অনেকেই আছি যারা একটা মুখোশ পরে রয়েছি

কুরআনের যে আয়াতটা সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর লাগে সেটা হচ্ছে সুরাহ আল বাক্বারার এই আয়াতটি। জাহান্নামের আজাবের আয়াতগুলো ভয়ংকর তবে সেটা তো মৃত্যুর পরের হিসাব। দুনিয়াতেই যেই আয়াত বারংবার ঝাঁঝালো ভাবে হুংকার দেয় তা এই আয়াত ছাড়া আর অন্য কোনোটাই না!

أَتَأْمُرُونَ ٱلنَّاسَ بِٱلْبِرِّ وَتَنسَوْنَ أَنفُسَكُمْ وَأَنتُمْ تَتْلُونَ ٱلْكِتَٰبَۚ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
অর্থঃ তোমরা কি মানুষকে সৎকাজের নির্দেশ দাও, আর নিজেদের কথা ভুলে যাও, অথচ তোমরা কিতাব পাঠ করো। তবে কি তোমরা বুঝ না?

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কিছুসংখ্যক জান্নাতবাসী অপর কিছুসংখ্যক জাহান্নামবাসীদেরকে অগ্নিদগ্ধ হতে দেখে জিজ্ঞেস করবেন যে, তোমরা কিভাবে জাহান্নামে প্রবেশ করলে, অথচ আল্লাহ্‌র কসম, আমরা তো সেসব সৎকাজের দৌলতেই জান্নাত লাভ করেছি, যা তোমাদেরই কাছে শিখেছিলাম?
জাহান্নামবাসীরা বলবে, আমরা মুখে অবশ্য বলতাম কিন্তু নিজে তা কাজে পরিণত করতাম না।- [মুত্তাফাকুন আলাইহ]

এই অনলাইন প্লাটফরমে এই আয়াতে যে কাজের কথা বলা হয়েছে তা অহরহ হয়ে যায়, আমরা অনেকেই অনেক আমলের ব্যপারে লিখি, অনেক দুয়া, অনেক রোজা, অনেক নামাজ, সাদাকা এটা সেটা কত কিছু।
যা দ্বারা অনেকেই উপকৃত হয়, আবার এমন অনেক নাসিহাবানী লিখি যা দ্বারা অনেকেই গুনাহ হতে ফিরে আসে অথচ লেখক সেই গুনাহে লিপ্ত থাকে। আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছি যারা একটা মুখোশ পরে রয়েছি।

অনলাইনে যত পরহেজগার বাস্তবে ততটাই বিপরীত!

অনেক সময় সেল্ফ রিমাইন্ডার হিসেবে অনেক লেখা শেয়ার করি, আমরা নিজেরা সেই বিষয়ে গাফেল হলেও সেই রিমাইন্ডারে অনেকেই সচেতন হয়ে যায়। এক হিসেবে তা মন্দ নয়, অন্যের বেশ উপকার হচ্ছে কিন্তু এর জন্য কেয়ামতের দিন যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সামনা করতে হবে?
তবে কি কাউকে সাবধান করব না?

ভাল কিছু জানলে শিখলে কাউকে জানাব না?
হ্যা অবশ্যই সাবধান করব, অবশ্যই জানাব, তবে নিজেকেও সব সময় সেই আমলে অভ্যস্ত রাখতে হবে। অন্যথা নিজের আখেরি হালতের কথা ভেবে চুপ থাকাই শ্রেয়। আড়ালে থেকে কয়েকটা লাইন লিখে দিয়ে সবার চোখে নিজেকে ভাল সাজিয়ে রেখে লাভ কী?

Zainab Al-Gazi

Exit mobile version