Writing

এক টুকরো রুটির রিজিক

দুপুর ২টা
এক টুকরো রুটি আরাম করে খাচ্ছে একটা বিড়াল, কিন্তু খাওয়া শেষ না করেই চলে গেল,পড়ে র‌ইলো অর্ধেকটা রুটির অংশ।
বিকাল ৫টা
অর্ধ রুটির বুক জুড়ে পিঁপড়া দলের কর্মযজ্ঞ। কয়েকশ পিঁপড়া দল বেঁধে রুটি আহরণের উৎসবে মেতেছে,এই রুটিতেই যে তাদের এবং তাদের পরিবারপরিজনের পেট ভরবে। কিন্তু তাদের জন্য এতো বড় রুটির কিছু গুঁড়োই যথেষ্ট।

রাত ৮টা
সেই অবশিষ্ট রুটি রিজিক হয়ে একটা কুকুরের মুখে ঘুরছে। হাড্ডিসার কুকুরটার খাদ্যের সন্ধানে সারাদিনের যে ঘুরাঘুরি তা যেন এই ছোট্ট একটা রুটির টুকরোই শেষ হয়েছে। একটু দূরে গিয়ে সে অবশিষ্ট রুটিটা খেয়ে ফেললো।
এক‌ই দিনের তিনটা দৃশ্য কিন্তু ঘটনার প্রেক্ষাপট একটাই-একটি রুটি থেকে নিজের রিজিক অনুসন্ধান আর আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা মাত্র একটা রুটি দিয়েই তিনটি প্রাণীর রিজিকের ব্যবস্থা করেছেন।কতোটা বরকত আল্লাহ পাক দিয়েছেন যে একটা রুটির টুকরো তিনটি প্রাণীর জন্য যথেষ্ট হলো আর আল্লাহ পাক তো বলেছেন‌ই,

“আর যমীনে বিচরণকারী প্রতিটি প্রাণীর রিয্কের দায়িত্ব আল্লাহরই।”
[সূরা হুদ:আয়াত নং ০৬]

অথচ এই রিজিক নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম আসেনা,ইবাদাতে মন বসে না। রিজিকের চিন্তায় আমরা হারাম উপার্জনের জন্য চেষ্টা করি, মানুষের হক নষ্ট করি। রিজিকের ব্যবস্থা যদি না হয়-এই চিন্তায় সন্তানাদিকে বয়স হ‌ওয়া সত্ত্বেও বিয়ে দেই না।
আর বিপরীতে আপনার আমার রব চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে,দেখো আমার সৃষ্ট অবলা প্রাণীগুলোর রিজিক আমিই দিচ্ছি আর তোমাদের রিজিক‌ও আমার হাতে এবং কুরআনে তো সরাসরিই বলেছেন,

“আর প্রতিটি বস্তুরই ভান্ডারসমূহ রয়েছে আমার কাছে এবং আমি তা অবতীর্ণ করি কেবল নির্দিষ্ট পরিমাণে।আর আমরা তাতে জীবিকার ব্যবস্থা করেছি তোমাদের জন্য এবং তোমরা যাদের রিযিকদাতা নও তাদের জন্যও।”
[সূরা হিজর:আয়াত নং ১৯-২০]

যেখানে ঘোষণা এসেছে আমাদের রবের তরফ থেকে,যেখানে প্রতিনিয়ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন আরশের মালিক,যেখানে রিজিক দেওয়ার মালিক স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা সেখানে কেন আমরা রিজিকের জন্য মাত্রাতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করছি?
আমাদের রিজিকের দুশ্চিন্তা কিন্তু শয়তানের তৈরি করা ফাঁদ ছাড়া কিছুই নয় আর আল্লাহ পাক এ ব্যাপারেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন,

শয়তান তোমাদেরকে দরিদ্রতার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং অশ্লীল কাজের আদেশ করে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে তার পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।”
[সূরা বাকারা:আয়াত নং ২৬৮]

লিখেছেন

জেনারেল লাইনে পড়াশোনার ব্যস্ততায় দ্বীনি জ্ঞানার্জনের সুযোগ খুবই কম পেয়েছি তারপরও অনলাইন ভিত্তিক দাওয়াহ এবং ইসলামী ব‌ইয়ের সুবাদে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের সুযোগ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
সেই জ্ঞানকে ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ইসলামের সৌন্দর্যকে উম্মাহর সামনে ফুটিয়ে তোলার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আমার এই টুকটাক লেখালেখি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Islami Lecture