হযরত ওমর (রা:) এর হত্যাকারী কে ছিলেন

হযরত উমর (রা:) এর হত্যাকারী কে ছিলেন?
হত্যার উদ্দেশ্য কী ছিলো?
হযরত ওমর (রা:) এর হত্যাকারী ছিল ইরান থেকে আসা একজন অগ্নিপূজক। নাম আবু লুলু ফিরোজ। কিন্তু সে কেন ওমর (রা:) কে হত্যা করেছে, তা ইতিহাসবিদরা উল্লেখ করতে পারেন নি। কারণ সে ওমর (রা:) কে হত্যার পর পর ই আত্মহত্যা করে।

হযরত ওমর ফারুক ( রা:) হিজরী ২৩ সালে ২৪ যিলহজ্জ্ব তারিখে বুধবার মসজিদে নববীতে ফজরের নামাযে ইমামতি করার জন্য দাড়ালে হযরত মুগিরা ইবনে শোবা (রা:) এর একজন দাস আবু লুলু বিষাক্ত তরবারী দ্বারা হযরত ওমর ফারুক (রা:) কে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর ২৭ যিলহজ্জ্ব তিনি শাহাদাত বরণ করেন। হযরত ওমর (রা:) কে মসজিদে নববীতে হযরত আবু বকর (রা:) উনার বামপাশে দাফন সম্পন হয়।

কিন্তু ইতিহাসবিদরা বেশ কিছু কারণ অনুমান করেন। প্রথমত আবু লুলু ফিরোজ একজন বড় কাঠমিস্ত্রি ছিল। সে কাঠে কারুকার্য করতে পারতো। মদীনায় সে যুদ্ধবন্দী হিসেবে আসার পর তার তাকে মুগিরা বিন শুবা রা. এর নিকট দেয়া হয়। তিনি ফিরোজের নিকট হতে প্রতিদিন প্রায় ২২৩ টাকা করে কারুকার্য বাবদ নিতেন। যেমন, কর্মীরা প্রতিদিন কাজ করে উপার্জন করার পর মালিককে একটা নির্দিষ্ট অংশ দেয় তেমন।

কিন্তু ফিরোজ এটা মেনে নিতে পারে নি। সে ওমর রা. এর নিকট অভিযোগ করে। তখন ওমর (রা:) বিস্তারিত শুনে বললেন, তোমার উপর তো কোনো অন্যায় করা হচ্ছে না। প্রাপ্য অনুযায়ী ই তো নেয়া হচ্ছে। এটা শুনে ফিরোজ মনক্ষুণ্ণ হয়ে চলে যায়। তারপরও ওমর (রা:) মুগিরা রা. নিকট উসুলকৃত পরিমাণ কমিয়ে দেয়ার আবেদন করেন।

দুই-চারদিন দিন পর ফিরোজকে ওমর রাযিয়াল্লাহু তায়ালা দেখে বললেন, তুমি নাকি ভালো ধরনের চাক্কি বানাতে পারো?
আমাকে কি বানিয়ে দিবে?

সে তখন আশ্চর্য ভঙ্গিতে বলে উঠলো, আমি এমন চাক্কি বানাবো পূর্ব এবং পশ্চিমে বসবাসকারী সকলেই তা দেখতে পারবে।

ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ছিলেন বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান। তাই তিনি তার আশেপাশের সাথে সঙ্গীদের বললেন, এই গোলাম আমাকে হুমকি দিয়ে গেল। তা সত্ত্বেও তিনি তাকে গ্রেফতার করে কিছু করার চেষ্টা করেন নি। কারণ তাকে গ্রেপ্তার করা কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ ছিল না।

এটা ছিল একটি ঘটনা। কিন্তু ইতিহাসবিদেরা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ওমর (রা:) কে হত্যা করা হয়েছে বলে সাব্যস্ত করতে চান না।

এর আরেকটি কারণ হতে পারে, মদিনায় সেসময় পারস্যের শাহজাদা হরমুজানের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক ছিল। ইতিপূর্বে তারা অগ্নিপূজক ছিল বলে সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়। তাই ধারণা করা হয় পারসিক রাজবংশের ইশারায় ওমর (রা:) কে হত্যা করা হয়।

বিস্তারিত আপনি আরো জানতে চাইলে “মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস” নামক বইটি পড়তে পারেন। তা ছাড়া আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থেও পাবেন।

Exit mobile version