ফ্রিজে থাকা লাশের হিসেব কবরে যেভাবে নেওয়া হবে

মৃত্যু অবধারিত সত্য। জন্মগ্রহণের পর একদিন প্রত্যেককেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে ইরশাদ করেছেন, প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তোমরা নিজ নিজ কাজের প্রতিফল সম্পূর্ণভাবেই কিয়ামতের দিন পাবে। (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫, সুরা আনকাবুত : ৫৭)
হাদিসে এসেছে, কেউ মৃত্যুবরণ করলে দ্রুত তার গোসল, কাফন, জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা মৃত ব্যক্তিকে তাড়াতাড়ি দাফন করবে। যদি সে নেক ব্যক্তি হয়, তবে তাকে তোমরা তার কল্যাণের নিকটবর্তী করে দিলে। আর যদি অন্য কিছু হয়, তবে মন্দকে তোমাদের কাঁধ থেকে সরিয়ে দিলে। (সহিহ বোখারি : ১৩১৫)
তবে বাস্তবে দেখা যায়, প্রবাসে মৃত্যুবরণকারী অনেককে দেশে নিয়ে আসতে সময় লাগে মাসের পর মাস। এ কারণে মৃতদেহ ফ্রিজিং করে রাখতে হয়। তখন প্রশ্ন ওঠে ফ্রিজে রাখা অবস্থায় মৃতের কবরের হিসাব শুরু হবে, নাকি কবর দেওয়ার পর থেকে?
এ বিষয়ে প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, মানুষ মৃত্যুবরণের পর থেকে কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সময়কে আলমে বারযাখ বলা হয়। এই বারযাখের জীবনে মৃত ব্যক্তির আত্মা আল্লাহর হুকুমে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং প্রশ্নোত্তর হয়। কেউ আগুনে পুড়ে মারা যাক বা বন্য প্রাণীর দ্বারা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হোক, তার অবস্থান যেখানেই হোক না কেন আল্লাহ তায়ালা জানেন এবং তিনি সেই অনুযায়ী সওয়াল-জওয়াব নেবেন।
সুরা নাহলে আল্লাহ তায়ালা বলেন, অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহূর্তও বিলম্বিত কিংবা ত্বরান্বিত করতে পারবে না। (আয়াত : ৬১)
সুরা আবাসাতে রাব্বুল আলামিন বলেন, সেদিন মানুষ নিজের ভাই, নিজের মা, নিজের পিতা, নিজের স্ত্রী ও সন্তানাদি থেকে পালাবে। তাদের মধ্যে প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর সেদিন এমন সময় এসে পড়বে, সে নিজেকে ছাড়া আর কারও প্রতি লক্ষ্য করার মতো অবস্থা থাকবে না ( আয়াত : ৩৪-৩৭)
তবে লাশ ফ্রিজে রাখার অবস্থায় হিসাব শুরু হবে নাকি কবর দেওয়ার পর এ ব্যাপারে কোরআন-হাদিসে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। এটি গায়েবের জগত, যা কেবল আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন।
উল্লেখ্য, মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আলমে বারযাখের জীবন শুরু হয়। লাশ ফ্রিজে থাকুক বা মাটিতে, আল্লাহর কাছে কিছুই অজানা নয়। তাই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছেই।