি মূলত আল্লাহর গজব।
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ذَكَرَ الطَّاعُونَ فَقَالَ ‏ “‏ بَقِيَّةُ رِجْزٍ – أَوْ عَذَابٍ أُرْسِلَ عَلَى طَائِفَةٍ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ فَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَأَنْتُمْ بِهَا فَلاَ تَخْرُجُوا مِنْهَا وَإِذَا وَقَعَ بِأَرْضٍ وَلَسْتُمْ بِهَا فَلاَ تَهْبِطُوا عَلَيْهَا ‏”‏ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَعْدٍ وَخُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَجَابِرٍ وَعَائِشَةَ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏

উসামা ইবনু যাইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে মহামারি প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, এটি আল্লাহর গজব বা শাস্তি বনি ইসরাঈলের এক গোষ্ঠীর ওপর এসেছিল, তার বাকি অংশই হচ্ছে মহামারি। অতএব, কোথাও মহামারি দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থানরত থাকলে সে জায়গা থেকে চলে এসো না। অন্যদিকে কোনো এলাকায় এটা দেখা দিলে এবং সেখানে তোমরা অবস্থান না করলে সে জায়গায় যেয়ো না।
Usamah bin Zaid narrated that:

The Prophet mentioned the plague and said: “It is an abiding punishment or chastisement that was sent upon a group of the children of Isra’il. So when it occurs in a land while you are in it, then do not leave it. And when it occurs in a land while you are not in it, then do not enter it.”
(তিরমিজি- ১০৬৫)

করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বেড়ে চলায় চীনের সপ্তম বৃহৎ শহর উহানে সকল গণপরিবহন সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ শহরটিতে বসবাস করে। এখান থেকেই ভাইরাস ছড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, হংকংসহ বিভিন্ন দেশে।

রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, ‘যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারি আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তা ছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। (ইবনে মাজাহ-৪০১৯)

মনে করা হচ্ছে, সার্স বা ইবোলার মতোই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসও। তবে এটি নাকি সার্স বা ইবোলার চেয়েও অনেক বেশি বিপজ্জনক। করোনাভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি শরীরে ছড়ায়।

এ ভাইরাস এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে দেখা যায়নি। তবে ২০০২ সালে চীনে সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামের একটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল, যাতে সংক্রমিত হয়েছিল ৮ হাজার ৯৮ জন। মারা গিয়েছিল ৭৭৪ জন। সেটিও ছিল এক ধরনের করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসের লক্ষণগুলো হলো কাশি, জ্বর, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, নিউমোনিয়া।

এই মুহূর্তে আমাদের সবার উচিত, মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকা, সর্বদা পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন থাকা। কারণ কিয়ামতের নিদর্শনগুলোর একটি হলো মহামারি।

রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, কিয়ামতের আগের ছয়টি নিদর্শন গণনা করে রাখো। আমার মৃত্যু, অতঃপর বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়, অতঃপর তোমাদের মধ্যে ঘটবে মহামারি, বকরির পালের মহামারির মতো, সম্পদের প্রাচুর্য, এমনকি এক ব্যক্তিকে এক শ দিনার দেওয়ার পরও সে অসন্তুষ্ট থাকবে। অতঃপর এমন এক ফিতনা আসবে, যা আরবের প্রতিটি ঘরে প্রবেশ করবে। অতঃপর যুদ্ধবিরতির চুক্তি, যা তোমাদের ও বনি আসফার বা রোমকদের মধ্যে সম্পাদিত হবে। অতঃপর তারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে এবং ৮০টি পতাকা উড়িয়ে তোমাদের বিপক্ষে আসবে; প্রতিটি পতাকার নিচে থাকবে ১২ হাজার সৈন্য। (বুখারি-৩১৭৬)

হাদিসের ভাষ্যের সঙ্গে আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকাংশেই মিলে যায়। বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে প্রাচুর্য বেড়েই চলছে। নতুন নতুন রোগ আত্মপ্রকাশ করছে। এগুলো বন্ধ করার সাধ্য কারো নেই। তবে এই পরিস্থিতিতে আমরা রাসুল সা. এর দেখানো পথ অনুসরণ করতে পারি।

তাই আমাদের উচিত, যেখানে এ ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা দেবে, সেখানে যাতায়াত থেকে বিরত থাকা। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ সরকারিভাবে করোনা আক্রান্ত দেশগুলোতে যাতায়াতে সতর্কতা জারি করেছে। যেহেতু চিকিৎসকদের মতে এ ভাইরাসটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণত ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতো তীব্র নিউমোনিয়া সিনড্রোমের মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায়।

মহামারি আল্লাহর গজব হলেও এতে আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিকে পাপী-জাহান্নামি মনে করা যাবে না। রাসুল সা. এর ভাষায় মহামারিতে মারা যাওয়া ব্যক্তিও শহিদ। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সা. বলেছেন, পাঁচ প্রকার মৃত শহীদ—মহামারিতে মৃত, পেটের পীড়ায় মৃত, পানিতে ডুবে মৃত, ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়ে মৃত এবং যে আল্লাহর পথে শহীদ হলো।
(বুখারি ২৮২৯)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, মহামারিতে মৃত্যু হওয়া প্রতিটি মুসলিমের জন্য শাহাদাত। (বুখারি-২৮৩০)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তিনবার বলবে ‘বিসমিল্লা-হিল্লাজী লা ইয়াদ্বুররু মাআসমিহি শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামা-ই, ওয়াহুয়াস সামী‘উল আলীম’,
অর্থ : ‘আল্লাহর নামে যার নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনো বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী’; সকাল হওয়া পর্যন্ত তার প্রতি কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না। আর যে তা সকালে তিনবার বলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার ওপর কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না।
(আবু দাউদ-৫০৮৮)

https://www.youtube.com/watch?v=DGlF5wk7GpQ

Copyright :- dailymorning24

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture