Writing

হযরত মুসা আ. আর খিজির আ. এর কাহিনী

শুক্রবার কাহফ পড়ছিলাম, যত বারই পড়ি ততবারই নতুন কিছু ইনসাইটস পাই, এবারের পাওয়া গুলো নিয়ে কিছু লিখা
এবারের ফোকাস হজরত মুসা আর খিজির আ. এর কাহিনী:
আগে একটু পটভূমি:
মুসা আ. যখন নবুওতের প্রায় শেষ দিকে, যখন ভাবছিলেন তিনি হলেন পৃথিবীর সব থেকে বড় আলেম, তখন আল্লাহ জানালেন যে না! তোমার থেকেও বড় আলেম আছেন।
আদেশ করলেন এক ফিল্ড ট্রিপের, উনার এই ফিল্ড ট্রিপ আমাদেরকে ইঙ্গিত দেয় যে, জ্ঞান আহরণের জন্য প্রয়োজনে আমাদেরকেও ট্র্যাভেল করতে হবে, প্রয়োজনে স্পেশাল জ্ঞানের জন্য স্পেশাল টিচারের কাছে যেতে হবে।

ইন্টারেস্টিংলি এই সূরা থেকে আমরা এটাও বুঝি যে, সব ধরনের উপকারী জ্ঞানই আমাদের প্রয়োজন, সব ধরনের জ্ঞানই ইম্পর্ট্যান্ট যদি তাহা ইউসফুল হয়, ইম্পর্ট্যান্ট দেখেই তিনি ঠিক এর পরের গল্পেই দেখিয়েছেন যে কি ভাবে জুলকার নাইন আ. অ্যাপ্লাইড ইঞ্জিনারিং ব্যবহার করে, ইয়াজুজ মাজুজ কে রুখে দিয়েছিলেন।

তো যা বলছিলাম, মুসা আ. যখন খিজির আ. এর কাছে গেলেন, তিনি প্রথমেই উনাকে স্ট্রেইট আপ মানা করে দিলেন বলেন “না! আপনাকে রাখা যাবে না”
“কারণ আপনি ধৈর্য ধরে রাখতে পারবেন না”
খেয়াল করে দেখুন, কথাটা বলেছিলেন সেই মানুষটাকে, যিনি ফিরাউনকে টেকেল করার ধৈর্য দেখিয়েছিলেন, সাথে দেখিয়েছিলেন বাণী ইসরাইলের মতো বেয়াদপ এক জাতিকে টেকেল করে!
তবুও খেয়াল করুন মুসা আ. এর রেসপন্স, কোনো হুমকি ধামকি নেই, কখনো অহংকার বা দাম্ভিকতা নাই, সিম্পলি বিনয়ের সাথে নরম হয়ে বলেছিলেন, ইনশাল্লাহ! আপনি আমাকে ধৈর্যশীল হিসেবেই পাবেন!

আসলে প্রকৃত জ্ঞান আমাদেরকে বিনয়ী হতে শেখায়!
আর জ্ঞান আহরণের ক্ষেত্রে এই হিউমিলিটি হলো খুব ইম্পর্ট্যান্ট একটা ফ্যাক্টর, কারণ আপনি যদি নীচু না হন, উঁচু জায়গা থেকে জিনিস গ্রহণ করবেন কি করে?
পাশাপাশি মনে রাখবেন, যেই জ্ঞান আপনাকে বিনয়ীর বদলে অহংকারী করে তুলে, বুঝবেন আপনার সেই জ্ঞানের ইনটেকে প্রব্লেম আছে।

খিজির আ. অবশ্য প্রথমে “না” বলার কারণটাও জানালেন বললেন যে,
“আসলে যে বিষয় গুলো আপনার চিন্তার পরিধির বাইরে, সেই বিষয়গুলোতে আপনি ধৈর্য ধারণ করবেন কী করে?”
খিজির আ. বুঝেছিলেন,
মুসা আ. যেই মেন্টাল মডেল কেরি করছিলেন, তা তার কার্যকলাপ সহ্য করতে পারবে না, কারণ মেন্টাল মডেল আমাদেরকে একটা মেন্টাল লেন্স তৈরি করে, আমরা সেই লেন্স দিয়েই পৃথিবীকে দেখার চেষ্টা করি, সাইকোলোজিতে এটাকে প্যারাডাইম বলে।

যাই হোক অনুরোধ শেষে তিনি রাজি হলেন এবং তিনটা কাজ করলেন এবং মুসা আ. মোটামুটি তিনটা কাজেই ভেটো দিলেন।
খিজির আ. এর সেই তিনটা কাজ আমরা সবাই জানি,

প্রথমত, তিনি এক গরিব মাঝির নৌকা ফুটো করে দিলেন
দ্বিতীয়ত তিনি একজন নিরীহ বাচ্চাকেই হত্যা করে বসলেন
আর তৃতীয়ত তিনি একটা ইনকন্সিডারেট জাতিকে একটা দেয়াল ফিক্স করে দিলেন

ইনকন্সিডারেট বললাম কারণ, তারা যখন ক্ষুধার্ত অবস্থায় গিয়ে তাদের কাছে সামান্য কিছু খানা চাইলো, পুরো লোকালয়ে কেউ তাদেরকে ন্যূনতম কোনো মানবতা দেখায়নি, তবুও খিজির আ. বিনা মজুরিতে তাদের একটা উপকার করে দিলো
তাদের এলাকার একটা ভাঙা দেয়াল মেরামত করে দিল।

মুসা আ. এর পয়েন্ট অফ ভিউ তে তিনটার কোনোটাই মেক সেন্স করে না, তিনি দেখছেন যে, যারা ইনোসেন্ট, খিজির আ. তাদের ক্ষতি করলেন আর যারা রুড তাদেরকে উপকার করলেন, আর এই জন্যই প্রতিটা কাজে তিনি ভেটো দিয়েছিলেন বলেছিলেন,
নৌকা ফুটা করলেন কেন?
বাচ্চাকে মারলেন কেন?
কিংবা দেয়াল ঠিক করার পর বললেন, মজুরি নিলেন না কেন?
তার শেষ প্রশ্নে খিজির আ. বললেন, বাস, দান দান তিন দান!
আপনি আর আমার সাথে চলতে পারবেন না!
এবং এবার বিদায়ের পূর্বে তিনি তার কর্ম কান্ডগুলো এক্সপ্লেইন করলেন, আর সেখানেই এবারের ফাইন্ডিংস।

খিজির আ. বলেন, নৌকা ফুটোর কাজটি করেন নিজের ইচ্ছায়, শব্দটা ব্যবহার করেন, “ফা আরাদ তু” অর্থাৎ “তাই আমি চাইলাম”
কারণ তিনি জানেন সামনে এক খারাপ বাদশা আছে, যে কিনা গরিবের ভালো নৌকা গুলো কেড়ে নেয়, উনি ফুটা করে তাদেরকে বাঁচালেন।
বাচ্চাটির জীবন নষ্ট করেন, আল্লাহ অনুমতিতে, শব্দটা ব্যবহার করলেন
“ফা আরাদ না”, “তাই আমরা চাইলাম”
কারণ উনাকে জানানো হয়েছে যে বাচ্চাটা বড় হয়ে তার মাতা পিতাকে অনেক কষ্ট দিবে, বিনিময়ে এর বদলে এখন উনাদেরকে আল্লাহ আরো উত্তম কাউকে দান করবেন।

আর দেয়াল মেরামতের কাজটি ছিল একান্তই আল্লাহর ইচ্ছাতে, শব্দটা ব্যবহার করেন,
“ফা আরাদা রাব্বুকু” অর্থাৎ “তাই তোমার রব চাইলেন”
কারণ সেই দেয়ালের নিচে দুই এতিমের কিছু সম্পদ ছিল, আর তারা যেমন জালিম গোত্র, সামান্য খানা পর্যন্ত যারা পথচারীকে দিলো না, তারা যদি সেই সম্পদের সন্ধান পায় তাহলে তাদের হাত থেকে এতিম গুলো কিভাবে উদ্ধার করবে!

খিজিরের উত্তরের ইম্পর্ট্যান্ট ট্রেন্সলেশনে হারিয়ে যায়, আমি বহু ট্রান্সলেশন দেখিয়েছি যেখানে একটা কমন ভুল পেয়েছি,
পেয়েছি ওখানে বলা হয় খিজির আ. বলেন, আমার ভালো মনে হলো তাই আমি বাচ্চাটাকে মেরেছি, কারেক্ট ট্রেন্সলেশন দেখলে বুঝা যায়, খিজির ছিলেন আসলে নিজের ইচ্ছায় সেটা করেন নাই, তিনি ছিলেন একজন এক্সিকিউটার মাত্র, আসল হুকুম এসেছিল উপর থেকেই!

মুসা আ. এবং খিজিরের এই ঘটনায় একটা বিষয় স্পষ্ট, আমরা যা দেখি তা এক ধরনের রিয়ালিটি, আর যা দেখি না সেটাও এক ধরনের রিয়ালিটি, যেমন আমাদের কাঁধের দুই ফেরেশতা আমরা দেখি না, অথচ সেটা এক ধরনের রিয়ালিটি, আমরা কবরের বহমান দুনিয়া দেখতে পাই না, কিন্তু সেটাও এক ধরণের রিয়ালিটি।

আমরা যা দেখি আর যা দেখি না এই দুই রিয়ালিটি মাঝে আছে একটা পর্দা, মৃত্যুর পর আর হাশরের দিনে আল্লাহ সেই পর্দা উঠিয়ে নিবেন, সূরা কাহাফে আল্লাহ সেই পর্দাটাই হালকা একটু উঠিয়ে দেখালেন যে, আমরা যা দেখি বা দেখতে পাই শুধু সেটাই রিয়ালিটি না, পর্দার আড়ালেও আরেকটি রিয়ালিটি আছে, সেখানে চলছে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ, এবং সেখানেও বিভিন্ন ইন্সট্রাকশন যাচ্ছে বিভিন্ন লেয়ারে, যেমন কখনো খিজির আ. এর মতো নিজ ইচ্ছায়, কখনো কোলাবোরেটেড ইচ্ছায় আবার
কখনো তা একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছায়!

এই ট্রিপে আল্লাহ মুসা আ. কে শিক্ষা দিলেন সাথে আমাদের যে জ্ঞান দুই ধরনের, একটা হলো ভিসিবল রিয়ালিটির আর
অপরটি হলো ইনভিজিবল রিয়ালিটির, হজরত মুসা আ. ছিলেন ভিসিবল রিয়ালিটিতে শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ চাইলেন তিনি যেন এবার কিছুটা ইনভিসিবল রিয়ালিটির জ্ঞানেরও ঝলক দেখতে পান।
সোঁ আজ আপনার জীবনে যদি অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটে থাকে, এই ধরুন হঠাৎ করে চাকরি টা চলে গেলো, কিংবা বিয়ে টা ভেঙে গেলো, কিংবা অপ্রত্যাশিত কোনো অ্যাকসিডেন্ট হলো, বিশাল কোনো রজার দুঃসংবাদ পেলেন, অথবা মিসক্যারেযে মাসুম বেবিটা চলে গেলো।

জেনে রাখুন, প্রতিটা কাজের পিছনে একটা কিন্তু ছিল, যা হয়েছে বা হচ্ছে প্রতিটা কাজের একটা এক্সপ্লানেশন আছে, প্রতিটা কাজ ইনভিসিবল রিয়ালিটির বিগার টাইম লাইনে আপনার ভালোর জন্যই কিছু রেডি করছে!
খিজির আ. আর মুসা আ. গল্পের আরেকটা ফেসিনেটিং সাইড আছে, অনেক দিন থেকেই ভাবছি শেয়ার করবো কিন্তু করা হয়ে উঠে নাই আজ করলাম।
খেয়াল করে দেখেন, মুসা আ. খিজির আ. কে ঠিক কি ভাবে খুঁজে পেলেন?
কি ছিল তার গ্রিন সিগন্যাল?
গ্রিন সিগন্যালটি ছিল, সেই পয়েন্ট খুঁজে বের করা, যেই পয়েন্টে মৃত তার জীবন খুঁজে পায়”

হ্যাঁ, তাইতো দেখেন, খিজির আ. যে জায়গায় অবস্থান করছিলো, ঠিক সেই জায়গায় যাওয়ার সাথে সাথে তাদের ভাজা মাছটা হঠাৎ জীবিত হয়ে তরতর করে বেড়িয়ে পরে, অর্থাৎ তারা শুধু দুই সমুদ্রের মিলন জংশনেই পৌঁছায়নি, পৌঁছে ছিল জীবন আর মৃত্যুর মিলন জংশনেও।
সেই জংশনে এমন এক টা রিয়ালিটির দরজা ওপেন হয়েছিলো, যেখানে জীবন বা মৃত্যুর কোনো কনসেপ্ট নেই, কনসেপ্ট নেই সময়ের।

(এখানে দরজা কথাটা ইম্পর্টেন্ট)
সেই মাছ বের হয়ে যাওয়ার ডেস্ক্রিপশনটাও বেশ ইন্টারেস্টিং, মাছটা এমন ভাবে বের হয়ে গেলো, যেন সব কিছু ছেদ করে
একটা টানেলের মতো ইফেক্ট তৈরি করে, তরঙ্গের ঢেউ ক্রিয়েট করে বেড়িয়ে পড়লো!
বিষয়টা ভিসুয়ালাইস করার বেস্ট উপায় হলো, ছোট বেলার মেট্রিক্স মুভি, সেথায় আমরা যেমন দেখতে পাই যে, বুলেট গুলো ঠিক স্লো মোশনে টানেল ক্রিয়েট করে করে বেরিয়ে যায় ঠিক তেমন!
অর্থাৎ এই জংশনে টাইম স্পেসের ফেব্রিকের ঢেউ টিক এমনটাই ভিসিবল হয়ে উঠে।

এই গল্পে আমরা শিখতে পারি, খিজির যেথায় অবস্থান করে, সেথায় এমন একটা এনভায়রনমেন্ট সৃষ্টি হয় এমন একটা দরজা খুলে যায়, যেটা আমরা আমাদের এই ডিমেনশনের নলেজে দ্বারা এক্সপ্লেইন করতে পারি না, এমনি এনভিরনমেন্টের কথা সূরা কাহাফে অন্য জায়গাতেও আমরা পাই!
পাই হচ্ছে কাহাফের যুবকের ঘটনায়, খেয়াল করে দেখুন, যখন কাহাফের যুবকগুলো আল্লাহ ঘুম পারলো, কি ভাবে পারলো?
পরালো কানে আঘাত এনে, প্রশ্ন আসে না এতগুলো মানুষকে কি দিয়ে একসাথে আঘাত আনলেন?
এনেছিলেন তরঙ্গের ঢেউ দ্বারা!
সহজ ভাষায় সাউন্ড ওয়েভ দ্বারা!

সাথে এও বলেন যে, তারা সেই এনভায়রনমেন্ট এতো অদ্ভুত ভাবে ঘুমিয়ে ছিল যে, যে কেউ তাদের দেখলে ভয়ে পালিয়ে আসতো!
আবারো প্রশ্ন!
ঘুমন্ত মানুষ দেখে মানুষ কেন পালিয়ে আসবে?
বেশ কিছুদিন আগে, ফোর্থ ডিমেনশনের একটা সিমুলেশন দেখেছিলাম, সেখানে দেখতে পাই যে, আমরা যখন কোনো অবজেক্টকে থ্রি ডিমেনশন থেকে ফোর্থ ডিমেনশনে দেখার চেষ্টা করি, তখন তাদের শরীর বিকৃত হয়ে পরে, চেহারা উলটা পালটা হয়ে যায়, মোটকথা দূর থেকে সব কিছু প্রচণ্ড ভয়ংকর লাগে!

পাশাপাশি এই এনভায়রনমেন্ট সম্পর্কে আরো বলেন, বলেন যে সেথায় এমন এক এনভায়রনমেন্ট তৈরী হয়েছিল, যেথায় দেখে মনে হতো যে, সূর্য যখন উঠছে তখন তা সাঁই করে ডানদিকে দিয়ে চলে যাচ্ছে, আবার যখন তা নামছে তখন তা হে তা বা দিকে দিয়ে সাঁই করে চলে যাচ্ছে!
একবার ভাবুনতো পৃথিবীর কোনো জায়গায় এই ঘটনাটা ঘটে বা ঘটতে পারে?
পৃথিবীর কোনো জায়গায় সূর্যু শুধু তাদের জন্যই উঠার সময় ডান দিক দিয়ে টার্ন করবে, আবার নামার জন্য তাদের জন্যই শুধু বা দিক দিয়ে টার্ন করবে, একটা খাতা কলম নিয়ে স্কেচ করার চেষ্টা করেন, পারবেন না!

হযরত মুসা আ. আর খিজির আ. এর কাহিনী - Islami Lecture
হযরত মুসা আ. আর খিজির আ. এর কাহিনী – Islami Lecture

বিষয়টা তখনি বুঝতে পারবেন যখন অপটিক্যাল ফাইবারের কনস্পেট কি ভাবে কাজ করে বুঝতে পারবেন, কাহাফের যুবকেরা এমন একটা রিয়ালিটির ভিতর ছিল, কিংবা এমন একটা এনভিরনমেন্টের ভিতর ছিল, যা তাদের আসে পাশের বাতাসের ঘনত্বে পরিবর্তন এনেছিল, যা ডিফারেন্ট রিফ্রেক্টিভে ইনডেক্স তৈরি করছিলো, অর্থাৎ যা একটা প্রিসমের মতো বিহেভ করছিলো এবং তা আলোকে বেন্ড করছিলো!

বুয়েটের এস পি মজুমদার স্যার একবার বুঝিয়েছিলেন, এক্সাক্টলি এই প্রিন্সিপাল ব্যবহার করেই অপটিক্যাল ফাইবার ফাংশন করে, আলোর রোশনি আসার পথে ডিফারেন্ট রিফ্রেক্টিভ ইনডেক্সের কারণে ইন্টার্নালি বেন্ড করে, অতঃপর তা বাড়ি খেয়ে ডানদিকে সাঁই টার্ন করে, আবার যাওয়ার পথে বাড়ি খেয়ে বাম দিকে টার্ন করে!
আমার মনে হয়, যখনই দৃশ্য আর অদৃশ্যের পর্দা মাঝের সেই দরজা খোলা হয়, তখনি এধরণের সুপারনেচারাল এনভায়রনমেন্ট আমরা এক্সপেরিয়েন্স করি।

মুসা আ. এক্সপেরিয়েন্স করেছিলেন আর এবার এক্সপেরিয়েন্স করলো কাহাফের ছেলে গুলো।
একটু ঠান্ডা মাথায় যদি চিন্তা করি, এই দরজা কিন্তু আমাদের জন্য নতুন কিছু না, কারণ আমরা জানি এমন দরজা আছেই, কারণ এই দরজা ব্যবহার করেই তো, হজরত আদম দুনিয়াতে এসেছিলেন, এই দরজা ব্যবহার করেই তো, হজরত ইদ্রিস চতুর্থ আসমানে গমন করেছিলেন, কিংবা এই দরজা ব্যবহার করেই তো, প্রতিদিন কোটি কোটি ফেরেস্তারা উঠা নামা করছে!

এই বিষয়ে সূরা হিজড়ে ১৪- ১৫ আয়াতে, একটা ইন্টারেস্টিং রেফারেন্স পাওয়া যায়,
“আমি যদি তাদের জন্য আসমানের কোন দরজা খুলে দেই আর তাতে তারা যদি আরোহণ করতে থাকত, তবুও তারা বলত
‘আমাদের চোখকে বাঁধিয়ে দেয়া হয়েছে, আমাদের উপর যাদু করা হয়েছে।’

وَلَوْ فَتَحْنَا عَلَيْهِم بَابًا مِّنَ السَّمَاءِ فَظَلُّوا فِيهِ يَعْرُجُونَ
যদি আমি ওদের সামনে আকাশের কোন দরজাও খুলে দেই আর তাতে ওরা দিনভর আরোহণ ও করতে থাকে।
لَقَالُوا إِنَّمَا سُكِّرَتْ أَبْصَارُنَا بَلْ نَحْنُ قَوْمٌ مَّسْحُورُونَ
তবুও ওরা একথাই বলবে যে, আমাদের দৃষ্টির বিভ্রাট ঘটানো হয়েছে না বরং আমরা যাদুগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।
[সূরা হিজর:১৪-১৫]

আমরা জানতে পারি এই দরজার দুটো ওয়ে আছে, একটা উর্ধজগতে আরেকটা এই জগতে, এই জগতে মুভ করার জন্য এই দরজা অ্যাকসেস করেছিল এমন আরেকজন ব্যক্তির কথা আমরা কুরআনে পাই, সূরা নামলে ৪০ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তার ব্যাপারে আমাদেরকে জানান, বলেন যে তিনি টাইম স্টপ করে সাবার সিংহাসন হাজার কিলোমিটার দূর থেকে চোখের নিমিষে নিয়ে এসেছিলেন!

قَالَ الَّذِي عِندَهُ عِلْمٌ مِّنَ الْكِتَابِ أَنَا آتِيكَ بِهِ قَبْلَ أَن يَرْتَدَّ إِلَيْكَ طَرْفُكَ ۚ فَلَمَّا رَآهُ مُسْتَقِرًّا عِندَهُ قَالَ هَـٰذَا مِن فَضْلِ رَبِّي لِيَبْلُوَنِي أَأَشْكُرُ أَمْ أَكْفُرُ ۖ وَمَن شَكَرَ فَإِنَّمَا يَشْكُرُ لِنَفْسِهِ ۖ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ رَبِّي غَنِيٌّ كَرِيمٌ
কিতাবের জ্ঞান যার ছিল, সে বলল, আপনার দিকে আপনার চোখের পলক ফেলার পূর্বেই আমি তা আপনাকে এনে দেব। অতঃপর সুলায়মান যখন তা সামনে রক্ষিত দেখলেন, তখন বললেন এটা আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ, যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করেন যে, আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, না অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং যে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে জানুক যে, আমার পালনকর্তা অভাবমুক্ত কৃপাশীল।
[সূরা নমল:৪০]

তারমানে এই কনস্পেট গুলো কোনো ফেন্টাসি না এগুলো রিয়ালিটি!
তাই বলছি নেক্সট টাইম যখন কাহাফ যখন পড়বেন, জাস্ট গণহারে পরে যাবেন না, প্রতিটা আয়াতে থেমে একটু চিন্তা করে পড়বেন, এই চিন্তা করাটা ইম্পর্ট্যান্ট কারণ, আমরা এমন একটা সময় দিয়ে যাচ্ছি, যেখানে আমাদেরকে ইন্টেলেকচুয়ালি পেরালাসিড করে ফেলার চেষ্টা চলছে।
আমরা ইদানিং চিন্তা করতে ভুলে যাচ্ছি!

জানি ইনফরমেশন গুলো নতুন, ইনফরমেশন গুলো হজম করতে একটু কষ্ট হচ্ছে, তবে ভয় নাই, কারণ এগুলো আকিদা গত বিষয় না, তবে শেয়ার করে রাখলাম কারণ সময়টা খারাপ, ডেঞ্জারাস একটা যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি, হাদিস শরিফে এসেছে
দাজ্জাল যখন আসবে তিনি প্রায় প্রতিটা শহরে ইন্সটেন্টলি ট্র্যাভেল করে বেড়াবে, ভয় হয় সে না আবার এই টেকনোলজি নিয়ে এসে মানুষকে ভড়কে দেয়, তাই একটু প্রস্তুত থাকা।

তার অনুসারীরা যদি এসে আবার সাফাই গাওয়া শুরু করে যে, দেখো একজন খোদাই তো এসব করতে পারে, অতএব তাকেই খোদা মান, তখন এটলিস্ট আমরা যেন বলতে পারি, হাহ! এটা আর এমন কি!
এই বিষয়ে তো আমার রব অনেক আগেই আমাদেরকে জানিয়ে রেখেছেন!

লিখেছেন

Picture of সামিউল হক

সামিউল হক

জ্ঞানীদের বাণী হলো বিশ্বাসীদের হারানো সম্পদ, তা সে যেখানেই খুজে পাক"[তিরমিজি ২৬৮৭]
আমি খুঁজে বেড়াচ্ছি

Visit all other posts by this author
জ্ঞানীদের বাণী হলো বিশ্বাসীদের হারানো সম্পদ, তা সে যেখানেই খুজে পাক”[তিরমিজি ২৬৮৭]
আমি খুঁজে বেড়াচ্ছি

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture