তাশাহুদে আঙ্গুল বারবার নাড়াতে হবে না ১বার ইশারা করতে হবে

তাশাহুদে আঙ্গুল বারবার আঙ্গুল নাড়াতে হবে?
নাকি স্রেফ মাত্র একবার ইশারা করতে হবে?

এই বিষয়ে তিনটি মাযহাব রয়েছেঃ—

প্রথম মাযহাবঃ- আঙ্গুল অর্ধনমিত অবস্থায় স্থির থাকবে৷
এটা মালেকীদের মাযহাব৷

আর তাদের দলীলঃ—
ﺣَﺪَّﺛَﻦَﺍ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦُ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺍﻟﻨُّﻔَﻴْﻠِﻲُّ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋُﺜْﻤَﺎﻥُ، – ﻳَﻌْﻨِﻲ ﺍﺑْﻦَ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ – ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋِﺼَﺎﻡُ ﺑْﻦُ ﻗُﺪَﺍﻣَﺔَ، – ﻣِﻦْ ﺑَﻨِﻲ ﺑُﺠَﻴْﻠَﺔَ – ﻋَﻦْ ﻣَﺎﻟِﻚِ ﺑْﻦِ ﻧُﻤَﻴْﺮٍ ﺍﻟْﺨُﺰَﺍﻋِﻲِّ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭَﺍﺿِﻌًﺎ ﺫِﺭَﺍﻋَﻪُ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﻓَﺨِﺬِﻩِ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﺭَﺍﻓِﻌًﺎ ﺃُﺻْﺒُﻌَﻪُ ﺍﻟﺴَّﺒَّﺎﺑَﺔَ ﻗَﺪْ ﺣَﻨَﺎﻫَﺎ ﺷَﻴْﺌًﺎ .
মালিক ইবনু নুমাইর আল-খুযাঈ (রহঃ) তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাত তাঁর ডান হাত ডান উরুর উপর রেখে শাহাদাত আঙুল অর্ধনমিত অবস্থায় উচিয়ে রাখতে দেখেছি।
(আবু দাউদ হাঃ নং ৯৯১)

তাহকিকঃ— হাদীসটিকে শায়েখ আলবানী রহঃ যঈফ বলেছেন এবং শায়খ শুআইব আরনাউত এ হাদীসের বিভিন্ন বর্ণনা একত্রিত করে বলেন: ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ ﻟﻐﻴﺮﻩ، ﺩﻭﻥ ﻗﻮﻟﻪ : ﻗﺪ ﺣﻨﺎﻫﺎ ﺷﻴﺌﺎً “আঙ্গুল উঠিয়ে সামান্য নোয়ানো অবস্থা বা অর্ধনমিত করে রাখার অংশ ব্যতীত হাদীসটি সহীহ লিগইরিহী”। (মুসনাদে আহমাদ: ১৫৮৬৬ নম্বর হাদীসের তাহকীকে)

দ্বিতীয় মতঃ— তাওহীদের কালেমা পড়ার সময়ে একবার ইশারা করতে হবে৷
এটা হানাফী এবং শাফেঈ উভয়ের মাযহাব৷
তাদের মতের পক্ষে অনেকগুলো দলীল রয়েছে ৷ যেমনঃ —

ﺃَﺧْﺒَﺮَﻧَﺎ ﺯَﻛَﺮِﻳَّﺎ ﺑْﻦُ ﻳَﺤْﻴَﻰ ﺍﻟﺴِّﺠْﺰِﻱُّ، – ﻳُﻌْﺮَﻑُ ﺑِﺨَﻴَّﺎﻁِ ﺍﻟﺴُّﻨَّﺔِ ﻧَﺰَﻝَ ﺑِﺪِﻣَﺸْﻖَ ﺃَﺣَﺪُ ﺍﻟﺜِّﻘَﺎﺕِ – ﻗَﺎﻝَ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦُ ﺑْﻦُ ﻋِﻴﺴَﻰ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻧْﺒَﺄَﻧَﺎ ﺍﺑْﻦُ ﺍﻟْﻤُﺒَﺎﺭَﻙِ ﻗَﺎﻝَ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣَﺨْﺮَﻣَﺔُ ﺑْﻦُ ﺑُﻜَﻴْﺮٍ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻧْﺒَﺄَﻧَﺎ ﻋَﺎﻣِﺮُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﺍﻟﺰُّﺑَﻴْﺮِ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻗَﺎﻝَ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺇِﺫَﺍ ﺟَﻠَﺲَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺜِّﻨْﺘَﻴْﻦِ ﺃَﻭْ ﻓِﻲ ﺍﻷَﺭْﺑَﻊِ ﻳَﻀَﻊُ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﻋَﻠَﻰ ﺭُﻛْﺒَﺘَﻴْﻪِ ﺛُﻢَّ ﺃَﺷَﺎﺭَ ﺑِﺄُﺻْﺒُﻌِﻪِ
আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দুই অথবা চার রাকাতে বসতেন। তাঁর উভয় হাত উভয় উরুর উপর রাখতেন। তার পর তাঁর আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন।
(মুসলিম শরীফ: ১১৯৫, সূনানে নাসাঈ-হা/১১৬৪, ১১৬৩, ১২৬৬-১২৭২)

ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺴَﺪَّﺩٌ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺑِﺸْﺮُ ﺑْﻦُ ﺍﻟْﻤُﻔَﻀَّﻞِ، ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺻِﻢِ ﺑْﻦِ ﻛُﻠَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮٍ، ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﺖُ ﻷَﻧْﻈُﺮَﻥَّ ﺇِﻟَﻰ ﺻَﻼَﺓِ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻛَﻴْﻒَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓَﺎﺳْﺘَﻘْﺒَﻞَ ﺍﻟْﻘِﺒْﻠَﺔَ ﻓَﻜَﺒَّﺮَ ﻓَﺮَﻓَﻊَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﺣَﺘَّﻰ ﺣَﺎﺫَﺗَﺎ ﺑِﺄُﺫُﻧَﻴْﻪِ ﺛُﻢَّ ﺃَﺧَﺬَ ﺷِﻤَﺎﻟَﻪُ ﺑِﻴَﻤِﻴﻨِﻪِ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺃَﻥْ ﻳَﺮْﻛَﻊَ ﺭَﻓَﻌَﻬُﻤَﺎ ﻣِﺜْﻞَ ﺫَﻟِﻚَ ﻗَﺎﻝَ ﺛُﻢَّ ﺟَﻠَﺲَ ﻓَﺎﻓْﺘَﺮَﺵَ ﺭِﺟْﻠَﻪُ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻭَﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻋَﻠَﻰ ﻓَﺨِﺬِﻩِ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻭَﺣَﺪَّ ﻣِﺮْﻓَﻘَﻪُ ﺍﻷَﻳْﻤَﻦَ ﻋَﻠَﻰ ﻓَﺨِﺬِﻩِ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻭَﻗَﺒَﺾَ ﺛِﻨْﺘَﻴْﻦِ ﻭَﺣَﻠَّﻖَ ﺣَﻠَﻘَﺔً ﻭَﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﻫَﻜَﺬَﺍ ﻭَﺣَﻠَّﻖَ ﺑِﺸْﺮٌ ﺍﻹِﺑْﻬَﺎﻡَ ﻭَﺍﻟْﻮُﺳْﻄَﻰ ﻭَﺃَﺷَﺎﺭَ ﺑِﺎﻟﺴَّﺒَّﺎﺑَﺔِ ‏( ﺭَﻭَﺍﻩ ﺍﺑُﻮْ ﺩَﺍﻭﺩ ﻓِﻰْ ﺑَﺎﺏِ ﻛَﻴْﻒَ ﺍﻟْﺠُﻠُﻮﺱُ ﻓِﻲ ﺍﻟﺘَّﺸَﻬُّﺪِ ‏)
হযরত ওয়াইল বিন হুজর রা. বলেন: আমি মনে মনে বললাম: অবশ্যই আমি রসূলুল্লাহ স.-এর নামায দেখব। (লক্ষ্য করলাম) রসূলুল্লাহ স. কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে তাকবীর বললেন; আর তখন উভয় হাত কান বরাবর উঠালেন। অতঃপর ডান হাত দ্বারা বাম হাত ধরলেন। রুকু করার সময়ে আবারও তেমনিভাবে হাত উঠালেন। এরপর তিনি যখন তাশাহহুদের জন্য বসলেন তখন বাম পা বিছিয়ে দিলেন। বাম হাত বাম উরুর ওপর রাখলেন এবং ডান হাতের কনুই ডান উরু থেকে পৃথক রাখলেন। আর কনিষ্ঠা ও অনামিকা আঙ্গুল দু’টি গুটিয়ে বৃদ্ধা ও মধ্যমা আঙ্গুল দ্বারা বৃত্ত তৈরি করলেন এবং শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করলেন।
(আবু দাউদ: ৯৫৭)

উপরের এসকল হাদীসগুলো থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইশারা করার পদ্ধতি হলোঃ— উভয় হাত উভয় উরুর ওপর রেখে অনামিকা ও কণিষ্ঠাঙ্গুল বন্ধ করে মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুল দ্বারা বৃত্ত তৈরী করবে। অতঃপর শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করবে।
আর আবু দাউদের একটা সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে যে,لاَ يُجَاوِزُ بَصَرُهُ إِشَارَتَهُ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দৃষ্টি (শাহাদাত আঙুলের) ইশারাকে অতিক্রম করতো না। (আবু দাউদ,হাদীস নং ৯৯০)
অর্থাৎ ইশারার সময়ে দৃষ্টিও আঙ্গুলের ইশারার দিকে নিবন্ধিত থাকবে।

হানাফী এবং শাফেঈদের দলীল ও যুক্তিঃ—
তাশাহুদের ইশারার সবগুলো সহীহ হাদীসেই “ইশারা” বিষয়টি ﺃَﺷَﺎﺭَ শব্দে অর্থাৎ একবচন শব্দ দ্বারা বর্ণনা করা হয়েছে ৷ এবং সহীহ কোনো হাদীসেই আঙ্গুল নাড়ানোর কথা বলা হয় নাই ৷ সুতরাং “ইশারা” একবার’ই করতে হবে,, বারবার নয়।

কেননা, অন্য হাদীসে রাসুলুল্লাহর সঃ থেকে একবারের অধিক বারবার আঙ্গুল নাড়ানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْحَسَنِ الْمِصِّيصِيُّ، حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ زِيَادٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلَانَ، عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ ذَكَرَ، «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُشِيرُ بِأُصْبُعِهِ إِذَا دَعَا، وَلَا يُحَرِّكُهَا»
হযরত আব্দুল্লাহ বিন যুবাইর রা. বলেন: রসূলুল্লাহ স. দুআ করার (অর্থাৎ, তাশাহহুদ পড়ার) সময়ে আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। তবে তিনি এ সময়ে আঙ্গুল নাড়াতেন না।
( আবু দাউদ, হা/ ৯৮৯, সুনানে নাসাঈ, হা/১২৬৯, সুনানে কুবরা লিল-বায়হাকী, হা/ ২৭৯০)

হাদীসটির স্তর : সহীহ। ইমাম নববী রহঃ বলেন: قَالَ النَّوَوِيُّ إِسْنَادُهُ صَحِيحٌ হাদীসটির সনদ সহীহ ৷৷(তুহফাতুল আহওয়াজীঃ ২/১৫৯) ইবরাহীম বিন হাসান ব্যতীত এ হাদীসের রাবীগণ সবাই-ই বুখারী/মুসলিমের রাবী। আর ইবরাহীম ثقة “নির্ভরযোগ্য”। (তাকরীব: ১৮৮)

ইশারা কখন করতে হবে?
এ ব্যাপারে ইমাম নববী রহ. এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন:
ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺻْﺤَﺎﺑُﻨَﺎ ﻳُﺸِﻴﺮُ ﻋِﻨْﺪَ ﻗَﻮْﻟِﻪِ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺸَّﻬَﺎﺩَﺓِ ﻭَﻳُﺸِﻴﺮُ ﺑِﻤُﺴَﺒِّﺤَﺔِ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻟَﺎ ﻏَﻴْﺮ
“আমাদের(শাফেঈ)ইমামগণ বলেছেন: তাশাহহুদের মধ্যে ‘ইল্লাল্লাহ’ বলার সময়ে শুধু ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করবে; অন্য কোন আঙ্গুল দ্বারা নয়”।
(আল-মিনহায শরহুল মুসলিম: ১/২১৬, হা/২৮১৭ )

মোল্লা আলী ক্বারী রহঃ বলেন:—
وَقَالَ علي القارىء عِنْدَنَا يَعْنِي الْحَنَفِيَّةَ يَرْفَعُهَا عِنْدَ لَا إِلَهَ وَيَضَعُهَا عِنْدَ إِلَّا اللَّهُ
আমাদের নিকটে অর্থাৎ হানাফীদের নিকটে উত্তম হলোঃ লা ইলাহা বলার সময়ে আঙ্গুল উঠাবে এবং ইল্লাল্লাহ বলার সময়ে আঙ্গুল নামিয়ে ফেলবে৷
(মিরকাতুল মাফাতিহঃ ২/৬৬৩ এবং ২/৭২৯ )

সালাফী আলেম আঃ রহমান মুবারকপুরী রহঃ বলেন:—
مَوْضِعُ الْإِشَارَةِ عِنْدَ قَوْلِهِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ لِمَا رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ مِنْ فِعْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
(সুবুলুস সালামে বলা হয়েছে)ইশারা করতে হবে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলার সময়ে কেননা- ইমাম বায়হাকী রহঃ রাসুলুল্লাহ সঃ থেকে এমনটাই বর্ননা করেছেন ৷ (তুহফাতুল আহওয়াজিঃ ২/১৫৯)
উপরোক্ত হাদীস এবং ব্যাখ্যাগুলো থেকে প্রমাণিত হলো যে, তাশাহহুদ পাঠের সময়ে ঈমানের কালেমা অর্থাৎ ﻟَﺎﺇﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ বলার মুহূর্তে ইশারা করতে হবে।

হানাফী এবং শাফেঈদের ব্যাখ্যার দলীলঃ—
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺑْﻦُ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺍﻟْﺤَﻀْﺮَﻣِﻲُّ، ﺛﻨﺎ ﻋُﺒَﻴْﺪُ ﺑْﻦُ ﻳَﻌِﻴﺶَ، ﺛﻨﺎ ﻳُﻮﻧُﺲُ ﺑْﻦُ ﺑُﻜَﻴْﺮٍ، ﻋَﻦْ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺑْﻦِ ﺇِﺳْﺤَﺎﻕَ، ﻋَﻦْ ﻋِﻤْﺮَﺍﻥَ ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺃَﻧَﺲٍ، ﻋَﻦْ ﻣِﻘْﺴَﻢٍ، ﻋَﻦْ ﺧُﻔَﺎﻑِ ﺑْﻦِ ﺇِﻳﻤَﺎﺀَ ﺑْﻦِ ﺭَﺣَﻀَﺔَ ﺍﻟْﻐِﻔَﺎﺭِﻱِّ، ﻗَﺎﻝَ : رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ ” يُشِيرُ بِأُصْبُعِهِ، إِذَا جَلَسَ يَتَشَهَّدُ فِي صَلَاتِهِ ” وَكَانَ الْمُشْرِكُونَ يَقُولُونَ: ” إِنَّمَا يَسْحَرُنَا، وَإِنَّمَا يُرِيدُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ التَّوْحِيدَ “
হযরত খুফাফ বিন ঈমা রা. বলেন: আমি রাসুলুল্লাহ সঃ কে দেখেছি, তিনি যখন সালাতের শেষ বৈঠকে বসে শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করতেন। আর মুশরিকরা তখন বলত: সে তা দিয়ে যাদু করে। (মুশরিকরা এ কথা মিথ্যা বলেছে।) নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সঃ এটা দ্বারা বুঝিয়েছেন তাওহীদ।
(বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং -২৭৯২; তবরানী কাবীর-হা/৪১৭৬; মুসনাদে আহমাদ-হা/৭১৬)

তাহক্বীকঃ—আল্লামা হাইসামী রহ. বলেন, ইমাম আহমদ রহ. এবং বায়হাকী রহঃ হাদীসটি বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। তবরানী তাঁর মু’জামে কাবীরেও বর্ণনা করেছেন। আর এ হাদীসের রাবীগণ সকলেই ﺛﻘﺔٌ বা নির্ভরযোগ্য ৷
(মাজমাউয যাওয়ায়েদ: ২৮৪৩, পৃষ্ঠা: ২/৩৩৩)

2793 – حَدَّثَنِي رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ قَالَ: صَلَّيْتُ فِي مَسْجِدِ بَنِي غِفَارٍ فَذَكَرَ جُلُوسَهُ قَالَ: ” وَوَضَعْتُ يَدِي الْيُسْرَى عَلَى فَخِذِي الْيُسْرَى، وَوَضَعْتُ يَدِي الْيُمْنَى عَلَى فَخِذِي الْيُمْنَى، وَنَصَبْتُ أُصْبُعِي السَّبَابَةَ قَالَ: فَرَآنِي خُفَافُ بْنُ إِيمَاءِ بْنِ رَحَضَةَ الْغِفَارِيُّ وَكَانَتْ لَهُ صُحْبَةٌ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأَنَا أَصْنَعُ ذَلِكَ قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ ” إِذَا صَلَّى يَصْنَعُ ذَلِكَ ” وَكَانَ الْمُشْرِكُونَ يَقُولُونَ: ” إِنَّمَا يَصْنَعُ هَذَا مُحَمَّدٌ بِأُصْبُعِهِ لِيَسْحَرَ، وَكَذَبُوا “……إِنَّمَا كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُ ذَلِكَ؛ لِمَا يُوَحِّدُ بِهَا رَبَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى
রাসুলুল্লাহ সঃ যখন সালাতের শেষ বৈঠকে বসে শাহাদাত আঙ্গুল উঠাতেন, মুশরিকরা তখন বলত: নিশ্চয়ই মুহাম্মদ সঃ তা দিয়ে যাদু করে। আর, মুশরিকরা মিথ্যাবাদী ৷ নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সঃ এর উক্ত আঙ্গুল উঠানোর দ্বারা উদ্দেশ্য ছিলো:— একক/একজন আল্লাহ তাবারক ওয়া তা’য়ালা কে উদ্দেশ্য করে বুঝানো৷
(বায়হাকী কুবরা, হা/২৭৯৩)

উপরোক্ত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, শেষ বৈঠকে শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করাকে রাসূলুল্লাহ স. «‘তাওহীদ’ এবং ‘আল্লাহ তায়ালা একজন ই’ এটা উদ্দেশ্য করা বলেছেন»। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, তাশাহুদের মধ্যে ইশারা ওই সময়ে করতে হয় যখন তাওহীদের কালিমা তথা ﻟَﺎﺇﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ পাঠ করা হয়।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলার শেষে আঙ্গুল নামিয়ে ফেলতে হবে ৷ দলীলঃ—

জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত:—
فَقَالَ بِإِصْبَعِهِ السَّبَّابَةِ يَرْفَعُهَا إِلَى السَّمَاءِ وَيَنْكُتُهَا إِلَى النَّاسِ
অর্থাৎ “রাসুলুল্লাহ সঃ শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করলেন, তিনি আকাশের দিকে উঠালেন এবং মানুষের দিকে নামালেন” ৷ (সহীহ মুসলিমঃ ২৮৪০)

অন্য হাদীসে এসেছেঃ—
” ﺷَﻬَﺎﺩَﺓِ ﺃَﻥْ ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ” . ﻭَﻋَﻘَﺪَ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓً
লা ইলাহা ইল্লাহ বলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি আঙ্গুল বন্ধ করেন ।
(সহীহ মুসলিম-হা/২৩)

মুসলিম ২৩নং হাদীসের ব্যাখাঃ— ইশারা একটিমাত্র আঙ্গুল দিয়েই করতে হয় ৷
যেমন রাসুল ﷺ বলেছেনঃ-قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَحِّدْ أَحِّدْ.
এক আঙ্গুল দিয়েই ইশারা কর, এক আঙ্গুল দিয়েই ইশারা কর।
(মিশকাত,হা/ ৯১৩)

সুতরাং যে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করা হবে, ইশারা শেষে সেই আঙ্গুলটাই বন্ধ রাখতে হবে অথবা নামিয়ে ফেলতে হবে ৷
অতএব, এ হাদিসগুলো দ্বারা প্রমানিত হয় যে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলার পর আঙ্গুল নামিয়ে ফেলাই নিয়ম, আবারো উঠিয়ে আবারো ইশারা করা নিয়ম নয়।

যুক্তি:—কোনো অমুসলিম মুসলমান হওয়ার জন্য ঈমানের কালেমা পড়ার সময়ে আঙ্গুল আসমানের দিকে স্থিরভাবে ইশারা করে রাখে, কোনো নাড়াচাড়া করে না ৷ আর কালেমা পড়া শেষ হলেই নামিয়ে ফেলে ৷—এই পদ্ধতিটাতে চার মাযহাবের কারোর মধ্যেই কোনো ইখতিলাফ নাই ৷৷৷

তৃতীয় মাযহাবঃ— বারবার “ইশারা” করতে হবে বা বারবার আঙ্গুল নাড়াতে হবে ৷
এটা হাম্বলীদের মাযহাব ৷৷
তাদের দলীল হলো:-

ওয়ায়েল বিন হুজর রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
ﺛُﻢَّ ﻗَﺒَﺾَ ﺍﺛْﻨَﺘَﻴْﻦِ ﻣِﻦْ ﺃَﺻَﺎﺑِﻌِﻪِ ﻭَﺣَﻠَّﻖَ ﺣَﻠْﻘَﺔً، ﺛُﻢَّ ﺭَﻓَﻊَ ﺇِﺻْﺒَﻌَﻪُ ﻓَﺮَﺃَﻳْﺘُﻪُ ﻳُﺤَﺮِّﻛُﻬَﺎ ﻳَﺪْﻋُﻮ ﺑِﻬَﺎ
“রসূলুল্লাহ স. দু’টি আঙ্গুল গুটিয়ে বৃত্ত তৈরি করলেন আর আঙ্গুল উঠালেন। আমি দেখেছি তিনি সেটা (ইশারার জন্য) নাড়াচাড়া করছেন; তা দ্বারা দুআ করছেন”। (নাসাঈ: ৮৮৯,১২৬৮)

তাহকিকঃ হাদীসটিকে শায়েখ আলবানী রহঃ সহীহ বলেছেন ৷ কিন্তু, মূলতঃ এই হাদিসটি শায । কারণ:-

শায়খ শুআইব আরনাউত রহঃ মুসনাদে আহমাদের তাহকীকে ওয়াইল বিন হুজর রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে আঙ্গুল নাড়াচাড়া করার অংশটিকে শায বলে অভিহিত করে বলেছেন:—
ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ ﺩﻭﻥ ﻗﻮﻟﻪ : ” ﻓﺮﺃﻳﺘﻪ ﻳﺤﺮﻛﻬﺎ ﻳﺪﻋﻮ ﺑﻬﺎ ” ﻓﻬﻮ ﺷﺎﺫ ﺍﻧﻔﺮﺩ ﺑﻪ ﺯﺍﺋﺪﺓ – ﻭﻫﻮ ﺍﺑﻦ ﻗﺪﺍﻣﺔ – ﻣﻦ ﺑﻴﻦ ﺃﺻﺤﺎﺏ ﻋﺎﺻﻢ ﺑﻦ ﻛﻠﻴﺐ
অর্থাৎ ওয়াইল বিন হুজর রা.-এর হাদীসটি সহীহ। তবে «আঙ্গুল নাড়াচাড়া করার অংশটি শায» । কেননা আছেম বিন কুলাইবের ছাত্রদের মধ্যে যায়েদা বিন কুদামা ব্যতীত আর কেউ এ অংশটি বর্ণনা করেনি।
(মুসনাদে আহমাদ-১৮৮৭০)

আল্লামা আল-ওয়াদেয়ী রহঃ বলেনঃ বাহ্যিকভাবে বুঝা যায় হাদীসটি হাসান। কিন্তু তাতে শায শব্দ আছে। সেটি হল আঙ্গুল নাড়ানোর বিষয়টি। {আহাদীসে মুআল্লাহ-৩৮৯}
আল্লামা ইবনে খুযাইমা রহ. বলেন:
ﻟَﻴْﺲَ ﻓِﻲ ﺷَﻲْﺀٍ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺄَﺧْﺒَﺎﺭِ ‏« ﻳُﺤَﺮِّﻛُﻬَﺎ ‏» ﺇِﻟَّﺎ ﻓِﻲ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﺨَﺒَﺮِ ﺯَﺍﺋِﺪٌ ﺫِﻛْﺮُﻩُ
“শুধু এই হাদীসটি ব্যতীত কোন হাদীসের মধ্যে আঙ্গুল নাড়াচাড়া করার অংশটি নেই। এটা এ হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণিত হয়েছে। (সহীহ ইবনে খুযাইমা: ৭১৪ নম্বর হাদীসের আলোচনায়)
উদাহরণস্বরুপঃ—
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ مَيْمُونٍ الرَّقِّيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ وَهُوَ ابْنُ يُوسُفَ الْفِرْيَابِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «جَلَسَ فِي الصَّلَاةِ، فَافْتَرَشَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى، وَوَضَعَ ذِرَاعَيْهِ عَلَى فَخِذَيْهِ، وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ يَدْعُو بِهَا»
ওয়াইল ইবন হুজুর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলেন যে, তিনি সালাতে বসে তাঁর বাম পা বিছিয়ে দিলেন আর তাঁর হস্তদ্বয় তাঁর উরুদ্বয়ের উপর রাখলেন এবং তর্জনি আঙ্গুলী দ্বারা ইশারা করে তদ্দারা দোয়া করলেন।
সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ১২৬৪
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ, IRD

উপরের হাদীসে ইশারা এবং দুআর কথা ওয়ায়েল রাঃ বলেছেন ৷ কিন্তু নাড়াচাড়ার কথা বলেন নি ৷৷
আবার, আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের রাঃ থেকে বর্ণিত

হাদীসে পরিষ্কারভাবে এসেছেঃ—
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ ذَكَرَ، «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُشِيرُ بِأُصْبُعِهِ إِذَا دَعَا، وَلَا يُحَرِّكُهَا»
রসূলুল্লাহ স. দুআ করার (অর্থাৎ, তাশাহহুদ পড়ার) সময়ে আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। তবে তিনি এ সময়ে আঙ্গুল নাড়াতেন না।
( আবু দাউদ, হা/ ৯৮৯, সুনানে নাসাঈ, হা/১২৬৯, সুনানে কুবরা লিল-বায়হাকী, হা/ ২৭৯০)

হাদীসটির স্তরঃ— ইমাম নববী রহঃ বলেন: قَالَ النَّوَوِيُّ إِسْنَادُهُ صَحِيحٌ হাদীসটির সনদ সহীহ৷ (তুহফাতুল আহওয়াজীঃ ২/১৫৯) মুহাদ্দিস আব্দুল হক শিবলী রহঃ বলেন- হাদীসটির সনদ সহীহ। {আলআহকামুস সুগরা-২৪৯} ইবনে দাকীকুল ঈদ রহঃ বলেন- কতিপয় মুহাদ্দিসদের বক্তব্য অনুপাতে হাদীসটি সহীহ। {আলইলমাম ফি বিআহাদীসিল আহকাম-১/১৭৫}
আল্লামা ইবনুল মুলাক্কিন রহঃ বলেন- হাদীসটি সহীহ। {খুলাসাতুল বদরুল মুনীর-১/১৩৯, আলবাদরুল মুনীর-৪/১১, তুহফাতুল মুহতাজ-১/৩২৩}
শায়েখ হায়সামী রহঃ বলেন- সনদের রাবীগণ ثقة তথা নির্ভরযোগ্য । {মাযমাউজ জাওয়ায়িদ-২/১৪৩}
সহীহ হাদীস দ্বারা একথা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হচ্ছে যে, রাসূল সাঃ তাশাহুদের সময় শুধুমাত্র আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন, আঙ্গুল নাড়াতেই থাকতেন না।

আল্লামা ইমাম বায়হাকী রহঃ উভয় হাদীসের বাহ্যিক এ বৈপরীত্য নিরসন করে বলেনঃ—
يُحْتَمَلُ أَنْ يَكُونَ مُرَادُهُ بِالتَّحْرِيكِ الْإِشَارَةَ لَا تَكْرِيرَ تَحْرِيكِهَا، حَتَّى لَا يُعَارِضَ حَدِيثَ ابْنِ الزُّبَيْرِ
আঙ্গুল নাড়াতে থাকা দ্বারা উদ্দেশ্য হল, ইশারা করা। আঙ্গুল নাড়াতেই থাকা উদ্দেশ্য নয়। এ অর্থ নিলে এ হাদীসটি আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের রাঃ এর বর্ণনার সাথে মিলে যায়।
{সুনানে বায়হাকী কুবরা, বর্ননা নং-২৬১৫}

স্বাভাবিক যুক্তিও একথা বলে যে, তাশাহুদের সময় বারবার আঙ্গুল নাড়াতে থাকা সালাতের খুশু খুজুর খেলাফ। এভাবে আঙ্গুল নাড়াতে থাকলে পাশের জনেরও সালাতের মনযোগের ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। রাসুলুল্লাহ সঃ বা সাহাবীরা কখনই বারবার আঙ্গুল নাড়াতে থেকে পাশের মনোযোগ/খুশুখুজু নষ্ট করতেন না৷

আল্লাহ তা’য়ালা বুঝার তাওফীক দান করুন আমিন ৷

(মাওঃ আরিফুল ইসলাম হাফি: পোস্ট থেকে কপিকৃত)

Exit mobile version