‘আযবা‘ নামে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি উট ছিলো। উটের দৌড় প্রতিযোগিতায় এই উটকে কেউ হারাতে পারতো না।
অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে যতো উটদৌড় প্রতিযোগিতা হয়েছিলো, সবগুলোতেই জিতেছিলো ‘আযবা’।
কিন্তু, একবার এক আরব বেদুইনের একটি উট আযবাকে হারিয়ে দেয়!
সাহাবীদের চক্ষু চড়কগাছ!
তারা যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কীভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উট হেরে গেলো?
এটা না সেই রাসূলের উট?
এটা না সেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী উট?
উটদৌড়ের সময় তাদের সমর্থন ছিলো, বিশ্বাস ছিলো রাসূলের উট জিতবে।
কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে হঠাৎ একদিন যখন উটটি হেরে গেলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বুঝতে পারলেন সাহাবীদের মনোঃকষ্ট।
মদীনার রাষ্ট্রনেতা, সবার সবচেয়ে পছন্দের হওয়া সত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর প্রিয় উটের পরাজয় মেনে নেন। শুধু নিজেই মেনে নেন এমন না, তাঁর সাহাবীদেরকেও শেখান কীভাবে পরাজয় মেনে নিতে হয়।
তিনি বলেন— “দুনিয়ায় সবকিছুই উত্থানের পর পতন আছে।”
(সহীহ বুখারী: ২৮৭২)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নেতৃত্বগুণ থেকে আমাদের শেখার আছে।
কর্মীরা সবসময় চায় তাদের নেতা জিতুক, তারা যাকে পছন্দ করে সে জিতুক। মাঝেমধ্যে জিতবে, মাঝেমধ্যে হেরে যাবে।
যদি হেরে যায়, সেই ফলাফলে কর্মীদের মন খারাপ হবে। এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু, কর্মীদের মনোবল কীভাবে বাড়াতে হবে, তাদেরকে কীভাবে সান্ত্বনা দিতে হবে এই শিক্ষাও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিয়েছেন।
আর এটা শুধু রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ক্ষেত্রেই না। আমরা প্রত্যেকেই স্ব-স্ব এরিনায় নেতা। আমাদেরকেও বুঝাতে হবে, মাঝেমধ্যে পরাজয় মেনে নেয়ার মানসিকতা রাখতে হবে।
জীবনে সবসময় আপনি যা চান তা হবে না। সবসময় জিতবেন না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উট ‘আযবা’র ঘটনাটি আমাদেরকে সেই শিক্ষা দেয়— দুনিয়ার তো এটাই নিয়ম, একদিন জিতবো, একদিন হারবো। সবকিছুরই উত্থান-পতন আছে।