রিযিক, বরকত, সুখ

রিযিক, বরকত, সুখ এগুলো নিয়ে আমাদের ধারণা ক্লিয়ার করি নিই
১. অনেকেই মাসে এক লক্ষ টাকা উপার্জন করে। এতো উপার্জন করেও সারাক্ষণ টেনশনে থাকে। তার আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি।

আবার কেউ কেউ মাসে বিশ হাজার টাকা উপার্জন করেও সন্তুষ্ট, দুশ্চিন্তা মুক্ত খুব সুন্দর জীবনযাপন করে।

২. দামি খাবার খেলেই পরিতৃপ্ত হবেন এমন না। অনেকেই ফাইভ স্টার হোটেলের খাবার খায়, ভালো রেস্টুরেন্টে খায়। কিন্তু, খাবার খেয়ে তৃপ্ত হতে পারে না। ‘সব আছে, কী যেন নেই’ এমন একটা দুশ্চিন্তা কাজ করে। অথচ কেউ ডাল, ভর্তা দিয়ে খায়, কিন্তু খুব তৃপ্তি নিয়ে খায়।

দামি খাবার খেয়েও অনেকেই সেই স্বাদ পায় না। অথচ মা-স্ত্রীর রান্না খেয়েও অনেকেই তৃপ্ত।

৩. অনেকেই রাত একটায় ঘুমায়, সকাল দশটায় ঘুম থেকে উঠে। তারপরও দেখা যায় আলসেমি হয়, মনে হয় আরেকটু ঘুমালে ভালো হতো। আবার কেউ কেউ এগারোটায় ঘুমায়, তিনটায় উঠে তাহাজ্জুদ পড়ে, আবার এক ঘন্টা ঘুমিয়ে ফজর পড়ে। ফজরের পর মনে হয় আর না ঘুমালেও চলবে।

একজন বেশি ঘুমিয়েও তৃপ্ত না, আরেকজন মোটামুটি ঘুমিয়েও বেশ প্রশান্ত।

৪. বাসায় মেহমান আসলে কেউ কেউ বিরক্ত হয়। যদিও মেহমানদেরকে খাওয়ানোর মতো টাকা আছে, কেনাকাটা করতে পারবে। আবার কেউ দিন আনে দিন খায়, এতোটা স্বচ্ছল না। কিন্তু, মেহনান আসলে খুব খুশি হয়। দুই-একদিন একটু কম খেয়ে মেহমানকে একটু ভালো খাবার খেতে দেয়।

বাহ্যিকভাবে সে গরীব হলেও মনের দিক থেকে সেই ধনীর চেয়ে উত্তম।

৫. অনেকের টাকা থাকা সত্ত্বেও তার কথা শুনলে মনে হবে ‘তাকে একটু দান করি’। যা আছে সেটা নিয়ে সন্তুষ্ট না। কেউ সাহায্য চাইতে গেলে সাহায্য করে না, ধার চাইতে গেলে ‘আমিই খেতে পারছি না’ বলে।

আবার আরেকজনের তেমন কিছু নেই৷ কিন্তু, সে যদি দেখে কেউ বিপদে পড়েছে, তখন নিজের সবকিছু দিয়ে বিপদগ্রস্থকে সাহায্য করে। দান-সাদকা করে; ১০ টাকা দিয়ে হলেও।

‘সুখে থাকা’ এটাকে স্রেফ ভাগ্য মনে করবেন না। এটা মানসিক বিষয়। সুখে থাকার জন্য অন্যের মতো ঐটা লাগবে এমনটা ভাবার কোনো দরকার নেই৷ যার ঐসব আছে, তাকেও জিজ্ঞেস করলে দেখবেন সে ‘আরেকজনেরটা হলে সুখী হতাম’ এমনটা ভাবে।

আপনার কী আছে সেটা চিন্তা করে সেটার মধ্যেই সুখ অনুভব করুন এবং আল্লাহ আপনাকে যে নিয়ামত দান করেছেন, সেটার শুকরিয়া আদায় করুন।

সুখে থাকার সূত্র খুবই সহজ। আমরাই একে জটিল মনে করি!

প্রত্যেক দিন, প্রত্যেক মাস সমানভাবে যাবে না। কোনো মাসে আপনার ব্যয় অনেক বেশি হতে পারে, কোনো মাসে আপনার উপার্জন অনেক কম হতে পারে। মানসিক সুখের সাথে অর্থকে একমাত্র অনুসঙ্গ বানাবেন না। টাকা-পয়সা মানুষকে সুখ এনে দিতে পারে, টাকা পেলে মানুষ আনন্দিত হয় এটা সত্য। কিন্তু, টাকা ছাড়াও কিভাবে জীবনকে উপভোগ করা যায়, কিভাবে কষ্টের মধ্যেও আল্লাহর নিয়ামত চেনা যায় সেটা খুঁজে বের করতে পারলে দেখবেন সুখ নিয়ে হা-হুতাশ করবেন না।

লিখেছেন

আরিফুল ইসলাম (আরিফ)

পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার কলম তাকে উজ্জীবিত করেছে স্বীয় বিশ্বাসের প্রাণশক্তি থেকে।
অনলাইন এক্টিভিস্ট, ভালোবাসেন সত্য উন্মোচন করতে এবং উন্মোচিত সত্যকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে।

লেখকের অন্যান্য সকল পোষ্ট পেতে ঘুরে আসুন

পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার কলম তাকে উজ্জীবিত করেছে স্বীয় বিশ্বাসের প্রাণশক্তি থেকে।
অনলাইন এক্টিভিস্ট, ভালোবাসেন সত্য উন্মোচন করতে এবং উন্মোচিত সত্যকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে।

Exit mobile version