ক্ষমা

ভুল-ত্রুটি মানুষের জীবনের একটা অংশ বলা যায়। এর সাথে তৈরি হয় রাগ-ক্ষোভ। ধরুন, কেউ আমার হ্যান্ড নোট ভুল বসত হারিয়ে ফেললো তখন আমার কি প্রতিক্রিয়া হয়? কেউ অসচ্ছলতার কারণে টাকা ফেরত দিতে অতিরিক্ত সময় নিয়ে ফেলেছে তখন কি ধরনের ক্রোধের সৃষ্টি হয়?
কখনো দেখা যায় ক্রোধ উগ্রতায় সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে।
কেউ ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। আমরা একটু স্বরণ করে দেখি জীবনে অনেক বড় বড় ভুল-ত্রুটি নিজেও করেছি। কিন্তু কখনই কি আমরা চাই এর কারণে একটা মানুষ আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করুক.?

যদি উত্তর হয়, না চাই না।
তাহলে বলুন, নিজে কেন অন্যের ভুল ক্ষমা করতে পারছি না.?
অন্যের ভুলে ধৈর্যশীল ব্যাক্তি আল্লাহ নিকট হয়ে উঠেন একজন প্রিয় বান্দা।

“যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সম্বরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ এমন সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন”
[সুরা আলে ইমরান: ১৩৪]

পবিত্র মাহে রমাদান শেষের পথে ছুটে চলছে। এই মাসে অন্যান্য মাসের তুলনায় আল্লাহ বেশি খুশি হবেন, যদি আপনি সেই মানুষটিকে ক্ষমা করে দেন, যার সাথে ক্রোধের কারণে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। আর সেই ভুল করা মানুষটি যদি ক্ষমাপ্রার্থী হয় তাহলে তাকে অবশ্যই ক্ষমা করে দেওয়া উত্তম। কেননা ক্ষমা পাওয়ার পরে পূর্বের তুলনায় সে সাধারণত আরো বেশি আন্তরিক হয়। এই ক্ষমাশীল ব্যক্তির জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা।

“… অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে…”
[সুরা শুরা: ৪০]

অনেক সময় আমাদের দাম্ভিকতার কারণে যৌক্তিক কারণ থাকা সত্যেও ক্ষমা করতে চাই না। মনে করা হয় কারো উপরে চড়াও হতে পারাটা নিজের জন্য বীরত্বের পরিচয়। বরং ক্ষমাশীল ব্যক্তিকে মানুষ ভালোবাসে এবং মন থেকে সম্মান করে। কোন ভয় এবং চাটুকারিতার জন্য সম্মান প্রদর্শন করে না। যে মানুষের ভালোবাসা কুড়িয়ে নিতে পারে তাকে আল্লাহ নিজেও ভালোবাসেন।

“সদকা করলে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে, তিনি তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন”
[মুসলিম: ২৫৮৮]

পবিত্র মাহে রমাদান শেষ হওয়ার আগেই যেন সবাইকে ক্ষমা করে দিতে পারি। আমাদের ভালোবাসা যেন হয় মহান আল্লাহর জন্যই। নিজেকে সর্বোচ্চ বিনয়ী হওয়ার প্র্যাকটিস করি এই রমাদানেই।

রামাদান নিয়ে খুটিনাটি [পর্ব-১৫]

পর্ব- “ক্ষমা

Exit mobile version