Q/AAbdullahil HadiScholar Bangla

শিয়ারা কেন হুসাইন রা. এর প্রতি এত দরদ দেখায়

অবাক করা তথ্য!
আপনি জানেন কি শিয়ারা কেন হুসাইন রা. এর প্রতি এত দরদ দেখায়?
শিয়া সম্প্রদায় কেন আলী রা. এর ছেলেদের মধ্যে কেবল হুসাইন রা. এর এত গুণগান করে এবং তার প্রতি এত দরদে দেখায়?
কখনও কি এ বিষয়ে নিজেকে প্রশ্ন করেছেন?
কখনো কি বিস্ময়কর মনে হয়েছে বিষয়টি?

এই তথ্য জানার পরে বিশ্বের অনেক মুসলিম হোঁচট খেয়েছে, বিশেষ করে আরব দেশের শিয়ারা। এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে আসুন, আলী রা. এর সন্তানদের সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নি।
আলী রা. এর মোট ছেলে ছিল ১১ জন । তাদের নাম নিম্নরূপ:

  1. হাসান বিন আলী বিন আবু তালিব
  2. হুসাইন বিন আলী বিন আবু তালিব
  3. মুহসিন বিন আলী বিন আবু তালিব
  4. আব্বাস বিন আলী বিন আবু তালিব
  5. হেলাল বিন আলী বিন আবু তালিব
  6. আব্দুল্লাহ বিন আলী বিন আবু তালিব
  7. জাফর বিন আলী বিন আবু তালিব
  8. উসমান বিন আলী বিন আবু তালিব
  9. উবায়দুল্লাহ বিন আলী বিন আবু তালিব
  10. আবু বকর বিন আলী বিন আবু তালিব
  11. উমর বিন আলী বিন আবু তালিব

আপনি কি কখনও দেখেছেন, শিয়াদের পতাকায় ‘ইয়া হাসান’,‘ইয়া মুহসিন’ ‘ইয়া আব্বাস’…বা তাঁর অন্য কোন ছেলের নাম লেখা আছে? না কখনও নয়। আমরা দেখি নি।

তাহলে প্রশ্ন হল, কী করণে শুধু ‘ইয়া হুসাইন’ লেখা হয়? কেন সাহায্য প্রার্থনা করা হয় কেবল হুসাইন রা. এর কাছে? অথচ হাসান ও হুসাইন রা. সহোদর ভাই, তাদের উভয়ের মা ফাতেমা রা., উভয়ের পিতা আলী রা., উভয়েই আলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত!!

হে বিশ্বের মুসলিমগণ, হে শিয়া সম্প্রদায়, আপনারা কখনও কি নিজেদের বিবেকের কাছে এই প্রশ্ন করেছেন?

উত্তর দেয়ার আগে, হতভম্ব করার মত এই তথ্যটি জেনে নিন।
আপনারা জানেন কি যে, শিয়া রাফেযীদের কথিত ১২ জন ইমাম সকলেই হুসাইন রা. এর বংশধর?

শিয়ারা হাসান রা. বা আলী রা. এর অন্য সকল ছেলেকে বাদ দিয়ে সম্মান-শ্রদ্ধা ও ভক্তি দেখায় কেবল হুসাইন রা. এর প্রতি-

এর কারণ হল,

হুসাইন রা. বিবাহ করেছিলেন এক ইরানী পারস্য নারীকে। যিনি ছিলেন পারস্য রাজা ইয়াযদেগেরদ (Yazdegerd, শাসনকাল: ৬৩১-৬৫১ খৃষ্টাব্দ) এর কন্যা। তার নাম শাহযানা।
মুসলিম সেনাদের হাতে পারস্য রাজ্যের পতন ঘটলে রাজা ইয়াযদেগেরদ নিহত হল। অত:পর তার মেয়েদেরকে বন্দি করে নিয়ে আসা হল।

খলীফা উমর রা. পারস্যের রাজকুমারীদের মধ্যে এই শাহযানাকে উপহার হিসেবে দেন হুসাইন রা.কে। অত:পর তিনি তাকে বিয়ে করেন।
এই কারণে শিয়ারা হুসাইন রা. ও তাদের কথিত ইমামদেরকে এত শ্রদ্ধা করে। কেননা, এই ইমামরা সকলেই পারস্যকন্যা শাহযানা এর ঔরসজাত। হুসাইন রা. এর প্রতি তাদের এই ভালবাসা ‘আলে বাইত’ তথা নবী পরিবারের প্রতি ভালবাসার কারণে নয়-যেমনটি তারা দাবি করে।

সুতরাং বাস্তব কথা হল,তারা আলে বাইতে কেসরা তথা পারস্য রাজা ইয়াযদেগেরদ এর পরিবারকে ভালবাসে। যে কেসরা ছিল ১২ ইমামের নানা। কেননা এদের সকলের মা হল পারস্যের রাজকন্যা

সুতরাং বাস্তবতা হল, শিয়ারা হুসাইন রা.এর সন্তানদের নানাকে ভালবাসে; হুসাইন রা. এর নানা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নয়।

ইমাম ইবনে কাসীর রহ. ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ গ্রন্থের ৯ম খণ্ডে ৬১ হিজরি সনের ঘটনাবলী উল্লেখ করতে গিয়ে হুসাইন বিন আলী রা. এর জীবনীতে লিখেছেন:

“যামাখশারী ‘রাবীউল আবরার’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন,উমর ইবনুল খাত্তাব রা. এর শাসনামলে পারস্য বাদশাহ ইয়াযদেগিরদ এর তিন কন্যাকে বন্দি করে আনা হয়েছিল।

তাদের মধ্যে একজনকে পেয়েছিলেন আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা.। তার মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সালেম।
আরেকজন পেয়েছিলেনে মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর সিদ্দীক রা.। তার মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কাসেম।

আর আরেকজন পেয়েছিলেন হুসাইন বিন আলী রা.। তার মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যাইনুল আবেদীন।
সুতরাং সালেম রহ., কাসেম রহ. এবং যাইনুল আবেদীন রহ. এই তিনজন খালাতো ভাই।”

সুতরাং শিয়া-রাফেযীরা তাদের যে সকল ইমামকে ভক্তি-শ্রদ্ধা করতে গিয়ে নবীদের পর্যায়ে উপনীত করে এবং যাদেরকে তারা নিষ্পাপ মনে করে তারা সকলে ছিলেন হুসানই রা. এর পারস্য স্ত্রী পক্ষের বংশধর। তাদের কথিত ১২ জন ইমাম সকলেই সেই পারস্য নারীর রক্ত সম্পর্কীয়।

হুসাইন এবং ইমামদেরকে শিয়াদের ভালবাসার কারণ হল, ইমামদের সাথে শিয়াদের রক্ত সম্পর্ক রয়েছে। কেননা তাদের ইমামরা কেসরা তথা পারস্য শাসকগোষ্ঠীর বংশধর।

সুতরাং মানুষ জানুক যে, শিয়ারা পারস্য রাজা ইয়াযদেগেরদ এর পরিবারকে ভালবাসে; নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পরিবারকে নয়।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা এই লেখাটি পড়ার পর চুপ না থেকে ব্যাপকভাবে প্রচার করুন যেন, মুসলিমরা শিয়াদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে। আর শিয়ারাও যেন এ তথ্য জানতে পারে। কারণ, অনেক শিয়াও প্রকৃত রহস্য জানে না। দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, শিয়াদের কালো পাগড়ীধারী ধর্মগুরুরা তাদের অন্ধভক্ত ও অনুসারীদের নিকট এই সব তথ্য গোপন রেখেছে তাদের অন্ধভক্তিকে পূঁজি করে?!!

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture