জীবনের শেষ রমযানে আমার নামায
এতক্ষণে আমি যদি আস্থার সঙ্গে এ চিন্তায় বিশ্বাসী হই যে, আগামী রমযানই আমার যিন্দেগীর সফরের আখেরী রমযান, তাহলে এই রমযানে আমার নামায কেমন হবে?
আমার নামায হবে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যাবলিতে সমৃদ্ধ-
Table of Contents
প্রতিটি ফরয নামায আদায় করব মসজিদে জামাতের সঙ্গে
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ বিন ওমর রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
صَلَاةُ الْجَمَاعَةِ أَفْضَلُ مِنْ صَلَاةِ الْفَدَّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً
জামাতে আদায়কৃত নামাযের মর্যাদা একাকী আদায়কৃত নামাযের চেয়ে সাতাশ গুণ বেশি।1
সুতরাং এ অত্যুচ্চ ফজিলত লাভ করতে চাইলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে উপস্থিত হয়ে জামাতে আদায় করার প্রবল আগ্রহ থাকতে হবে।
বিষয়টি কেবল অধিক ফজিলতলাভেই সীমাবদ্ধ নয়। মসজিদের জামাত পরিত্যাগকারী সম্পর্কে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠোর সতর্কবাণীও উচ্চারণ করেছেন। হযরত আবু হোরায়রা রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِحَظَبٍ، فَيُحْطَبَ، ثُمَّ امْرَ بِالصَّلَاةِ، فَيُؤَذَنَ لَهَا، ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا فَيَؤُمَّ النَّاسَ، ثُمَّ أُخَالِفَ إِلَى رِجَالٍ، فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ
যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! আমার ইচ্ছা হয় জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করতে আদেশ দিই, তারপর নামায কায়েমের নির্দেশ দিই। এরপর আযান হলে এক ব্যক্তিকে লোকদের ইমামতি করার নির্দেশ দিয়ে আমি লোকদের কাছে যাই এবং তাদের (যারা জামাতে শরীক হয়নি) ঘর জ্বালিয়ে দিই।2
এই কঠিন সতর্কবাণীর দাবি হলো প্রতিটি মুসলিম পুরুষ জামাতে নামায আদায়ের প্রতি যত্নবান হবে এবং জামাত লাভের উদ্দেশ্যে আউয়াল ওয়াক্তেই মসজিদে উপস্থিত হবে। শুধু তাই নয়; বরং প্রত্যেক নামায নিয়মিত প্রথম কাতারে আদায়ে সচেষ্ট হবে। হযরত আবু হোরায়রা রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূলে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي النَّدَاءِ وَالصَّفُ الْأَوَّلِ، ثُمَّ لَمْ يَجِدُوْا إِلَّا أَنْ يَسْتَهِمُوا عَلَيْهِ لَاسْتَهَمُوا
আযান ও প্রথম কাতারে কী (ফজিলত) রয়েছে, তা যদি লোকেরা জানত, আর লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ ব্যতীত যদি এ সুযোগ লাভ করা সম্ভব না হতো, তাহলে অবশ্যই তারা লটারির মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নিত। 3
নামায আদায় করব বিনম্র-প্রকম্পিত চিত্তে, খুশু-খুযু সহকারে
আমি যদি বিশ্বাস করে থাকি যে, আগামী রমযানই আমার জীবনের শেষ রমযান, তাহলে আমি কখনো আমার ওপর আরোপিত মহান আল্লাহ তাআলার কোন ফরযের ব্যাপারে সামান্য অবহেলা করব না। আমার চেষ্টা থাকবে প্রতিটি ফরযকে সুন্দর ও সুচারুরূপে আদায়ের। নামাযের মধ্যে আমার মন এদিক-সেদিক বিক্ষিপ্ত বিচরণ করবে না। আমি নামায আদায় করব খুশু-খুযু সহকারে, মহান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিনীত-সমাহিত হয়ে।
কাকের মতো ঠোকর মেরে আমি নামায আদায় করব না, নামায আদায় করব ধীরে ধীরে, দীর্ঘ কেরাত, দীর্ঘ রুকু-সিজদা সহকারে। আমি কেবল নামায আদায় করব না, নামাযকে উপভোগ করব, নামাযে প্রশান্তি খুঁজে নেব। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
وَجُعِلَتْ قُرَّةُ عَيْنِي فِي الصَّلَاةِ
আর নামাযে আমার চোখের প্রশান্তি রাখা হয়েছে।4
নামাযে প্রকৃত খুশু-খুযু অর্জনের অতি উত্তম ও চমৎকার একটি পদ্ধতি হলো অন্তরে আল্লাহপ্রেমের বীজ রোপণ করা। কেননা, মানুষের স্বভাব-দাবি হলো সে যাকে পছন্দ করে এবং ভালোবাসে, তার সাক্ষাতে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করে। অস্থির হৃদয়ে সে প্রিয়তমের সাক্ষাৎ লাভের পথ ও সুযোগ খুঁজতে থাকে। সাক্ষাতের সময় ঘনিয়ে এলে সে বারবার অস্থির চিত্তে ঘড়ির দিকে তাকায় আর ভাবতে থাকে, কী হলো আজ হতচ্ছাড়া ঘড়ির কাঁটার, নড়ছেই না যে…!
এরপর যখন সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তটি উপস্থিত হয়, শেষ হয় প্রতীক্ষার সবগুলো ঘণ্টা, মিনিট, সেকেন্ড ও সেকেন্ডের ভগ্নাংশ; প্রিয়তমের সাক্ষাতে সে অগ্রসর হয় দেহ-মনে অপূর্ব রোমাঞ্চ ও শিহরণ ধারণ করে। সাক্ষাৎ-পর্ব যতই দীর্ঘ হোক, মনে-প্রাণে সে কামনা করে, এ সাক্ষাৎ যেন শেষ না হয়! একটু পূর্বেও যে ভাবছিল, ঘড়ির কাঁটাটা নড়ছে না কেন, এখন সে-ই ভাবতে থাকে, আহ! সময়ের প্রবাহ যদি থেমে যেত! সাক্ষাৎ শেষে সে ভাবতে থাকে, আবার কবে আসবে পরবর্তী সাক্ষাতের প্রতিশ্রুত দিন? হায়! আর কত দিন?!
ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে সাক্ষাতের এই আমাদের স্বভাবধর্ম।
আর নামাযের সময় হলে …?!
আমাদের মাঝে কি জেগে ওঠে এই অনুভব, এই অনুভূতি? এই অস্থিরতা ও এই শিহরণ?
উত্তর যদি হয়, ‘হ্যাঁ’, তাহলে শোকর আল্লাহর। আমি ভালোবাসি আমার রবকে, আমার আল্লাহকে।
আর উত্তর দিতে যদি দ্বিধা জাগে মনে, খুঁজতে থাকি অজুহাত-টালবাহানা, তাহলে তো আমি আমার রবকে প্রকৃত অর্থে ভালোবাসি না। হায় আফসোস! কী হবে আমার?।
এ তো ভয়াবহ দুর্যোগের কথা। এ যে মহা বিপর্যয়ের পদধ্বনি! কী সে বিপদ?!
قُلْ إِنْ كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيْرَتُكُمْ وَأَمْوَالُ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَ مَسْكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُوْلِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيْلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّى يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَسِقِينَ
(হে নবী! মুসলিমদেরকে) বলুন, তোমাদের কাছে যদি আল্লাহ, তার রাসূল এবং তার পথে জিহাদ করা অপেক্ষা বেশি প্রিয় হয় তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের খান্দান, তোমাদের সেই সম্পদ যা তোমরা অর্জন করেছ, তোমাদের সেই ব্যবসা, যার মন্দা পড়ার আশঙ্কা কর এবং বসবাসের সেই ঘর, যা তোমরা পছন্দ কর, তবে অপেক্ষা কর, যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ ফায়সালা প্রকাশ করেন। আল্লাহ অবাধ্য লোকদেরকে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছান না।
[সূরা তাওবা: ২৪]
বলুন, আমি ও আমরা কি আমাদের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন, জীবনসঙ্গী ও আত্মীয়স্বজনের সাক্ষাতের চেয়ে নামাযে অধিক আনন্দ অনুভব করি?
দীর্ঘ সফর শেষে ফিরে আসার পর প্রিয়জনদের সাক্ষাৎলাভের জন্য যেমন অস্থিরতা ও চঞ্চলতা অনুভব করি, তেমন অস্থিরতা ও চঞ্চলতা কি অনুভব করি আল্লাহর সাক্ষাৎলাভের জন্যও?
প্রচুর অর্থ-সম্পদ যদি আমার সঞ্চয়কে সমৃদ্ধ করে, তখন যেমন আনন্দ অনুভব করি, তেমন আনন্দ কি অনুভব করি নামাযের পরও?
বাজারমন্দার কারণে ব্যবসায় সমূহ ক্ষতির আশঙ্কায় যেমন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হই, তেমন আশঙ্কা ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত কি হই নামায কবুল না হওয়ার?
শেষ রাতের নির্জন প্রহরে দু’ রাকাত তাহাজ্জুদ আদায় করতে পেরে কি তেমন রোমাঞ্চিত হই, যেমন রোমাঞ্চিত হই বহুদিনের প্রস্তুতি ও পরিশ্রমের পর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের মনোরম-চমৎকার বাড়িটি নির্মাণ করতে পেরে? কোরআন যেমন বলেছে- ‘পছন্দের বাড়ি’!
আমি আল্লাহকে ভালোবাসি কি-না, আমার আল্লাহপ্রেমের পরিমাণ কতটুকু, তা পরিমাপ করার জন্য এ মাপকাঠিই আল্লাহ তাআলা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহপ্রেম নির্ণয়ের এই মাপকাঠি সুস্পষ্ট ও সুদৃঢ়; মিথ্যা দাবির বা প্রতারণার কোন অবকাশ এখানে নেই। সুযোগ নেই মিথ্যা প্রেমের দাবি করার, অবকাশ নেই বাস্তব জীবনে এ দাবিবিরোধী কাজ করে, এ দাবিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেও সারা জীবন এই কল্পনার ফানুস ওড়ানোর যে, আমি তো আল্লাহকে অনেক ভালোবাসি! আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
قَالَتِ الْأَعْرَابُ آمَنَّا قُلْ لَّمْ تُؤْمِنُوا وَ لِكِنْ قُوْلُوا أَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ الْإِيْمَانُ فِي قُلُوْبِكُمْ
মরুবাসীরা-রলে, আমরা ঈমান এনেছি। তাদেরকে বলুন, তোমরা ঈমান আনোনি। তবে এই বল যে, আমরা বশ্যতা স্বীকার করেছি।5
অর্থাৎ বিশ্বাসের দাবি তো অনেকেই করে; কিন্তু প্রকৃত অর্থে বিশ্বাসী, প্রেমে বিভোর, আনুগত্যের পরাকাষ্ঠায় উন্নীত এবং আল্লাহর পথে সংগ্রামী তো স্বল্প, অতি অল্প।
সুতরাং প্রিয় পাঠক! এখানে একটু থামি, কিছুক্ষণ পাঠ স্থগিত রাখি। একটু ভাবি, বিবেকের দুয়ার উন্মুক্ত করে কতক্ষণ চিন্তা করি।
এবার পূর্ণ আস্থার সঙ্গে উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিই, একেবারে স্বচ্ছ-সুস্পষ্ট ভাষায়।
আবারও বলছি, বর্ণিত মানদণ্ডে যদি আমরা আল্লাহকে ভালোবেসে থাকি, তাহলে শোকর আল্লাহর। আর যদি তা না হয়, তাহলে সাবধান, যা করার দ্রুতই করতে হবে।
দ্রুত হৃদয়ে সৃষ্টি করতে হবে আল্লাহপ্রেম।
সেদিন আসার পূর্বেই …!
যেদিন …
يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَ لَا بَنُونَ إِلَّا مَنْ آتَى اللَّهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ
যেদিন কোন অর্থ-সম্পদ কাজে আসবে না এবং সন্তান-সন্ততিও না। তবে যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে সুস্থ অন্তর নিয়ে।6
ভুলে যাবেন না, এটি সাধারণ কোন বিষয় নয়, ঈমানের প্রশ্ন। যে ব্যক্তি আল্লাহপ্রেমের উপর কোন প্রেমকে অগ্রাধিকার দেয়, তার ঈমান তো অসম্পূর্ণ! সে তো দাঁড়িয়ে আছে পতনোন্মুখ গহ্বর কিনারে। সে কিছুতেই পাবে না ঈমানের স্বাদ ও মিষ্টতা। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
ثَلَاثُ مَنْ كُنَّ فِيْهِ وَجَدَ حَلَاوَةَ الْإِيْمَانِ: أَنْ يَكُوْنَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا، وَأَنْ يُحِبُّ الْمَرْءَ لَا يُحِبُّهُ إِلَّا لِلَّهِ، وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِي
الْكُفْرِ كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِي النَّارِ»
তিনটি গুর্ণ যার মধ্যে থাকে, সে ঈমানের স্বাদ পায়-
১. আল্লাহ ও তার রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছুর তুলনায় প্রিয় হয়।
২. কাউকে ভালোবাসলে নিখাদ আল্লাহর জন্যই ভালোবাসে।
৩. কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে তেমন অপছন্দ করে, যেমন অপছন্দ করে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে।7
বরং অন্য এক রেওয়ায়েতে তো ঈমানের মিষ্টতা লাভের সম্ভাবনা পুরোপুরিই অস্বীকার করা হয়েছে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
لَا يَجِدُ أَحَدٌ حَلَاوَةَ الْإِيْمَانِ حَتَّى يُحِبُّ الْمَرْةَ لَا يُحِبُّهُ إِلَّا لِلهِ، وَحَتَّى أَنْ يُقْذَفَ فِي النَّارِ أَحَبُّ إِلَيْهِ مِنْ أَنْ يَرْجِعَ إِلَى الْكُفْرِ بَعْدَ إِذْ أَنْقَذَهُ اللَّهُ وَحَتَّى يَكُوْنَ اللهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا
কোন ব্যক্তি ততক্ষণ ঈমানের স্বাদ পাবে না, যতক্ষণ না সে কাউকে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালোবাসবে, যে কুফরি থেকে আল্লাহ তাকে উদ্ধার করেছেন, তার দিকে ফিরে যাওয়ার চেয়ে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অধিক প্রিয় মনে করবে এবং যতক্ষণ না আল্লাহ ও তার রাসূল তার কাছে অন্য সবকিছুর চেয়ে অধিক প্রিয় হবেন।8
নবীজী এ হাদীসে বলেছেন, ‘ঈমানের স্বাদ পাবে না’। একেবারে সুস্পষ্ট ও সুদৃঢ় ঘোষণা! আর ঈমানের মিষ্টতা যার হৃদয়ে নেই, সে কী করে অর্জন করবে নামাযের খুশু-খুযু?!
নামাযে দীর্ঘ দোয়া
নামায হলো দোয়া কবুলের অন্যতম ক্ষেত্র। এ কারণেই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযের বিভিন্ন অংশে প্রচুর দোয়া করতেন। নামাযের সূচনাতে তাকবীরে তাহরীমার পর দোয়ার মাধ্যমেই তিনি নামায শুরু করতেন। নামাযের সূচনাতে কৃত প্রিয় নবীজীর বিভিন্ন দোয়া-বাক্য হাদীসের সুসমৃদ্ধ ভান্ডারে সংরক্ষিত আছে।
হযরত আবু হোরায়রা রাযি. বর্ণনা করেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে তাকবীরে তাহরীমার পর কেরাতের পূর্বে কিছুক্ষণ নীরব থাকতেন। আমি নবীজীকে বললাম, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার মাতা-পিতা আপনার উপর কোরবান হোক। আপনি তাকবীর ও কেরাতের মাঝে কী বলেন?’ নবীজী উত্তর দিলেন, আমি বলি-
اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ اللَّهُمَّ تَقْنِي مِنْ خَطَايَايَ كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اللَّهُمَّ اغْسِلْنِي مِنْ خَطَايَايَ بِالثَّلْجِ وَالْمَاءِ وَالْبَرَدِ
হে আল্লাহ! আমার ও আমার পাপসমূহের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে দিন, যেরূপ দূরত্ব আপনি সৃষ্টি করে দিয়েছেন পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আমার পাপসমূহ হতে পরিষ্কার করে দিন, যেরূপ পরিষ্কার করা হয় সাদা কাপড় ময়লা হতে। হে আল্লাহ! আপনি আমার গোনাহসমূহ ধুয়ে ফেলুন বরফ, পানি ও শিলা দ্বারা।9
আম্মাজান হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. হতে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করতেন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الكَسَلِ وَالهَرَمِ، وَالْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْقَبْرِ، وَعَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ فِتْنَةِ النَّارِ وَعَذَابِ النَّارِ، وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْغِنى وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الفَقْرِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ اللَّهُمَّ اغْسِلْ عَنِّي خَطَايَايَ بِمَاءِ الثَّلْجِ وَالبَرَدِ، وَنَقَّ قَلْبِيْ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا نَقَّيْتَ التَّوْبَ الْأَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ، وَبَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ
হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় চাই অলসতা, অতিবার্ধক্য, গোনাহ ও ঋণের বোঝা থেকে; কবরের সংকট ও আযাব থেকে; জাহান্নামের সংকট ও আযাব থেকে এবং প্রাচুর্যের অনিষ্টতা থেকে। আমি আপনার পানাহ চাই দারিদ্র্য থেকে; আপনার আশ্রয় চাই মাসীহ দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে। হে আল্লাহ! আপনি আমার সমুদয় গোনাহ বরফ ও শীতল পানি দিয়ে ধুয়ে দিন। আমার অন্তর যাবতীয় পাপ থেকে পরিচ্ছন্ন করুন; যেভাবে সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিচ্ছন্ন করা হয়। আমার ও আমার গোনাহসমূহের মধ্যে এতটা দূরত্ব আপনি সৃষ্টি করে দিন, যতটা দূরত্ব আপনি পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মাঝে করেছেন।10
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু ও সিজদাতে অধিক পরিমাণে তাসবীহ পাঠ করতেন। হযরত আয়েশা রাযি. হতে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু ও সিজদায় এই দোয়া পড়তেন,
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي
হে আল্লাহ! আমার রব! আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং আপনার প্রশংসা করছি। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।11
নবীজী সিজদায় বেশি বেশি দোয়া করতে বলেছেন। কেননা, সিজদা হলো বান্দার আপন রবের সবচে নিবিড় সান্নিধ্যলাভের মুহূর্ত। সিজদা অবস্থায় দোয়া করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। হযরত আবু হোরায়রা রাযি. হতে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الْعَبْدُ مِنْ رَبِّهِ، وَهُوَ سَاجِدٌ، فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ
সিজদা অবস্থায়ই বান্দা তার রবের অধিক নিকটবর্তী হয়ে থাকে। অতএব, তোমরা (সিজদায়) অধিক পরিমাণে দোয়া করবে।12
প্রশ্ন হতে পারে, কেন সিজদার হালতে দোয়া কবুলের আশা তুলনামূলক বেশি? এর পেছনে হেকমত ও গুপ্ত রহস্যই বা কী?
এর উত্তর হলো-সিজদা হচ্ছে পুরো নামাযের মধ্যে সবচেয়ে বিনম্রতাপূর্ণ রোকন। সিজদার হালতেই আল্লাহর প্রতি বান্দার সবচেয়ে অধিক বিনয় প্রকাশ পায়। যে কপালকে ভাবা হয় মানুষের সম্মানের প্রতীক, সিজদায় বান্দা তা আল্লাহর সামনে বিনয়ে অবনত করে। যে নাসিকাকে মানুষ ভাবে গৌরব ও অহংকারের প্রতীক, সিজদায় বান্দা সেই নাসিকা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। সিজদা চূড়ান্ত বিনয়ের প্রতীক বলেই সুস্থ বিবেকসম্পন্ন কোন মানুষ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও সামনে সিজদা করতে রাজী হবে না। সুতরাং সিজদা হচ্ছে বিশ্বজগতের রবের প্রতি বান্দার নিঃশর্ত দাসত্বের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি। বান্দা যদি এ সম্পর্কের দাবি ও প্রকৃতি অনুধাবন করতে পারে, তখন তার দোয়া কবুলের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ
(হে নবী!) আমার বান্দাগণ যখন আপনার কাছে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তখন (আপনি তাদেরকে বলুন যে,) আমি রয়েছি অতি সন্নিকটে।13
অর্থাৎ আল্লাহ তো সর্বদা বান্দার সন্নিকটেই আছেন। কিন্তু যে বান্দা এই সম্পর্ক ও নৈকট্যের স্বরূপ অনুধাবন করতে পারে না, সে কী করে লাভকরবে নৈকট্য ও সান্নিধ্যের স্বাদ?!
অবশ্য আমার মতে সিজদায় দোয়া কবুলের অধিক সম্ভাবনা থাকার পেছনে আরেকটি চমৎকার ও সূক্ষ্ম রহস্য নিহিত রয়েছে। সিজদা হলো একটি রাকাতের সর্বশেষ রোকন। তাকবীর, সূরা ফাতিহা, কেরাত, রুকু-অর্থাৎ একটি পুরো রাকাতের অন্য সব আমল যেন প্রার্থনার ক্ষেত্র প্রস্তুতকারী। পুরো রাকাতে বান্দা আল্লাহর গুণকীর্তন ও মর্যাদা বর্ণনা করে রাকাতের শেষ অংশ সিজদায় উপনীত হয় এবং আল্লাহর কাছে আপন হাজত ও প্রার্থনা পেশ করে।
এ কারণেই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সিজদায় বেশি বেশি দোয়া করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন, এ বিষয়ে যত্নবান হতে উৎসাহিত করেছেন। হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস রাযি, হতে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
فَأَمَّا الرُّكُوعُ فَعَظَمُوا فِيهِ الرَّبَّ عَزَّ وَجَلَّ، وَأَمَّا السُّجُودُ فَاجْتَهِدُوا فِي الدُّعَاءِ، فَقَمِنٌ أَنْ يُسْتَجَابَ لَكُمْ
তোমরা রুকূতে তোমাদের রবের মহত্ত্ব বর্ণনা করবে এবং সিজদায় অধিক পরিমাণে দোয়া পড়বে। কেননা, তা (সিজদা) দোয়া কবুলের উপযুক্ত সময়।14
সুতরাং আমরা রুকূতে দোয়া করব না। কারণ, এখনও আমরা সেসব কার্যকারণ সমাপ্ত করিনি, যা আমাদেরকে দোয়া কবুলের নিশ্চয়তা দেবে। যখন আমরা রুকূসহ নামাযের অন্যান্য রোকনসমূহে আল্লাহর হামদ ও প্রশংসা, তাসবীহ ও মহত্ত্ব বর্ণনা করব, ইসতেগফার ও ওজর পেশ করব, পরবর্তী সিজদায় আমাদের দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
প্রসঙ্গত জেনে রাখা প্রয়োজন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপন পেয়ারা উম্মতকে উপরিউক্ত নসীহত করেছেন জীবনের শেষভাগে, মৃত্যুশয্যায় শায়িত অবস্থায়।
সুতরাং ভেবে দেখুন, কত গুরুত্বপূর্ণ নসীহত এবং কত অত্যুচ্চ স্তরের কল্যাণকামিতা! আপন উম্মতের কাছে কল্যাণের বার্তা পৌছিয়ে দিতে কতটা পাগলপারা ছিলেন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! মৃত্যুশয্যার প্রচণ্ড কষ্ট ও অসহ্য যন্ত্রণার সময়ও কেবল উম্মতের কল্যাণচিন্তা।
সম্ভবত এই একই ‘কারণে নামাযের শেষাংশে তাশাহহুদের পরও দোয়ার বিধান রাখা হয়েছে। সুতরাং নববী সুন্নাত হলো-আমরা নামাযের দুই গুরুত্বপূর্ণ রোকনে বেশি বেশি দোয়া করব-সিজদায় ও তাশাহহুদের পর সালাম ফেরানোর পূর্বে। সিজদা যেমন একটি রাকাতের সর্বশেষ আমল এবং নববী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাব্যতম ক্ষেত্র, তেমনি তাশাহহুদও হচ্ছে পুরো নামাযের সর্বশেষ আমল। পুরো নামাযের প্রতিটি রোকনে আমরা আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার মর্যাদা বর্ণনা ও গুণকীর্তন করেছি; এখন সময় এসেছে আল্লাহর কাছে চাওয়ার ও প্রার্থনা করার। এ কারণেই তাশাহহুদের পর এবং সালামের পূর্বে পাঠ-উপযুক্ত অনেক দোয়া সংরক্ষিত আছে হাদীসে নববীর সমৃদ্ধ ভান্ডারে।
এখান থেকেই আমরা এ বিধানের গূঢ় রহস্যও অনুধাবন করতে পারব যে, কুনূতের বিধান আল্লাহ তাআলা বিতরের নামাযে কেন রেখেছেন? রাতের দীর্ঘ একটি অংশ নামাযে কাটানোর পর, প্রতিটি রাকাতের প্রত্যেকটি রোকনে আল্লাহর তাকবীর ও মহত্ত্ব, হামদ ও প্রশংসা, তামজীদ ও মর্যাদা বর্ণনা করার পর ক্ষেত্র প্রস্তুত হয় দোয়া ও প্রার্থনার, অনুনয় ও মিনতির। দেখুন, প্রাপ্তির সেই পরম মুহূর্তে প্রিয় নবীজী আল্লাহর কাছে প্রার্থনার কী চমৎকার এক নমুনা আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। হযরত হাসান বিন আলী রাযি. বর্ণনা করেন, নবীজী আমাকে বিতর (নামাযের কুনূত)-এ পাঠ করার জন্য কিছু কালিমা শিখিয়ে দিয়েছেন।15 কালিমাগুলো হলো-
اللَّهُمَّ اهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ، وَعَافِنِي فِيمَنْ عَافَيْتَ، وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ، وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ، وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ، فَإِنَّكَ تَقْضِيْ وَلَا يُقْضَى عَلَيْكَ، وَإِنَّهُ لَا يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ، تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ
হে আল্লাহ! যাদের আপনি হিদায়াত দান করেন, তাদের সঙ্গে আমাকেও হিদায়াত দান করুন। যাদের আপনি অকল্যাণ হতে দূরে রেখেছেন, তাদের সঙ্গে আমাকেও অকল্যাণ হতে দূরে রাখুন। যাদেরকে আপুনি আপনার অভিভাবকত্বে রেখেছেন, তাদের সঙ্গে আমাকেও আপনার অভিভাবকত্বে রাখুন। আপনি যা দান করেছেন, তাতে বরকত দিন। আপনি আমার তাকদীরে যা রেখেছেন, তার অসুবিধা হতে আমাকে রক্ষা করুন। ফয়সালা একমাত্র আপনি করেন, আপনি ব্যতীত কেউ ফয়সালা করতে পারে না। আপনি যার বন্ধু, তাকে কেউ লাঞ্ছিত করতে পারে না। হে আমার রব। আপনি তো মহিমান্বিত ও পবিত্র।16
অর্থাৎ পুরো রাতের নামাযের পর বা আরও ব্যাপক দৃষ্টিতে বিবেচনা করলে একটি দিনের সকল ইবাদতের পর আমরা আমাদের সারাদিনের দীর্ঘ ইবাদতধারার সমাপ্তি ঘটাচ্ছি এক সুসমৃদ্ধ দোয়ার মাধ্যমে। সে দোয়ায় আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি হিদায়াত ও পথনির্দেশ, আফিয়াত ও নিরাপত্তা এবং বরকত ও কল্যাণধারা। আর এ সবকিছুই প্রার্থনা করছি সারা দিনের সকল নামাযে মহান আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও মর্যাদা বর্ণনা করার পর।
আমার প্রতিজ্ঞা
আগামী রমযান-ই আমার জীবনের শেষ রমযান। এই রমযানে আমি-
- পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করব মসজিদে।
- নামাযের প্রস্তুতি নেব ওয়াক্ত হওয়ার পূর্ব হতেই।
- পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ে সচেষ্ট হব প্রথম কাতারে।
- পাঁচ ওয়াক্ত নামায নিয়মিত আদায় করব জামাতের সাথে।
- নামায আদায় করব খুশু-খুযু সহকারে, বিনম্র-প্রকম্পিত চিত্তে।
- হৃদয়ে রোপণ করব আল্লাহপ্রেমের বীজ।
- নামায আদায় করব স্থির ও পূর্ণ সমাহিত চিত্তে।
- নফল নামাযে সিজদার হালতে বেশি বেশি দোয়া করব।
- সিজদায় অনুভব করব রব্বে কারীমের নিবিড় সান্নিধ্যের স্বাদ।
- রমযানের পূর্বেই মুখস্থ করে নেব নামাযে পাঠ-উপযুক্ত বিভিন্ন দোয়া।
সংগ্রহীত
বইয়ের নামঃ এটাই হয়তো জীবনের শেষ রমজান
লেখকঃ ড. রাগিব সারজানী
অনুবাদকঃ আবু মুসআব ওসমান
প্রকাশনাঃ মাকতাবাতুল হাসান
- সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৫০ ↩︎
- সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৪৪ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৫১ ↩︎
- সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬১৫ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৩৭। ↩︎
- সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৩৯৪০ ও মুসনাদে আহমাদ , হাদীস নং ১৪০৩৭ ↩︎
- সূরা হুজুরাত: ১৪ ↩︎
- সূরা শুআ’রা: ৮৮-৮৯ ↩︎
- সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৩ ↩︎
- সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০৪১ ↩︎
- সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৪৪ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৯৮। ↩︎
- সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৩৬৮। ↩︎
- সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৯৪ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৮৪ ↩︎
- সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৮২ ↩︎
- সূরা বাকারা: ১৮৬ ↩︎
- সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৭৯ ↩︎
- নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বিতরের নামাযে পঠিত বিভিন্ন দোয়া হাদীসের গ্রন্থসমূহে বর্ণিত আছে। দোয়ায়ে কুনুত হিসেবে এর যে কোন একটি পাঠ করা যায়। (অনুবাদক) ↩︎
- সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ৪৬৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪২৫, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ১৭৪৫ ও মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ১৭১৮ ↩︎