ফাতিহায়ে ইয়াজদাহম কী

ফাতিহায়ে ইয়াজদাহম কী?
এটি পালন করা কি শরিয়ত সম্মত?
ফাতিহা একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ হল মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তির জন্য কুরআনখানি, শবিনাখানি, দোয়া মাহফিল, মিলাদ মাহফিল অথবা ইসালে সওয়াব বা সওয়াব রেসানির মতো কার্যক্রম। ইয়াজদাহম একটি ফারসি শব্দ, যার অর্থ হল, এগারো (১১)।
আর ফাতিহায়ে ইয়াজদাহম বলতে বোঝানো হয়, ১১ রবিউস সানি তারিখে সংঘটিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠান, যা আব্দুল কাদের জিলানি-এর মৃত্যু বা ওফাত দিবস উপলক্ষে পালন করা হয়।
এটাকে ‘গেয়ারভি শরিফ‘ও বলা হয়ে থাকে। এটা পালনের জন্য বিশেষ কিছু পদ্ধতিও বলা হয়। যেমন:
- আল্লাহ ১১ বার
- হু ১১ বার
- ইয়া শায়খ সুলতান সৈয়দ আবদুল কাদের জিলানি শাইআঁনলিল্লাহ্ ১১ বার
- ক্বাসীদায়ে গাউসিয়া শরিফ এক বার
- শাজরা শরিফ একবার ইত্যাদি।
এছাড়াও বিশেষ কিছু সূরা, দুআ, দুরুদ ইত্যাদি
[সূত্র: ইসলামি বিশ্বকোষ]
বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে এই দিনটি বিশেষ জাঁকজমকের সাথে পালন করা হয়ে থাকে।
আরব বিশ্বে একটি পালনের কোন তথ্য পাওয়া যায় না।
এটি কি শরিয়ত সম্মত?
সঠিক আকিদা অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তির মৃত্যু দিবস পালন করা শরিয়ত সম্মত নয়। এ ধরনের কার্যক্রমকে বিদআত বা নতুন উদ্ভাবিত প্রথা হিসেবে গণ্য করা হয়, যা দ্বীনের মূল নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
সুতরাং আব্দুল কাদের জিলানি রাহ. বা অন্য কোনও ব্যক্তির মৃত্যু দিবস বা ওরস পালন করা বিদআতের অন্তর্ভুক্ত। কেননা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা সাহাবিদের থেকে কারও মৃত্যু দিবস পালনের পক্ষে কোনও দলিল পাওয়া যায় না। আর দলিল বহির্ভূত কোনও ইবাদত করার অর্থই বিদআত।
একইভাবে প্রচলিত নিয়মে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে কুরআনখানি, শবিনা খতম, এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করাকেও বিদআত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
শাইখ আব্দুল কাদের জিলানি চিশতি রাহ. কে ছিলেন?
আব্দুল কাদের জিলানি রাহ. সমসাময়িক হাম্বলি মাজহাবের একজন অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ও উঁচু মাপের ফকিহ বা ইসলামি আইনবিদ ছিলেন। অনেক বিজ্ঞ আলেম তাঁর জ্ঞানের গভীরতা ও উচ্চ মর্যাদার প্রশংসা করেছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. আল গুনিয়াহ (الغنية لطالب طريق الحق)
২. ফাতহুল মুগিস (الفتح الرباني)
৩. ফুতুহুল গায়েব (فتوح الغيب)
জন্ম: ৪৭১ হিজরি, তাবারিস্থানের (বর্তমানে ইরানের মাজানদারান) জিলান অঞ্চলে।
মৃত্যু: ৫৬১ হিজরি, বাগদাদ, ইরাকে।
আমাদের সমাজে সুফি ঘরনার বিদআতিদের মধ্যে তাঁর সম্পর্কে অনেক ভিত্তিহীন কেচ্ছা-কাহিনী প্রচলিত আছে এবং তাঁর প্রশংসায় বাড়াবাড়ি করা হয়-যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
আল্লাহু আলাম।