Writing

ফেরার পথে

মনে করেন সমাজের আপনি লম্পট, স্বৈরাচারী, অত্যাচারী, ইসলাম বিদ্বেষী একজন জঘন্য অসৎগুণে ভরপুর ব্যক্তি। সমাজের অলিগলির কেউ আপনাকে দেখতে পারেনা। তবে আপনি যতই খারাপ হোননা কেন, এ ব্যাপারে সমাজে কারোই মাতা ব্যথা নাই। হঠাৎ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আপনাকে কোন মাধ্যমে হেদায়েতের অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন। যেহেতু আপনি হেদায়েতের অন্তর্ভুক্ত, সেহেতু আপনি সেই আগের আপনি থাকবেন না এটাই স্বাভাবিক। আস্তে আস্তে নম্রতার চুড়ান্ত লেভেলে যাত্রা হবে আপনার। সমাজে এখন শুরু আপনাকে নিয়ে মাথা ব্যথা।
এতদিন কোন সমালোচনার পাত্র না হলেও এখন সবার মুখে আপনারই কথা।

১. কি হইছে মামা! কোন বিপদে পড়ছো নাকি?
হঠাৎ এত আল্লাহ ওয়ালা!

২. নিশ্চিত এই শয়তানটা নতুন কোন ফন্দি আঁটে, শয়তানি করতে এখন আল্লাহ ওয়ালার বেশ ধরছে।

৩. দোস্ত কি হইছে তোর?
ছ্যাঁকা ট্যাঁকা খাইছস নাকি?
এমন দরবেশের বেশ ধরছস যে?
দাড়ি তো বড় হইছে?
দেবদাস হয়ে গেলি নাকি?আরে এরকম হওয়া লাগে?
এক মেয়ে গেছে যখন কত মেয়ে আসবে, মেয়ে কি দেশে অভাব পড়েছে?

৪. তুমি তো আগে বেপর্দায় চলাচল করতা। এখন এরকম আপাদমস্তক ঢেকে চলাচল কর। কি ব্যাপার কোনো দলে টলে যোগ দিয়েছ নাকি?
নাকি ভন্ডামি?

৫. তুমি না আগে গানের পরী ছিলা?
সারাক্ষণ তোমার কানে হেডফোন থাকত। ব্যাগে তো দেখি এখনো হেডফোন আছে। বুঝছি বোরখার তলে শয়তানি। পুরনো অভ্যাস কি আর যায়!

৬. কি ব্যাপার হঠাৎ নামাজ কালাম পড়া স্টার্ট করেছ?
আগে তো নামাজের ধারের কাছেও ঘেষতে দেখি নি?
লোকের কাছে নামাজি দেখাতে চাও?

৭. তুমি না আগে রিলেশন করতা?
আর এখন তুমি কোন মুখে বল বিয়ের আগে প্রেম হারাম?

৮. দু’দিন হলো না নামাজ ধরেছো, তারই মধ্যে ফতোয়া দেয়া শুরু হয়ে গেল। দেখা যাবে কয়দিন টিকবে তোমার এই ভালো থাকা।

৯. আজমল সাহেব ব্যাপার কি বলুন তো?
এত বড় বড় অফার আপনি ছেড়ে দিচ্ছেন?
আগে তো দিব্বি নিতেন?
এখন ছেড়ে দিচ্ছেন কেন?

১০. এত বড় বিয়ের অফারটা ছেড়ে দিলি?
তুই না এমন স্মার্ট পয়সাওয়ালা স্টাব্লিসড ছেলে চাইতি?

১১. দোস্ত বিড়িতে একটা টান দে। আগে না কত খাইতি আমাদের সাথে। আর এখন কি ঢং শুরু করলি?

১২. কিরে চল না! কক্সবাজার থেকে ঘুরে আসি! এতবার বলা লাগে তোকে?
আগে তো যাইতি আমাদের সাথে, এখন কি হইছে?

আপনার চারপাশে এমন কিছু লোক আছে যারা আপনার এই পরিবর্তন কোন ভাবে মেনে নিতে পারবে না। কারণ তারা ভালো কিছুতে আশা বাদী নয়। তাদের কাজ হচ্ছে অন্যর পিছনে লেগে থাকা। বিশেষ করে দ্বীনে ফেরা কোন ব্যাক্তির দিকে এমনভাবে লেগে থাকে, ছোট্ট কোন ত্রুটি যদি পাই, আঙ্গুল দেখিয়ে বলবে তুমি না ভালো হয়ে গেছো?
তাহলে এটা ওটা করলে কি করে?
ভণ্ডামি করার কি জায়গা পাও না! আবার এই পরিবর্তনে অনেকে জঙ্গি বলে সম্মোধন করবে।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন →
তোমাদের কেউ তার হারানো মাল পুনঃপ্রাপ্তিতে যতটা আনন্দিত হয়, তোমাদের কারো তওবায় আল্লাহ তায়ালা তার চেয়ে অধিক আনন্দিত হয়, অধিক খুশি হয়।
[ জামে তিরমিযি হাদীস নং ২৪৯৯]

কোন ব্যাক্তির পরিবর্তনের কারণে স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা কতটা খুশি হচ্ছেন। অথচ আমরা কারও পরিবর্তন মেনে নিতে পারিনা। সমাজের পরিবর্তিত ব্যক্তি নিয়ে হাসাহাসিতে মেতে পড়ি। তার পূর্বের গুনাহ নিয়ে সমালোচনা করি। অথচ এই কাজটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বিপরীত।

লিখেছেন

হে আল্লাহ সেই সম্মানোত্তরে অন্তর্ভুক্ত করে দাও যে সম্মান তুমি দিয়েছ তোমার প্রিয় মুমিনদের

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture