Abdullahil HadiQ/AScholar Bangla

ফিতরা কাকে বলে

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে কী দ্বারা এবং কী পরিমাণ ফিতরা দেওয়া হত?
ফিতরাকে শরিয়তে ‘যাকাতুল ফিতর এবং সাদাকাতুল ফিতর’ বলা হয়েছে। অর্থাৎ ফিতরের যাকাত বা ফিতরের সদকা। ফিতর বা ফাতূর বলা হয় সেই আহারকে যা দ্বারা রোযাদার রোযা ভঙ্গ করে।1

আর যাকাতুল ফিতর বলা হয় ঐ জরুরী দানকে যা, রোযাদারেরা ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অভাবীদের দিয়ে থাকে। [প্রাগুক্ত]

যেহেতু দীর্ঘ দিন রোযা অর্থাৎ পানাহার থেকে বিরত থাকার পর ইফতার বা আহার শুরু করা হয় সে কারণে এটাকে ফিতরের তথা আাহারের যাকাত বলা হয়।2

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে কি দ্বারা এবং কি পরিমাণ ফিতরা দেওয়া হত?

বুখারী শরীফে ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন,
‘‘আল্লাহর রাসূল যাকাতুল ফিতর স্বরূপ এক সা খেজুর কিংবা এক সা যব ফরয করেছেন মুসলিম দাস ও স্বাধীন, পুরুষ ও নারী এবং ছোট ও বড়র প্রতি। আর তা লোকদের নামাজে বের হওয়ার পূর্বে আদায় করে দিতে আদেশ করেছেন’’।3

উক্ত হাদিসে দুটি খাদ্য দ্রব্যের নাম পাওয়া গেল যা, দ্বারা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে ফিতরা দেওয়া হত। একটি হচ্ছে, খেজুর অপরটি জব। এবার নিম্নে আর একটি হাদিস পাঠ করুন।

আবু সাঈদ খুদরীরা. বলেন,
“আমরা-নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে যাকাতুল ফিতর বের করতাম এক সা খাদ্য দ্রব্য কিংবা এক সা যব কিংবা এক সা খেজুর কিংবা এক সা পনীর কিংবা এক সা কিশমিশ।”4

এই হাদিসে খেজুর ও জব ছাড়া আরও যে কয়েকটি বস্তুর নাম পাওয়া গেল তা হল: কিশমিশ, পনীর এবং খাদ্য দ্রব্য। উল্লেখ থাকে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিগত হওয়ার পরে মুআবিয়া রা.- এর খেলাফতে অনেকে গম দ্বারাও ফিতরা দিতেন।5

প্রমাণিত হল যে, নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে যে সব দ্রব্যাদি দ্বারা ফিতরা দেওয়া হয়েছিল তা হল, খেজুর, জব, কিশমিশ, পনীর এবং খাদ্য দ্রব্য। এবং এটাও প্রমাণিত হল যে ফিতরার পরিমাণ ছিল এক সা’।
যদি নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদ্য দ্রব্য শব্দটি না বলতেন তো আমাদের প্রতি খেজুর, জব, কিশমিশ এবং পনীর দ্বারাই ফিতরা দেওয়া নির্ধারিত হত। কিন্তু আমাদের প্রতি আল্লাহর রহমত দেখুন এবং ইসলামের বিশ্বজনীনতা লক্ষ্য করুন যে খাদ্য দ্রব্য শব্দটি উল্লেখ হয়েছে বলেই উপরোল্লিখিত দ্রব্যাদি যাদের খাবার নয় তারাও নিজ খাবার দ্বারা ফিতরাআদায় করতে পারবেন। আর এখান থেকেই প্রশ্ন আসে যে, ধান দ্বারা ফিতরা দিতে হবে না চাল দ্বারা?
দুটিই কি খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত?

  1. আল মুজাম আল ওয়াসীত/৬৯৪ ↩︎
  2. ফাতহুল বারী ৩/৪৬৩ ↩︎
  3. বুখারী, অধ্যায়: যাকাত হাদিস নম্বর, ১৫০৩/ মুসলিম নং ২২৭৫ ↩︎
  4. বুখারি- ১৫০৬ মুসলিম-২২৮১ ↩︎
  5. বুখারী- ১৫০৮ ও মুসলিম-২২৮১ ↩︎
Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button