Q/AAbdullahil Hadi

আল্লাহর রহমত লাভের উপায়সমূহ

আল্লাহর রহমত ছাড়া আমাদের জীবনের এক মুহূর্তও চলা সম্ভব নয়। প্রতিটি সেকেন্ডে, প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসে আমরা আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের মুখাপেক্ষী। আর পরওয়ারদিগার, দয়াময় আল্লাহ আমাদের এমন কিছু উপায় শিখিয়েছেন, যেগুলোর মাধ্যমে আমাদের জীবন তাঁর দয়ায় সজীব ও সিক্ত হবে। দূর হবে জীবনের সকল কষ্ট, ক্লান্তি, দুঃখ-দুর্দশা, হতাশা ও অস্থিরতা।

আল্লাহর রহমত থাকলে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা তাঁর সাহায্য লাভ করব, আর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সৌভাগ্য ও সাফল্য আমাদের পদ চুম্বন করবে ইনশাআল্লাহ।

নিম্নে কুরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকে আল্লাহর রহমত লাভের ১৬টি উপায় সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো: وبالله التوفيق

ইবাদত-বন্দেগিতে ইহসান পর্যায়ে উপনীত হওয়া:

ইহসান হলো, আত্মার পরিশুদ্ধতার এমন এক স্তর, যেখানে বান্দা আল্লাহকে দেখছেন অথবা আল্লাহ তাকে দেখছেন— এই অনুভূতি জাগ্রত থাকা। এই চেতনা নিয়েই সে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি করে এবং জীবন পরিচালনা করে। এটা দ্বীনের সর্বোচ্চ স্তর।

এই ইহসান পর্যায়ে উপনীত হওয়া আল্লাহর দয়া ও অনুকম্পায় সিক্ত হওয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ
“নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সৎকর্ম শীলদের কাছাকাছি।” [সূরা আরাফ: ৫৬]

ইমাম ইবনে কাসির রাহ. বলেন,

إن رحمته مرصدة للمحسنين ، الذين يتبعون أوامره ويتركون زواجره ، كما قال تعالى : ( ورحمتي وسعت كل شيء فسأكتبها للذين يتقون ويؤتون الزكاة والذين هم بآياتنا يؤمنون الذين يتبعون الرسول النبي الأمي
“নিশ্চয়ই তাঁর রহমত সৎকর্ম শীলদের জন্য নির্ধারিত, যারা তাঁর আদেশ অনুসরণ করে এবং নিষিদ্ধ বিষয়গুলো পরিত্যাগ করে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ ۚ فَسَأَكْتُبُهَا لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَالَّذِينَ هُم بِآيَاتِنَا يُؤْمِنُونَ الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ الرَّسُولَ النَّبِيَّ الْأُمِّيَّ
"আমার রহমত সবকিছুকে পরিবেষ্টন করেছে। অতএব, আমি তা লিখে রাখব তাদের জন্য, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, জাকাত প্রদান করে এবং যারা আমাদের আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে। যারা অনুসরণ করে রসুল, উম্মি (নিরক্ষর) নবিকে।" [সূরা আরাফ: ১৫৬-১৫৭]

আল্লাহর নবির উপর সালাত (দরুদ) পাঠ করা:

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দরুদ পাঠ করা আল্লাহর রহমত লাভের অন্যতম মাধ্যম।
আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ ۚ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
"নিশ্চয় আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবির উপর সালাত পাঠ করেন। হে মুমিনগণ, তোমরাও তাঁর উপর সালাত (দরুদ) পাঠ করো এবং যথাযথভাবে সালাম পেশ করো।"
[সূরা আহযাব, ৩৩:৫৬]

আল্লাহর নিকট ইস্তগিফার বা ক্ষমা প্রার্থনা:

আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা আল্লাহর রহমতে জীবনকে সৌভাগ্য মণ্ডিত করার অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

لَوْلا تَسْتَغْفِرُونَ اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
“তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছ না কেন যাতে তোমরা দয়া প্রাপ্ত হবে?।”
[সূরা নামল: ৬৪]

দুআ করা:

আল্লাহর দয়া, অনুকম্পা লাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায় হলো তাঁর নিকট এ জন্য দুআ ও আরাধনা করা। তাঁর নিকট দুআ করলে আশা করা যায় তিনি আমাদের দুআ কবুল করবেন। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ
"আর তোমাদের রব বলেছেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।"
[সূরা গাফির :৬০]

অতএব আল্লাহর রহমত প্রাপ্তির জন্য আমাদের কর্তব্য আল্লাহর নিকট অধিক পরিমাণে দুআ করা। আমরা কুরআন-হাদিসের দুআর পাশাপাশি নিজের ভাষায় দুআ করতে পারি।

কুরআন ও হাদিসে আল্লাহর রহমত প্রার্থনার জন্য অনেক দুআ রয়েছে। যেমন:
কুরআনের একটি দুআ:

رَّبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
"রব্বিগ্‌ফির্‌ ওয়ারহাম্‌ ওয়া আন্তা খাইরুর রহিমীন।"
"হে আমার রব! ক্ষমা করুন এবং দয়া করুন, আর আপনি দয়াশীলদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।" [সূরা মুমিনূন: ১১৮]

এর ব্যাখ্যায় আল্লামা আব্দুর রাহমান আস সাদি রাহ. বলেন, মহান আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি এমন দয়ালু, যেমন একটি মা তার শিশুর প্রতি হয়—বরং বান্দা নিজের ওপর যতটা দয়ালু, আল্লাহ তার চেয়েও বেশি দয়ালু।” [তাফসিরে বিন সাদি}

আরেকটি দুআ:

رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ: রব্বানা আমান্না ফাগ্‌ফির্‌ লানা ওয়ারহাম্না ওয়া আন্তা খাইরুর রহিমীন।
অর্থ: "হে আমাদের রব! আমরা ইমান এনেছি। অতএব আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন, আর আপনি দয়াশীলদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।" [সূরা মুমিনূন: ১১৮]

আরেকটি দুআ-যা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণত এক সেজদা থেকে উঠে আরেক সেজদায় গমনের পূর্বে পাঠ করতেন। তবে সাধারণ যে কোনও সময় তা পাঠ করা যেতে পারে। তা হলো:

رَبِّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِي وَعَافِنِي وَارْزُقْنِي
উচ্চারণ: "রব্বিগ্‌ফির্‌ লী, ওয়ারহামনী, ওয়া’হ্‌দিনী, ওয়া’আফিনী, ওয়ারযুকনী।"
অর্থ: "হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করুন, দয়া করুন, সঠিক পথ দেখান, সুস্থতা দিন এবং রিজিক দান করুন।" এ ছাড়াও আরও অনেক দুআ আছে।

দুআর ক্ষেত্রে দুআ কবুলের অধিক আশা ব্যঞ্জক সময় ও স্থানগুলোর প্রতি অধিক মনোযোগী হওয়া উচিৎ। যেমন: ভোর রাত, রোজা অবস্থায় ইফতারের পূর্বে, সফর অবস্থায়, জুমার দিন আসর সালাতের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত, সালাতের সেজদা অবস্থায়, শেষ তাশাহুদে সালাম ফেরানোর পূর্বে ইত্যাদি।

দান-সদকা করা:

সদকা আল্লাহর রহমত লাভ ও তার অসন্তোষ থেকে বাঁচার অন্যতম উপায়।
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

صَدَقَةُ السِّرِّ تُطْفِئُ غَضَبَ الرَّبِّ
“গোপনে সদকা করা আল্লাহর ক্রোধকে নিভিয়ে দেয়।” [সুনান তিরমিজি, হাদিস নং ৬৬৪, সহিহ]

কুরআন অনুযায়ী আমল করা

কুরআনের অনুসরণ বা কুরআন অনুযায়ী আমল করা এবং তাকওয়া অবলম্বন (আল্লাহকে ভয়) করা:
আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَهَٰذَا كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ فَاتَّبِعُوهُ وَاتَّقُوا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
"এটি এক মুবারক (বরকতময়) কিতাব, যা আমি অবতীর্ণ করেছি। অতএব তোমরা এর অনুসরণ করো এবং তাকওয়া অবলম্বন করো (আল্লাহকে ভয় করো), যাতে তোমরা রহমত প্রাপ্ত হও।" [সূরা আনআম, ৬:১৫৫]

কুরআন তেলাওয়াতের সময় নীরবতা

আল্লাহর কালাম তিলাওয়াতের সময় নীরবতা অবলম্বন করা এবং মনোযোগ দিয়ে তা শোনা:

আল্লাহ তাআলা বলেন,

‏ وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا لَهُ وَأَنصِتُوا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
“আর যখন কুরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন কান লাগিয়ে (মনোযোগ সহকারে) শ্রবণ করো এবং নীরবতা অবলম্বন করো। যাতে তোমরা রহমত প্রাপ্ত হও।”
[সূরা আরাফ: ২০৪]

বিপদ-মুসিবতে ধৈর্য ধারণ করা:

ধৈর্য ধারণকারীদের জন্য আল্লাহর রহমত রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُمْ مُصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ أُولَٰئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ ۖ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُونَ
"আর ধৈর্য ধারণকারীদের সুসংবাদ দাও, যাদের উপর কোনও বিপদ আপতিত হলে বলে, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রজিউন ('নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকেই ফিরে যাব।) তাদের উপরই তাদের রবের পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত ও অনুগ্রহ বর্ষিত হয় এবং তারাই সুপথ প্রাপ্ত।" [সূরা বাকারা: ১৫৫-১৫৭]

আল্লাহর জিকির করা:

আল্লাহর জিকির করা তাঁর রহমত লাভের অন্যতম উপায়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُمْ بِذِكْرِ اللَّهِ ۗ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
"যারা ইমান আনে এবং আল্লাহর জিকিরে যাদের হৃদয় প্রশান্ত হয়। জেনে রাখো, আল্লাহর জিকিরেই হৃদয় প্রশান্ত হয়।" [সূরা রা’দ :২৮]

সর্বদা মুখে সুবহা-নাল্লা-হ, আল হামুলিল্লা-হ, আল্ল-হু আকবার, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ, আস্তাগফিরুল্লা-হ, লা-হাওলা ওয়ালা ক্বুওয়াতা ইল্লাবিল্লা-হ ইত্যাদি জিকিরগুলো পাঠ করা আল্লাহর রহমত লাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কারণ।

অনুরূপভাবে আল্লাহর দয়ায় জীবন সিক্ত করতে সকাল-সন্ধ্যার জিকির, সালাতের পরের জিকির, ঘুমের পূর্বের জিকির সহ দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সকল দুআ আছে সেগুলো নিয়মিত যত্নসহকারে পাঠ করা কর্তব্য।

সালাত, জাকাত ইত্যাদি ফরজ ইবাদতসমূহ আদায় করা:

ফরজ ইবাদতসমূহ যথাযথভাবে আদায় করা আল্লাহর রহমত লাভের অন্যতম শর্ত।
আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
"তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠা করো, জাকাত দাও এবং রসুলের আনুগত্য করো, যাতে তোমরা রহমত প্রাপ্ত হও।" [সূরা নুর :৫৬]

আল্লাহ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করা:

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
“আর তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রসুলের, যাতে তোমরা রহমত প্রাপ্ত হও।” [আলে ইমরান: ১৩২]

পিতামাতার সাথে সদাচরণ করা:

পিতামাতার সাথে সদাচরণ করা আল্লাহর রহমত লাভের অন্যতম উপায়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا
"আর তোমার রব নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না এবং পিতামাতার সাথে ইহসান (দয়া সুলভ সদাচরণ) করো।" [সূরা ইসরা :২৩]

পিতামাতার প্রতি ইহসান (দয়া) সুলভ আচরণ করলে আল্লাহর ইহসান (দয়া) দ্বারা আমাদের নিজেদের জীবন সিক্ত হবে। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন,

هَلْ جَزَاءُ الْإِحْسَانِ إِلَّا الْإِحْسَانُ
“ইহসানের প্রতিদান ইহসান ব্যতীত কি হতে পারে? ” [সূরা আর রহমান: ৬০]

মানুষ, পশু-পাখির উপর দয়া করা

তা ছাড়াও মানুষ, পশু-পাখি ইত্যাদির উপর দয়া করাও আল্লাহর দয়া লাভের একটি উপায়।
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

الرَّاحِمُونَ يَرْحَمُهُمُ الرَّحْمَنُ ارْحَمُوا مَنْ فِي الْأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ
“আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি অনুগ্রহ ও অনুকম্পা প্রদর্শনকারীদের প্রতি আল্লাহ রাহমানুর রাহীম অনুগ্রহ ও দয়া বর্ষণ করেন।

সুতরাং তোমরা জমিনের অধিবাসীদের প্রতি দয়া করো, তাহলে আকাশের মালিক তোমাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করবেন।” [আবু দাউদ ৪৯৪১, তিরমিজি ২০০৬, সহীহুল জামে ৩৫২২, সিলসিলাহ সহীহাহ ৯২৫ ইত্যাদি]

মানুষের মাঝে বিবাদ মিটিয়ে দেওয়া :

যারা বিবাদে লিপ্ত ব্যক্তিদের বিবাদ মিটিয়ে দেয় আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেন। যেমন আল্লাহ বলেন,

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
“মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই। সুতরাং তোমাদের ভাইদের মধ্যে ইসলাহ করে দাও (বিবাদ মিটিয়ে দাও)। আর আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা রহমত প্রাপ্ত হও।” [সুরা হুজুরাত: ১০]

আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ ও হিজরত করা:

যারা ইমানের সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হিজরত এবং জিহাদ করে তারা আল্লাহর রহমত প্রাপ্তির আশা করতে পারে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ هَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَٰئِكَ يَرْجُونَ رَحْمَتَ اللَّهِ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
“যারা ইমান আনে এবং যারা আল্লাহর পথে হিজরত করে এবং জিহাদ করে তারাই আল্লাহর অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে। আল্লাহ ক্ষমা পরায়ণ, পরম দয়ালু।”
[সুরা বাকারা: ২১৮]

আল্লাহর বিশেষ ইচ্ছা:

সর্বোপরি, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাঁর দয়া দ্বারা অনুগৃহীত করেন:

وَ اللّٰهُ یَخۡتَصُّ بِرَحۡمَتِهٖ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ اللّٰهُ ذُو الۡفَضۡلِ الۡعَظِیۡمِ
“আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাঁর করুণার জন্য নির্দিষ্ট করে নেন এবং আল্লাহ মহা করুণাময়।” [বাকারা ১০৫]

তাই আমাদের কর্তব্য, মহান রাজাধীরাজ আল্লাহর দাসত্বকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করে তার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা্ করা। তাহলে আশা করা যায়, তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে আমাদের উপর রহমতের অবিরাম বারিধারা বর্ষণ করবেন।

প্রতিটি মুমিনের উচিত এই আমলগুলো নিয়মিতভাবে পালন করা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাঁর রহমত ও দয়া লাভের তাওফিক দান করুন।
আমিন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button