হিন্দু বাড়িতে হামলা!

মাঝেমধ্যে শুনা যায় কোনো এক অঞ্চলে হিন্দুদের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে, হিন্দুদের ফসল কেটে নেওয়া হয়েছে, তাদের সম্পত্তি দখল করা হয়েছে। এই ধরণের বহুলাংশ ঘটনাগুলোর কারণ রাজনৈতিক; ধর্মীয় নয়। রাজনীতিবিদরা ফায়দা হাসিলের জন্য এসব ঘটনার পেছনে ইন্ধন দেন।

আপনার এলাকা মুসলিমপ্রধান। এলাকায় মাত্র দুটো হিন্দু বাড়ি।
‘মুসলিম এলাকায় হিন্দু বাড়ি থাকবে কেনো?’
এই যুক্তিতে কি আপনি হিন্দু বাড়ি পুড়িয়ে দিতে পারবেন?
অথবা
‘হিন্দুরা চাষাবাদ করে খাবে আর মুসলিম হয়ে শুধু দেখবো?’
এই যুক্তিতে কি আপনি রাতের বেলা এক হিন্দুর জমির সব ফসল কেটে নিয়ে আসতে পারবেন?
অথবা
আপনার দোকানে এক হিন্দু কর্মচারী আছে, এখন তাকে দিয়ে তার সাধ্যের অধিক কাজ করাবেন?

কোনো মুসলমান কি তার ধর্মীয় আবেগ থেকে এগুলো করতে পারবে?
ইসলাম কি তাকে সমর্থন করবে?
উত্তর হলো- না।

একজন হিন্দু ‘হিন্দু’ বলেই অন্যায়ভাবে আপনি তার সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে পারবেন না। সামাজিক কোনো কাজকর্ম, লেনদেনে তার প্রতি যুলুম করতে পারবেন না। যে ইসলামের নামে দম্ভ করে আপনি তার অধিকার ক্ষুণ্ন করতে চাচ্ছেন, সেই ইসলাম আপনাকে এই অনাধিকার চর্চার অধিকার দিচ্ছে না।

মুসলিম সমাজে বসবাসকারী চুক্তিবদ্ধ অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অধিকার ইসলাম নিশ্চিত করেছে। তাদের অধিকার সম্পর্কে নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“যে ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ সম্প্রদায়ের কোনো ব্যক্তির উপর…
যুলুম করবে,
তার প্রাপ্য কম দিবে,
সামর্থ্যের বাইরে কিছু করতে বাধ্য করবে,
তার সন্তুষ্টিমূলক সম্মতি ছাড়া তার কাছ থেকে কিছু গ্রহণ করবে
তাহলে আমি কিয়ামতের দিন তার বিপক্ষে বাদী হবো।”
[সুনানে আবু দাউদ: ৩০৫২]

নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিয়ামতের দিন কার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন?
মুসলিম নামধারী আমার-আপনার বিরুদ্ধে; যদি আমরা কোনো অমুসলিমের উপর যুলুম করি। যে কাজটিকে মনে করছি মুসলিম হবার কারণে আমার অধিকার (অর্থাৎ হিন্দুর সম্পত্তি আত্মসাৎ), সেই কাজের ফল কি চিন্তা করছেন?
স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বিরুদ্ধে থাকবেন!

ইসলাম যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়, তখন অমুসলিমদের সামাজিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার ব্যাপারেও সক্রিয়। ইসলামি রাষ্ট্রে যুক্তিবদ্ধ অমুসলিমদের কোনো প্রকার যুলুম যাতে না হয়, সেদিকেও ইসলাম সজাগ। শুধু সজাগই না, অমুসলিমদের সাথে যুলুম করা হলে স্বয়ং নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিয়ামতের দিন তার বিপক্ষে বাদী হবেন!

ইসলামের সৌন্দর্য

লিখেছেন

আরিফুল ইসলাম (আরিফ)

পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার কলম তাকে উজ্জীবিত করেছে স্বীয় বিশ্বাসের প্রাণশক্তি থেকে।
অনলাইন এক্টিভিস্ট, ভালোবাসেন সত্য উন্মোচন করতে এবং উন্মোচিত সত্যকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে।

লেখকের অন্যান্য সকল পোষ্ট পেতে ঘুরে আসুন

পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার কলম তাকে উজ্জীবিত করেছে স্বীয় বিশ্বাসের প্রাণশক্তি থেকে।
অনলাইন এক্টিভিস্ট, ভালোবাসেন সত্য উন্মোচন করতে এবং উন্মোচিত সত্যকে মানুষের কাছে তুলে ধরতে।

Exit mobile version