Q/AAbdullahil Hadi

বাড়িতে তারাবিহ এর সালাত আদায়ের পদ্ধতি ও বিধিবিধান

করোনার কারণে লকডাউনের কারণে মসজিদসালাত আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে বাড়িতে তারাবিহ এর সালাত কীভাবে আদায় করতে হয়?
আমাদের মধ্যে কোন হাফেজ নাই। তাহলে কীভাবে সালাত আদায় করব?

রমজান মাসে কিয়ামুল লায়ল (রাতের নফল সালাত) বা তারাবিহ এর সালাত আদায় করা বিরাট মর্যাদাপূর্ণ আমল এবং গুনাহ মোচনের মাধ্যম। আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় রমজান মাসে কিয়ামুল লাইল (বা তারাবিহ এর সালাত) আদায় করবে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মোচন করে দেওয়া হবে।”
(বুখারী ও মুসলিম)

তাই রমজানের মহিমান্বিত মাসে আমাদের কর্তব্য, তারাবিহ এর সালাত আদায়ের প্রতি পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেওয়া। পুরুষদের জন্য সবচেয়ে উত্তম হল, মসজিদে জামাআতের সাথে তা আদায় করা। কিন্তু করোনা মহামারি, লক ডাউন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিশেষ কোনও কারণে মসজিদে সালাত আদায় করা সম্ভব না হলে বাড়িতে তারাবিহ সালাত আদায় করা জায়েজ।

নিম্নে বাড়িতে তারাবিহ এর সালাত আদায়ের পদ্ধতি সংক্রান্ত কতিপয় বিধিবিধান পেশ করা হল:

১. রোগ-ব্যাধির প্রাদূর্ভাব, ভয়ভীতি, ঝড়-বৃষ্টি ইত্যাদি শরিয়ত সম্মত বিশেষ পরিস্থিতিতে মসজিদে যাওয়া সম্ভব না হলে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, জুমা, সালাতুত তারাবিহ ইত্যাদি নিজ বাড়ি/বাসস্থানে আদায় করতে হবে।

২. এ ক্ষেত্রে পরিবারের লোকজন বা সঙ্গী-সাথীদেরকে নিয়ে জামাআতে সালাত আদায় করা ভালো।

৩. কেউ না থাকলে একাকী আদায় করা যাবে।

৪. পরিবারের লোকজন অথবা একাধিক ব্যক্তি জামাআতে সালাত আদায় করলে তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সবচেয়ে ভালো কুরআন তিলাওয়াত করতে জানে এবং সালাতের বিধিবিধান সম্পর্কে জ্ঞান রাখে সে ইমাম হয়ে সালাত পড়াবে।

৫. দু জন পুরুষ থাকলে একজন ইমাম হবে এবং অন্যজন ডান পাশে সমান্তরালভাবে দণ্ডায়মান হবে। (চার আঙ্গুল বা আধাহাত আগে-পিছে নয়। এটি সুন্নাহ পরিপন্থী)

৬. তিন জন পুরুষ থাকলে একজন ইমাম হয়ে সামনে যাবে আর বাকি দু জন তার পেছনের কাতারে দাঁড়াবে।

৭. সাথে এক বা একাধিক মহিলা থাকলে সর্বাবস্থায় সে/তারা পেছনের কাতারে দাঁড়াবে। গাইরে মাহরাম মহিলা থাকলে পর্দার অন্তরালে থেকে জামাআতে অংশ গ্রহণ করা ভালো। আওয়াজ শোনা গেলে পাশাপাশি কক্ষের এক কক্ষে পুরুষ এবং অন্য কক্ষে মহিলারা দাঁড়ালেও সমস্যা নেই।

৮. মহিলার জন্য পুরুষের ইমামতি করা বা পুরুষের পাশে দাঁড়িয়ে জামাআতে সালাত পড়া জায়েজ নয়।

৯. কোন পুরুষ না থাকলে মহিলারা মহিলাদের ইমামতি করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে যে ইমাম হবে সে পুরুষদের মত সামনে যাবে না বরং প্রথম কাতারের মধ্যখানে অবস্থান করবে এবং সালাতে কিরাআত পাঠ করার সময় এতটা গলার কণ্ঠ উুঁচু করবে না যে, কোন পরপুরুষ তার গলার কণ্ঠ শুনতে পায়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture