নারীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রিয় নাম কোনগুলো
আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় নাম (পুরুষ ও নারী) এবং মেয়েদের নাম আমাতুল্লাহ/আমাতুর রাহমান রাখা,
রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “সবচেয়ে উত্তম নাম হচ্ছে যেগুলো ‘আবদ’ নাম (যেমন: আব্দুল্লাহ, আব্দুর রহমান) এবং ‘হামদ’ শব্দযুক্ত নাম (যেমন: মুহাম্মদ, আহমদ)। ” তবে নারীদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রিয় নাম কোনগুলো?
আলহামদুলিল্লাহ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
“إن أحب أسمائكم إلى الله عبد الله وعبد الرحمن”
“তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় নাম হলো আবদুল্লাহ ও আব্দুর রহমান।” [সহিহ মুসলিম]
প্রশ্নে বর্ণিত “ما عبد وحمد” (যাতে ‘আবদ’ ও ‘হামদ’ আছে) — এ রকম কোনো হাদিস সহিহ সূত্রে প্রমাণিত নয়।
নারীদের কোন নামটি আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়?
নারীদের কোনো নাম বিশেষভাবে আল্লাহর কাছে প্রিয়—এমন স্পষ্ট কোনো হাদিস পাওয়া যায় না। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কন্যাদের নাম যেমন— ফাতিমা, জয়নব, উম্মে কুলসুম, রুকাইয়া—এগুলো উত্তম নাম।
তাঁর স্ত্রীদের মধ্যেও যেমন:
জয়নব নামটি তিনি নিজে বেছে নিয়েছিলেন এবং কিছু মহিলা সাহাবি যাদের নাম ছিল “বাররাহ (নেককার/পূণ্যবতি-নিজেকে পবিত্র বলা হয় এমন নাম)”, সেগুলো পরিবর্তন করে জয়নব রেখেছিলেন।
যেমন:
জয়নব বিনতে আবু সালামার নাম ছিল বাররাহ। রসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন:
“তোমরা নিজেদেরকে পবিত্র বলে দিও না, আল্লাহ ভালো জানেন কে প্রকৃত নেককার।”
তখন তাঁরা বললেন: তাহলে কী নাম রাখব?
তিনি বললেন: “জয়নব নাম রাখো।” [সহিহ মুসলিম]
জয়নব বিনতে জাহশ ও জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিস—এদের নামও বাররাহ ছিল, সেগুলো বদলে যথাক্রমে জয়নব ও জুওয়াইরিয়া রাখেন।
সারাংশ:
পুরুষদের জন্য: আবদুল্লাহ, আব্দুর রহমান— আল্লাহর প্রিয় নাম।
নারীদের জন্য: যদিও নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি, তবে ফাতিমা, জয়নব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম—এগুলো উত্তম নাম।
‘বাররাহ’ জাতীয় আত্মপ্রশংসামূলক নাম পরিবর্তন করে সহজ ও বিনয়ী নাম রাখাই সুন্নত।
সাধারণভাবে মুসলিম নারীদের নাম হিসেবে কুরআনে উল্লেখিত মরিয়ম, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী, কন্যা, মহিলা সাহাবি ও তাবেয়িদের নামগুলো প্রিয় নাম।
মেয়েদের নাম ‘আমাতুল্লাহ’ রাখা:
প্রশ্ন: একজন মেয়ের নাম “আমাতুল্লাহ” (أمة الله) রাখা কি বৈধ? এবং শুধু “আমাহ” (أمة) বলে ডাকা কি জায়েজ?
উত্তর:
কোনো আপত্তি নেই মেয়ের নাম “আমাতুল্লাহ” (অর্থ: আল্লাহর দাসী) রাখা। ঠিক যেমন ছেলের নাম রাখা হয় “আব্দুল্লাহ” (অর্থ: আল্লাহর দাস)।
তাকে শুধূ আমাহ-এর পরিবর্তে “আমাতুল্লাহ” পুরো নামে ডাকা উত্তম।
তবে শুধু “আমাহ” বলে ডাকলেও শরিয়ত অনুযায়ী কোনো নিষেধ নেই তা বৈধ। [Source: Islam web]
মেয়েদের নাম ‘আমাতুর রাহমান’ রাখা:
শাইখ আলবানির সাথে প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্নকারী: হে শাইখ, আমি কি আমার মেয়ের নাম أمة الرحمان (আমাতুর রহমান-অতিশয় দয়াময় আল্লাহর বান্দি/দাসী) রাখতে পারি?
শাইখ: হ্যাঁ, অবশ্যই।
প্রশ্নকারী: আমাদের সালাফে সালিহিনের যুগে কি এ নাম রাখা প্রমাণিত?
শাইখ: ওয়াল্লাহি, এখন আমার স্মরণে নেই। আমি কেবল এটা শুনেছি। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে জানতে হলে দেখা (গবেষণা) করতে হবে।
প্রশ্নকারী: আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। হে শাইখ, আমি আপনাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি।
শাইখ: আল্লাহ আপনাকে ভালোবাসুন যার জন্য আপনি আমাকে ভালোবেসেন। আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন। (সংক্ষেপায়িত) Source: [Al fatawa]]
শায়খ আলবানির মূল বক্তব্য হলো, আমাতুর রহমান-দয়াময় আল্লাহর বান্দি/দাসী” নাম রাখা জায়েজ। তবে সালাফদের মধ্যে এ নামের প্রচলন ছিল কি না—তা নির্ধারণের জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।
আল্লাহু আলাম-আল্লাহ সর্বজ্ঞ।