Writing

একজন মুসলিমের বিয়ের বায়োডাটা

বিয়ের বাজারে ‘বায়োডাটা বা সিভি’ খুবই পরিচিত একটি শব্দ। বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী উভয়ই নিজেদের তথ্যবলী যে মাধ্যমে তুলে ধরেন সেটাই হচ্ছে বায়োডাটা। এখানে আমরা শুধুমাত্র গতানুগতিক তথ্য দেওয়াতেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছি। কিন্তু একজন মুমিন-মুমিনার উচিত এখানে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যোগ করে দেওয়া যাতে সঠিক পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করা যায়, যাতে বেদ্বীন সঙ্গীর প্রস্তাবও যেন তার কাছে না আসে।

আপনি যখন আপনার সিভিতে পরিস্কার করে তুলে ধরবেন যে, আপনি আসলে এই এই গুনাবলীর পার্টনার চাচ্ছেন তখন সঠিক পাত্র পাত্রীর কাছে পৌঁছা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। যারা দ্বীন থেকে দূরে, ইসলাম অনুযায়ী চলতে যাদের অনীহা রয়েছে তারা কিন্তু আপনার সিভি দেখে আর আগাতে পারবে না। তখন শুধু শুধু দেখাদেখি করে সময়টাও নষ্ট হবে না। মোটকথা, আপনার বায়াডাটাতে আরও কিছু তথ্যের সংযোজন বেদ্বীনদের সহজেই ফিল্টার করে আগে থেকে বাদ দেওয়া যাবে।

সেই লক্ষ্য আমি আপনাদের সামনে কিছু বিষয় তুলে ধরছি যা বায়োডাটার একেবারে প্রথমে যুক্ত করে দিতে পারেন। অবশ্য, আমার দেওয়ার বাইরে আপনাদের দৃষ্টিতে আর কিছু থেকে থাকলে আপনারা সেগুলো সংযোজন করতে পারেন। ফলে এগুলোই চূড়ান্ত নয়। যদি এইসব বিষয় দেখে তার আপত্তি থাকে তবে তার আর বায়োডাটার নিচের অংশে যাওয়ার প্রয়োজনই পড়বে না।আগেই বাদ পড়ে যাবে। আর এটাই তো দরকার।সর্বাবস্থায় বেদ্বীনরা ফিল্টার হয়ে যাওয়াটাই তো কাম্য। যাইহোক, পাত্রীর সিভির শুরুতে যে কথাগুলো লিখে দিতে পারেন-

  • পাত্রকে অবশ্যই ‘জামাতে’ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী হতে হবে।
  • পাত্রকে অবশ্যই ‘হালাল’ উপার্জনকারী হতে হবে। (বেশি আয়ের হওয়া জরুরি নয়, হালাল আয়টাই জরুরি।)
  • পাত্রের অবশ্যই ‘সুন্নতী দাঁড়ি’ (স্টাইলিশ নয়) ও টাখনুর ওপর কাপড় পরিধেয় থাকতে হবে।
  • পাত্রকে অবশ্যই ‘মাহরাম’, ‘গায়রে-মাহরাম’ মেনে চলতে হবে।
  • পাত্রকে অবশ্যই নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, আমাকে পরিপূর্ণ পর্দা করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ মাহরাম, গায়রে-মাহরাম মেনে চলার পরিবেশ করে দেওয়া হবে এবং সহযোগিতা করা হবে।

যদি উপরের একটি বিষয়েও পাত্রের আপত্তি থাকে তবে

প্রস্তাবে ‘হ্যাঁ’ বলার কোনো সুযোগ না রাখার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। আল্লাহুম্মাগফিরলী।

পক্ষান্তরে, পাত্রের সিভির শুরুতে যে কথাগুলো লিখে দিতে পারেন তা হলো –

  • পাত্রীকে অবশ্যই ‘সময়মতো’ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী হতে হবে।
  • পর্দা শুধু বোরকা হিজাবে সীমাবদ্ধ নয়, পাত্রীকে অবশ্যই ‘মাহরাম’, ‘গায়রে-মাহরাম’ মেনে চলার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
  • পাত্রীকে অবশ্যই ‘অল্পে তুষ্ট’ এ বিষয়ের সাথে মানিয়ে নেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে।
  • বাইরে চাকরি করা নয়, ঘর সংসারী হওয়ার মানসিকতা লালন করা, মোবাইলের প্রতি অনাসক্তি পাত্রীই আমার পছন্দ।
  • বিয়েটা সমাজের রীতি মেনে নয়, ‘অবশ্যই’ সুন্নতী তরীকায় হতে হবে।

উল্লেখ্য,‘সমাজের রীতি মেনে নয়’ বলতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা যাবে না, পাত্রীকে স্টেইজে সবার সামনে পুতুলের মতো বসানো যাবে না, বেপর্দায়ী হয়ে আসা যাবে না ইত্যাদি এরকম আরও যত আল্লাহর নাফরমানী আছে তা করা যাবে না।

যদি উপরের একটি বিষয়েও পাত্রীর আপত্তি থাকে তবে

শুধু শুধু পাত্রী পক্ষের মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চাই না।

সিভির ঐ অংশটুকু রীতিমতো ফিল্টারিং হিসেবে কাজ করবে। তখন দেখবেন বদকার তো বটেই বহু তথাকথিত দ্বীনদারও এখানে এসে ধরা খেয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ এগুলো আপনাকে আঙ্গুল দিয়ে লেবাসধারীদের ধরিয়ে দিবে।
প্রসঙ্গত, সিভির ঐ অংশটুকু কিছুটা ডমিনেটিং মনে হলেও চিন্তা করে দেখুন একটা কথাও কিন্তু ব্যক্তি স্বার্থে নয়, সব আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের স্বার্থে, আল্লাহকে পাওয়ার স্বার্থে। ঐগুলো তো বলে দেওয়ার কথা ছিল না- তাই না?
আল্লাহর অনুগত বান্দা মানেই ঐগুলো এমনিতেই তার মেনে চলার কথা। তবুও ঐভাবে বলার অর্থ হচ্ছে, বিষয়গুলো আবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া, বিষয়গুলোর প্রতি উদাসীনতা নেই -এটা ভালো করে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া।

আমি জানি, উপরের বিষয় কোনো দ্বীনদার পাত্র-পাত্রীর পড়ার পর তাদের মনে কী ঘুরপাক খাচ্ছে। বুঝতে পারছি, ওগুলো পড়ে আপনার যতটা ভালো লেগেছে এর বাস্তবায়ন নিয়ে ঠিক ততটাই চিন্তা করছেন- তাই না! এর কারণ একটাই। কী সেটা?

আমার পরিবার কি এগুলো বাস্তবায়ন করতে আমাকে আদৌ সাপোর্ট দিবে নাকি নানান কষ্টদায়ক কথা শুনাবে। হয়ত এই দুঃখে বিশেষ করে অনেক দ্বীনদার বোন যারা আসলেই দ্বীনদার পাত্র বিয়ে করতে চান, যারা আসলেই জান্নাতের পথে আছে এমন পথিকের জীবনসঙ্গী হতে চান, যারা আসলেই দ্বীন মানে না, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক নাই এমন কাউকে সঙ্গী হিসেবে পেতে চান না হোক সে কোটিপতি তারা হয়ত এ বিষয় পড়ে অশ্রুসিক্ত হতে পারেন, মনটা ভারী হয়ে যেতে পারে তাদের।

আমি বুঝতে পারছি আপনাদের কষ্টের বিষয়, উপলব্ধি করতে পারছি মনের অদৃশ্য যন্ত্রণা। কিন্তু তবুও পরিবারের চাপে বিয়ের বিষয়কে মোটেও হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। যে যা-ই বলুক তাতে মোটেও কান দেওয়া যাবে না। আপনার কাজ আপনাকেই বুঝেশুনে করতে হবে।কারণ দিনশেষে জীবনটা কিন্তু আপনার। ভুল মানুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আপনি কষ্টে পড়লে কেউ কিন্তু আপনার সে কষ্টের ভাগ নিতে আসবে না। অতএব আজ যারা চটংচটাং কথা বলছে, দ্বীনদার জীবনসঙ্গী নির্বাচনে আপনাকে বিভিন্নভাবে অসহযোগিতা করছে তাদের কোনো নেতিবাচক মন্তব্য আমলে নেওয়া সমীচীন হবে না।

বিয়ের মাধ্যমে আপনি শুধু আপনার স্বামী বা স্ত্রীই নির্বাচন করছেন না। আপনি বরং আপনার অনাগত সন্তানের বাবা মা নিবার্চন করছেন।এখন সেই বাবা বা মা যদি বেদ্বীন হয় তবে তার সন্তানের দ্বীন পালন হুমকির মধ্যে পড়বে- বলার অপেক্ষা রাখে না। যার প্রভাব পরবর্তী প্রজন্মতেও পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। এজন্য এখানে ভুল করলে নিজে থেকে শুরু করে আপনার সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মদেরকেও বিরাট মাশুল দিতে হতে পারে। তাই নিজের লাইফ পার্টনার নির্বাচনে খুবই সাবধান থাকবেন। এখানে কারো চাপে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।

[২]

আমি জানি সিভির ঐ অংশের ইনক্লুশনে আপনাকে অনেক কথা হজম করতে হতে পারে। সমাজ তো দূরের কথা পরিবারের অনেকেই বলাবলি শুরু করবে, এমন দ্বীনদার জগতে পাওয়া যাবে নাকি। এরকম খুঁজলে তোমাকে সারাজীবন কুমারী হয়ে থাকতে হবে ইত্যাদি আরও কতকি। মোটকথা, আপনাকে তো সাপোর্ট দিবেই না উল্টো তাদের মুখ থেকে এমন এমন নেতিবাচক কথা শুনবেন যে কথাগুলো আপনাকে প্রচন্ডভাবে ডিমোটিবেট করবে, আপনাকে রীতিমতো হতাশ করে দিবে। কিন্তু আপনি মোটেও তাদের এমন তিঁতে কথায় নিরুৎসাহিত হবেন না, তাদের অসহযোগিতার মনোভাবে দীর্ঘশ্বাঃস ছেড়ে বলবেন না, আহ, তাই বুঝি হবে, আমি বুঝি সত্যিই পাবো না।

হতে পারে তারা নামাজী, হতে পারে তাহাজ্জুদগুজারী কিন্তু তবুও তাদের দ্বীনের সঠিক বুঝ না থাকায়, দ্বীন সম্পর্কে যে জ্ঞান থাকলে তারা এ ধরনের কথা বলতে পারত না সে জ্ঞান না থাকার কারণে তারা এমন কথা বলে ফেলছে। এজন্য আপনি মোটেও মন খারাপ করবেন না। তাদের কথা আমলে নিয়ে শুধু শুধু নিজেকে দুশ্চিন্তা ও কষ্টের মধ্যে রাখবেন না। যে আল্লাহ আপনাকে সৃষ্টি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেই আল্লাহই আপনার জীবনের যে সিদ্ধান্ত নিবেন ভালোর জন্যেই নিবেন, সেই আল্লাহই আপনার সবকিছু সহজ করে দিবেন। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন, তার সাথে নিজের কথাগুলো শেয়ার করুন প্রাণখোলে, তিনিই আপনাকে পথ দেখাবেন।

কাজেই ওদের কথাগুলো কষ্টদায়ক হলেও এতে কিচ্ছু আসে যায় না। কারণ আল্লাহ তা’য়ালাই বলেছেন, যদি আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করেন তাহলে কেউ-ই তোমাদেরকে হারাতে পারবে না; আর তিনি যদি তোমাদেরকে পরিত্যাগ করেন তাহলে আর কে আছে যে তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে? অতএব ঈমানদারদের উচিত আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা। [১]

আপনি বিনয়ের সাথে তাদেরকে হাসিমুখে অভিমানের স্বরে বলতে পারেন, যদি ওরকম পাওয়াই না যায় তাতে অসুবিধা নেই। এ জীবনে বিয়েই না করলাম। নায়ক নায়িকা টাইপের কিংবা বেদ্বীন সঙ্গী বিয়ে করার থেকে বিয়ে না করাই অনেক ভালো।কথাটি কারো কারো নিকট হজম করতে কষ্ট হতে পারে। কিন্তু এটা কেন বলেছি, জানেন? সমাজের বাস্তবতা থেকে।

সমাজের বাস্তবতা বলছে, যারা দ্বীনের ওপর চলে না, যারা আল্লাহ থেকে দূরে তারা হচ্ছে সকল অশান্তির উৎস। তাদের কাছ থেকে যেন আশপাশের পরিবেশ অশান্তিতে রূপ নেয়। এমন মানুষেরা কী পরিমাণ কলহপ্রিয় হয় তা ভাবতেই পারবেন না। পরকীয়ায় জড়িয়ে নিজের সঙ্গীর হক নষ্ট করতে এদের একটুও বুক কাঁপে না, আল্লাহর ভয় তাদেরকে একটুও ভাবায় না। যারা এমন পরিস্থিতিতে পড়েছে তারাই কেবল হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারে যে, এমন সঙ্গীর সাথে সংসার করা কত যন্ত্রণার।

বেদ্বীন কারো আর্থিক সচ্ছলতা দেখে পরিবার আপনাকে অনেক সময় বুঝানোর চেষ্টা করবে যে, দেখো, বিয়ের পর তুমি তাকে বুঝিয়ে দ্বীনের পথে নিয়ে আসবে। বিয়ের পর সে এমনিই ঠিক হয়ে যাবে ইত্যাদি আরও কতকি বোঝাবে! দ্বীনের গুরুত্ব বহন না করা তাদের এমন কথায় আপনার অবস্থান শক্ত হওয়া চাই। নো কম্প্রোমাইজ। দ্বীনের বিষয়ে কোনো ছাড়াছাড়ি করা যাবে না। তাদেরকে বিনয়ের সাথে এটা বলুন যে, একজন দ্বীনদারের যদি কিছুটা আর্থিক অসচ্ছলতা থাকে তবে বিয়ের পর আল্লাহ তাকে সচ্ছল করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু বেদ্বীন কাউকে বিয়ে করলে আল্লাহ তাকে বিয়ের পর দ্বীনদার করে দিবেন এমনটা কোথাও বলেন নি। তাই আমি বেদ্বীন কাউকে বিয়ে করার মতো রিস্ক নিতে পারব না। দয়া করে আমাকে এমন বিষয়ে জোরাজোরি করবেন না, মাফ চাই।

[৩]

অনেক সময় অনেক বোনেরা আর্তনাদ করে বলেন যে, স্বামীটা আমার একজন আলেম কিন্তু দ্বীনদার নয়। ভাইয়েরাও একইভাবে মনে কষ্ট নিয়ে বলেন, স্ত্রীটা আমার একজন আলেমা কিন্তু দ্বীনদার নয়। এগুলো অনেক দুঃজনক বিষয়। কারণ তাদের কাছে দ্বীনি শিক্ষা থাকার পরও তারা দ্বীনদার হতে পারে নি, দ্বীনকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে নি।

আলেম বা আলেমা হলেই দ্বীনদার হয় না। দুটো ভিন্ন জিনিস। দ্বীনদার হওয়ার মাপকাটি আলেম বা আলেমা হওয়া নয়। এটা আমাদেরকে বুঝতে হবে। বিশেষ করে জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই ভুলটা আমরা অনেকেই করে থাকি। আর যার মাশুল জীবনের পরতে পরতে দিতে হয়। দেখুন, দ্বীন নিয়ে পড়াশোনা করলে আলেম বা আলেমা হওয়া যায়। কিন্তু দ্বীনদার হতে হলে নেক আমলদার হতে হয়, নেক আমলের ক্ষুধা থাকতে হয়, সবসময় আমলের চর্চার মধ্যে থাকতে হয়। আর এই জায়গায় এসে অনেক আলেম আলেমারা ধরা খেয়ে যান। দেখা যায় সে একজন আলেম ঠিকই কিন্তু আমলের চর্চা না থাকায়, আমলের প্রতি উদাসীন থাকায় সে দ্বীনদার নয়।

যাইহোক, সিভিতে যেসব গুনাবলীর কথা বলা হয়েছে একজন প্রকৃত দ্বীনদার ছাড়া আর কারো কাছে ঐগুলো থাকবে না। যার মধ্যে ঐ গুণগুলো থাকবে সে দ্বীনদারতায় এগিয়ে -বলাই বাহুল্য। তবে তার আচার ব্যবহার কেমন সেটা দেখতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় সে দ্বীনদার ঠিক আছে কিন্তু তার আচরণ রুক্ষ স্বভাবের হওয়ায়, আচরণ ঠিক না হওয়ায় তথা বদমেজাজী হওয়ায় তার সে দ্বীনদারিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়।

[৪]

ঐসব গুনাবলী পেলেই কি আপনি তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যাবেন। নাহ, আমি মোটেও তেমনটা বলছি না। ঐসব গুনাবলী থাকলে আপনি কেবল প্রস্তাবটা হাতে নিবেন। আর না থাকলে সিভির শুরুতে তো ‘না’ বলে দেওয়াই আছে।যাইহোক, ঐসব গুনাবলী পেলে আপনি অবশ্যই ভালো কোনো মাধ্যমে তার সম্পর্কে খোঁজখবর নিবেন। একজনের মাধ্যমে খবর না নিয়ে কয়েকজন ভিন্ন ভিন্ন মানুষ দিয়ে খবর নিলে ভালো হবে। কারণ একজনের মাধ্যমে খোঁজ নিলে সে হয়ত শত্রুতা কিংবা হিংসার বশবর্তী হয়ে ভুল তথ্য দিতে পারে যাতে বিয়েটা না হয়। এজন্য কয়েকজনের মাধ্যমে খোঁজ নিলে ভালো হবে। আর সরাসরি নিজে নিতে পারলে তো আরও ভালো।

পাত্র বা পাত্রীর আচার আচরণ কেমন তা জানার চেষ্টা করবেন। সে কি আদৌ ওগুলো সঠিকভাবে মেনে চলে কিনা তা ভালো করে খোঁজ নিবেন। সে যে মাসজিদে বেশীরভাগ সময় নামাজ পড়ে সে মাসজিদের ইমাম সাহেবের কাছ থেকে খোঁজ নিবেন। জেনে নিবেন সে ফজরের জামাতে নিয়মিত কিনা। যে ফজরের জামাতে নিয়মিত সে অবশ্যই বাকি জামাতগুলোতে নিয়মিত হবেই।
এছাড়া, সে যাদের সাথে চলে তারা কেমন সেটাও দেখা যেতে পারে। তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে,তার বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে তার খোঁজ নেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে পাত্রীর ক্ষেত্রে পাত্রীর মায়ের আচার ব্যবহার জেনে নেওয়া যেতে পারে। কারণ মেয়ের ওপর মায়ের ব্যবহারের বড়ো একটা প্রভাব থাকে। পাত্রের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার দেখা যেতে পারে।

যথাসাধ্য ভালো মানুষের মাধ্যমে পাত্র-পাত্রী খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা তথা ইস্তেখারা অব্যহত রাখবেন। এটা করা খুবই জরুরি। ইস্তেখারা নিয়ে আমার আলাদা একটি আর্টিকেলই আছে যা পড়লে আশা করি আপনার পুরো কনসেপ্ট ক্লিয়ার হয়ে যাবে, ইং শা আল্লাহ!

লিখেছেন

পরকালীন তথা স্থায়ী জীবনের লক্ষ্যে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি। নিজে হেদায়েতের ওপর অটল থাকার পাশাপাশি অন্যেদেরকেও হেদায়েতের দিকে আহবান করা তথা পথ হারাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনাই আমার লেখালেখির মূল উদ্দেশ্য।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture