কুরবানি করা ওয়াজিব না সুন্নত
কুরবানি করার বিধান: কুরবানি করা ওয়াজিব না সুন্নত এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের মাঝে বিতর্ক রয়েছে।
যেমন:
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর নিকট ধনী শ্রেণীর উপর কুরবানি দেয়া ওয়াজিব। তার নিকট ধনী বলতে তাকে বুঝায়, যে যাকাতের নেসাবের মালিক।
জুমহুর তথা অধিকাংশ বিদ্বানের মতে, কুরবানি দেয়া সুন্নত বা মুস্তাহাব। আবু বকর (রা:), উমর (রা:), আবু সাঈদ (রা:), আবু মাসউদ বাদারী (রা:), বিলাল (রা:) প্রমুখ সাহাবিগণ এই মতই প্রকাশ করতেন। [তাফসীর কুরতুব]
দলিল:
عن أم سلمة أن النبي قال: إذا دخلت العشر وأراد أحدكم أن يضحي فلا يمس من شعره وبشره شيئا
উম্মে সালামা (রা:) হতে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যিলহজ্জের (প্রথম) দশক প্রবেশ করলে তোমাদের মধ্যে যে কুরবানি দিতে ইচ্ছুক সে যেন তার চুল এবং (শরীরের) চর্ম হতে কিছুই স্পর্শ না করে (অর্থাৎ না কাটে)”।
[সহিহ মুসলিম]
ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেন: উক্ত হাদিসের মধ্যে এ ব্যাপারে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, কুরবানি দেয়া ওয়াজিব নয়। কারণ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “তোমাদের কেউ যদি কুরবানি করতে ইচ্ছা করে তাহলে সে যেন ……. না করে।”
যদি কুরবানি করা ওয়াজিব হত তাহলে এভাবে বলা হত: তাহলে সে যেন কুরবানি না দেয়া পর্যন্ত নিজের চুল প্রভৃতি স্পর্শ না করে।”
(বায়হাকী ফিস সুনান (৭/২৬৩) ফিকহুল উযহিয়াহ্ ১২-১৩)
-ইমাম তিরমিযি বলেন: (৪/৯২)
العمل على هذا من أهل العلم أن الأضحية ليست واجبة ولكنها سنة من سنن النبي صلى الله عليه وسلم يستحب أن يعمل بها وهو قول سفيان الثوري وابن المبارك
“এর উপরই আহলে ইলমদের আমল রয়েছে যে, কুরবানি দেয়া ওয়াজিব নয়। তবে উহা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অন্যতম সুন্নত যার উপর আমল করা মুস্তাহাব। ইহা সুফিয়ান সাওরী ও আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক প্রমুখদের কথা অভিমত।”
[সুনান তিরমিযি, ৪/৯২]
সালাফে সালেহীনের অধিকাংশের এটাই অভিমত যে কুরবানি দেয়া ওয়াজিব নয় বরং সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ।
উৎস: কুরবানির মাসায়েল
লেখক: শাইখ আখতারুল আমান বিন আব্দুস সালাম
সম্পাদক: শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল