মসজিদ সজ্জিত হবে আর তাতে চর্চিত হবে দুনিয়ার কথা। সাহাবী হযরত আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন কিয়ামতের অন্যতম একটি লক্ষণ হলো মানুষ মসজিদ নির্মাণ করে অহংকার করবে। আজকাল তাই হচ্ছে। সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন:
لَتُزَ خَرٍ فَنَّهَا كَمَا زَخْرَ فَتِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى
‘তোমরা অবশ্যই ইহুদী-খৃস্টানদের মত মসজিদকে সজ্জিত করবে।’ [আবু দাউদ শরীফ।
বিচিত্র রঙের টাইলস্, ঝাড়বাতি, চোখ ধাঁধানো লাইটিং হৃদয়কাড়া ফরাশ, কার্পেট, বিদ্যুৎ পাখা, এসিসহ সুখ-শান্তির এমন কী আছে যা আমাদের মসজিদগুলোতে নেই? আর এসব পার্থিব মূল্যবান সামগ্রির বরকতে কি হয়েছে? শুধু ফরয নামাযের নির্ধারিত সময় ছাড়া মসজিদকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। ওসব মূল্যবান?
সামান-পত্রের সংরক্ষণের জন্যে আলাদা প্রহরীর ব্যবস্থা করতে হয়। সর্বদা ভাবতে হয় ওসব নিয়েই। ফলে যা হয়েছে তাহলো, ওসব দুনিয়াবী আসবাবপত্র দ্বারা মসজিদ আবাদ হয়েছে ঠিকই কিন্তু রীতিমত মুসল্লী নেই!
আর যারা আসে তারাও মসজিদে বসে ওই দুনিয়ার আলাপেই মত্ত থাকে। যতক্ষণ থাকে, দুনিয়ার চিন্তা ও নেশার মধ্যেই থাকে। মসজিদে আল্লাহ-ভীতিতে স্পন্দিত নামায নেই; দ্বীনি শিক্ষার মজলিস নেই; দ্বীনি বিষয়ে পরস্পর শলা-পরামর্শ নেই; পবিত্র কুরআনের তিলাওয়াত নেই; পরকালের আলোচনা নেই। অথচ এই মসজিদ হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদার যুগে দ্বীনি আমল, দ্বীনি উন্নতি ও অগ্রগতি সম্পর্কিত চিন্তা-ভাবনা, আলোচনা ও পরামর্শের প্রধান কেন্দ্র ছিল।
বিখ্যাত হাদীসগ্রন্থ কানযুল উম্মালের একটি হাদীসে আছে, যখন তোমরা তোমাদের মসজিদগুলোকে সাজাতে শুরু করবে, কুরআনে কারীমকে দৃষ্টিনন্দন করে উপস্থাপন করতে শুরু করবে তখন মনে করবে তোমাদের ধ্বংসের সময় ঘনিয়ে এসেছে।
বাইহাকী শরীফের অপর একটি হাদীসে আছে, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন একটা সময় আসবে যখন মানুষ মসজিদে বসে দুনিয়ার কথাবার্তায় মশগুল থাকবে। তোমরা এসব মানুষের কাছে বসবে না। কারণ, আল্লাহর দরবারে এদের কোনই প্রয়োজন নেই।
সংগ্রহীত
বইঃ কিয়ামতের আলামত
মূলঃ মাওলানা মুহাম্মাদ আশেক ইলাহী (রহ:)
অনুবাদঃ মাওলানা মুহাম্মাদ যাইনুল আবিদীন