Writing

যে সব নারীদের বিয়ে করা ইসলামী শরী‘আতে নিষিদ্ধ

যে সব নারীদের বিয়ে করা ইসলামী শরী‘আতে নিষিদ্ধ , যেসব নারীদেরকে বিয়ে করা হারাম তারা দু’ প্রকার:
স্থায়ীভাবে হারাম

অস্থায়ীভাবে হারাম।

স্থায়ীভাবে হারাম

তারা দু’ধরণের:
প্রথমত; যেসব নারী যারা উম্মতের সকলের ইজমা‘ বা ঐক্যমতে হরাম। তারা আবার তিন শ্রেণি।
এ নারীদের ক্ষেত্রে পর্দার শিথিলতা রয়েছে। সাধারণত মাহরাম বলতে এদেরকে বোঝায়; আর এদের সাথে সফর করা জায়েয।

ক. যারা ব্যক্তির বংশীয় সম্পর্কের কারণে হারাম। আর তারা হচ্ছেন সাত শ্রেণি:
১- মা: মা বলতে বুঝাবে এমন সকল নারী, যারা আপনাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জন্ম দিয়েছে, পিতার দিক থেকে হোক কিংবা মাতার দিক থেকে হোক।
তাই তাতে জন্মদাত্রী মা ছাড়াও নিম্নের ব্যক্তিগণ অন্তর্ভুক্ত:
• দাদী (বাবার মা),
দাদার মা,
দাদীর মা,
দাদার বাবার মা,
দাদার মায়ের মা,
দাদীর বাবার মা,
দাদীর মায়ের মা—এভাবে যত উপরে যাবে সবই নিষিদ্ধ।

• নানী (মায়ের মা),
নানার মা,
নানীর মা,
নানার বাবার মা,
নানার মায়ের মা,
নানীর বাবার মা,
নানীর মায়ের মা—এভাবে যত উপরে যাবে সবই নিষিদ্ধ।

২- কন্যা: এমন নারী যাকে আপনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জন্ম দিয়েছেন।
তাই তাতে আপন ঔরসজাত কন্যা ছাড়াও আরও যারা অন্তর্ভুক্ত:
• ছেলের ঘরের নাতনি (ছেলের কন্যা),
ছেলের কন্যার কন্যা,
ছেলের কন্যার ছেলের কন্যা,
ছেলের কন্যার কন্যার কন্যা—এভাবে যত নিচের দিকে যাক না কেন।
•মেয়ের ঘরের নাতনি (কন্যার কন্যা),
কন্যার কন্যার কন্যা,
কন্যার কন্যার ছেলের কন্যা,
কন্যার কন্যার কন্যার কন্যা— এভাবে নিচের দিকে যত যাক না কেন।

৩- বোন: এমন নারী যাকে আপনার পিতা-মাতা উভয়ে জন্ম দিয়েছে, অথবা পিতা জন্ম দিয়েছে, অথবা আপনার মাতা জন্ম দিয়েছে।
আর তাই আপন বোন ছাড়াও এতে অন্তর্ভুক্ত:
• বৈমাত্রেয় (বাবার পক্ষের) বোন।
• বৈপিত্রেয় (মায়ের পক্ষের) বোন।

৪- ফুফু: এমন নারী, যিনি আপনাকে জন্ম দিয়েছে এমন কোনো পিতৃপুরুষের বোন। তাই তাতে অন্তর্ভুক্ত হবে:
• পিতার আপন বোন/বৈপিত্রেয় (মায়ের পক্ষের) বোন/বৈমাত্রেয় (পিতার পক্ষের) বোন।
• দাদার আপন বোন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন; কারণ তারা বাবার ফুফু।
• নানার আপন বোন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন; কারণ তারা মায়ের ফুফু।
• দাদার বাবার আপন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন; কারণ তারা দাদার ফুফু। এভাবে আরও উপরের যেকোনো পূর্বপুরুষের বোন।
• নানার বাবার আপন বোন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন; কারণ তারা নানার ফুফু। এভাবে আরও উপরের যেকোনো পূর্বপুরুষের বোন।

৫- খালা: এমন নারী, যিনি আপনাকে জন্ম দিয়েছে এমন কোনো নারীর বোন। তাই তাতে অন্তর্ভুক্ত হবে:
• মায়ের আপন বোন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন।
• নানীর আপন বোন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন; কারণ তারা মায়ের খালা।
• দাদীর আপন বোন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন; কারণ তারা বাবার খালা।
• দাদার মায়ের আপন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন; কারণ তারা দাদার খালা। এভাবে আরও উপরের যেকোনো পূর্বসূরী নারীর বোন।
• নানার মায়ের আপন বোন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন; কারণ তারা নানার খালা। এভাবে আরও উপরের যেকোনো পূর্বসূরী নারীর বোন সবই বিয়ে করা হারাম।

৬- ভাইয়ের কন্যা: এমন নারী যাকে আপনার ভাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জন্ম দিয়েছে (যে কোনো পক্ষের ভাই হোক)। তাই তাতে অন্তর্ভুক্ত হবে,
• আপন ভাই/বৈপিত্রেয় ভাই/বৈমাত্রেয় ভাই এর মেয়ে।
• আপন ভাই/বৈপিত্রেয় ভাই/বৈমাত্রেয় ভাই এর মেয়ের মেয়ে, এভাবে যত নিচেই যাক।
• আপন ভাই/বৈপিত্রেয় ভাই/বৈমাত্রেয় ভাই এর ছেলের মেয়ে, এভাবে যত নিচেই যাক।

৭- বোনের কন্যা: এমন নারী যাকে আপনার বোন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জন্ম দিয়েছে (যে কোনো পক্ষের বোন হোক)। তাই তাতে অন্তর্ভুক্ত হবে,
• আপন বোন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন এর মেয়ে।
• আপন বোন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন এর মেয়ের মেয়ে, এভাবে যত নিচেই যাক।
• আপন বোন/বৈপিত্রেয় বোন/বৈমাত্রেয় বোন এর ছেলের মেয়ে, এভাবে যত নিচেই যাক।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা, মেয়ে, বোন, ফুফু, খালা, ভাইয়ের মেয়ে, বোনের মেয়ে…।’
[সূরা আন-নিসা: ২৩]

খ. যারা বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে হারাম। তারা মৌলিকভাবে চার শ্রেণি:
১- পিতৃপুরুষের স্ত্রী: অর্থাৎ আপনাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জন্ম দিয়েছে এমন পুরুষ যাকে বিয়ে করেছিল। এতে অন্তর্ভুক্ত,
• বাবার স্ত্রী।
• দাদার স্ত্রী।
• দাদার বাবার স্ত্রী।
• দাদীর বাবার স্ত্রী।
• দাদার দাদার স্ত্রী
• দাদীর দাদার স্ত্রী—এভাবে যত উপরেই যাক।
• নানার স্ত্রী।
• নানার বাবার স্ত্রী।
• নানীর বাবার স্ত্রী।
• নানার দাদার স্ত্রী।
• নানীর দাদীর স্ত্রী—এভাবে যত উপরেই যাক।
কারণ আল্লাহ বলেন, “আর নারীদের মধ্যে তোমাদের পিতৃপুরুষ যাদেরকে বিয়ে করেছে, তোমরা তাদেরকে বিয়ে করো না; তবে পূর্বে যা সংঘটিত হয়েছে (সেটা ক্ষমা করা হলো) নিশ্চয় তা ছিল অশ্লীল, মারাত্মক ঘৃণ্য ও নিকৃষ্ট পন্থা।” [সূরা আন-নিসা: ২২]
২- পুত্র-পৌত্রের স্ত্রী। অর্থাৎ আপনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জন্ম দিয়েছেন এমন কোনো ছেলে/নাতি যে নারীকে বিয়ে করেছিল। এতে অন্তর্ভুক্ত হবে,
• ছেলের স্ত্রী।
• ছেলের ছেলে (ছেলের ঘরের নাতির) স্ত্রী, এভাবে যত নিচেই যাক।
• কন্যার ছেলের স্ত্রী (মেয়ের ঘরের নাতির স্ত্রী), এভাবে যত নিচেই যাক।
৩- স্ত্রীর মা: অর্থাৎ সে নারী, যে আপনার স্ত্রীকে জন্ম দিয়েছে। তাতে অন্তর্ভুক্ত হবে,
• স্ত্রীর মা।
• স্ত্রীর নানী (মায়ের মা)।
• স্ত্রীর দাদী (বাবার মা)—এভাবে যত উপরের হোক।
উপরোক্ত তিন শ্রেণি বিয়ে হওয়ার সাথে সাথেই চিরতরে হারাম হয়ে যাবে, সহবাস হোক বা না হোক।
আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে…. ‘শাশুড়ী ও …..আর তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ তোমাদের ঔরসজাত ছেলের স্ত্রী। [সূরা আন-নিসা: ২৩]
৪- স্ত্রীর কন্যা। অর্থাৎ সে নারী, যাকে আপনার স্ত্রী জন্ম দিয়েছে। একে ‘রাবীবাহ’ বলা হয়। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে:
• স্ত্রীর কন্যা।
• স্ত্রীর পুত্রের কন্যা।
• স্ত্র্রীর কন্যার কন্যা—এভাবে যত নিচে যাক।
তবে শর্ত হচ্ছে, উক্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস হলে কেবল উক্ত কন্যা বা কন্যারা হারাম হবে। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে…. তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সাথে সংগত হয়েছ তার আগের স্বামীর ঔরসে তার গর্ভজাত মেয়ে। [সূরা আন-নিসাা: ২৩]

গ. যারা দুধপানের সম্পর্কের কারণে হারাম। তারাও উপরোক্ত সাত শ্রেণি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে… দুধমা, দুধবোন..।’
[সূরা আন-নিসা: ২৩]

কোনো ব্যক্তি যে নারীর দুধপান করেছে, সে তার দুধ-সম্পর্কের মা এবং উক্ত মায়ের স্বামী তার দুধ-সম্পর্কের বাবা হিসেবে গণ্য হবে। তারপর যে ধরনের বংশীয় সম্পর্কের কারণে একজন নারীকে বিয়ে করা হারাম হয়, অনুরূপ দুধ-সম্পর্কে সম্পর্কিত নারীরা হারাম হবেন। এতে নিম্নোক্ত নারীরা অন্তর্ভুক্ত,
• দুধ সম্পর্কের মা, যত উপরই যাক। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
• দুধ সম্পর্কের বোন, যেরকম হোক। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
• দুধ সম্পর্কের কন্যা, যত নিচেই যাক। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
• দুধ সম্পর্কের ফুফু, যত প্রকার ফুফু হতে পারে। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
• দুধ সম্পর্কের খালা, যত প্রকার খালা হতে পারে। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
• দুধ সম্পর্কের ভাইয়ের কন্যা, যত নিচেই যাক। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
• দুধ সম্পর্কের বোনের কন্যা, যত নিচেই যাক। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
এছাড়াও বৈবাহিকসূত্রে হারাম হওয়ার কারণ বিদ্যমান থাকলে দুধসম্পর্কে সম্পৃক্ত অনুরূপ নারীও হারাম হবে। এর মধ্যে নিম্নোক্ত নারীরা অন্তর্ভুক্ত:
• দুধ সম্পর্কের পিতার স্ত্রী, যত উপরের হোক। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
• দুধ সম্পর্কের পুত্রের স্ত্রী, যত নিচের হোক। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
• দুধ সম্পর্কিত স্ত্রীর মা, যত উপরের হোক। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
• দুধ সম্পর্কিত স্ত্রীর কন্যা, যত নিচের হোক। (পূর্বে তা বর্ণিত হয়েছে)।
কাজেই উপরোক্ত কোনো প্রকার সম্পর্কে সম্পর্কিত না হলে তার সাথে বিয়ে বৈধ। যেমন,
– দুধ সম্পর্কের ভাই/বোনের মা।
– দুধ সম্পর্কের চাচা/ফুফুর মা।
– দুধ সম্পর্কের মামা/খালার মা।
– দুধ সম্পর্কের ছেলের বোন।
– দুধ সম্পর্কের ছেলের দাদী/নানী।

দ্বিতীয়ত: যে সব মহিলা স্থায়ীভাবে হারাম হওয়ার বিষয়ে উম্মতের ফকীহগণ মতভেদ করেছেন।

তারা দু’শ্রেণির:
১- ব্যভিচারের কারণে হারাম হওয়া। এ ব্যাপারে দু’টি মত রয়েছে,
এক. মালেক একটি মতে, শাফে‘ঈ ও আহমাদ বলেন, কোনো মহিলার সাথে ব্যভিচার হওয়ার কারণে তার মা ও কন্যাকে বিয়ে করা হারাম নয়। অনুরূপ সে মহিলাও যার সাথে যিনা করেছে তার বাবা ও সন্তানের সাথে বিয়ে করতে পারবে।
দুই. আবু হানীফা, মালেকের একটি মত, সাওরী, আওযা‘ঈ বলেন, ব্যাভিচারের কারণে বিয়ের মতই সব হারাম হয়ে যাবে।
২- লি‘আন (স্ত্রীর প্রতি ব্যভিচারের তকমা অথবা সন্তান অস্বীকার করার সাথে জড়িত শপথ ও অভিসম্পাত জনিত বিচ্ছেদ) এর কারণে হারাম হওয়া। এ ব্যাপারে দু’টি মত লক্ষণীয়:
এক. হাম্বলী ও মালেকী মাযহাব মতে লি‘আন হওয়ার সাথে সাথে লি‘আনকারীনী মহিলা ও লি‘আনকারী পুরুষের মধ্যে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা তৈরি হবে। হানাফী মাযহাবের ইমাম আবু ইউসুফও বলেছেন তারা পৃথক হলে আর কখনো একত্রিত হতে পারবে না।
দুই. হানাফী মাযহাব অনুসারে যদি পুরুষ নিজেকে মিথ্যাবাদী স্বীকার করে অপবাদের হদ মেনে নেয়, তবে তাদের মাঝে পুনরায় বিয়ে হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

অস্থায়ীভাবে হারাম

আর তা দু’ শ্রেণির
প্রথমত সেসব নারী যারা অস্থায়ীভাবে হারাম হওয়ার ব্যাপারে সকল ইমাম ও আলেমের ঐকমত্য রয়েছে। তারা কয়েক প্রকার:
ক. যে সব নারী অন্য নারীর সাথে একসাথে বিয়ে হওয়া হারাম। আর তা তিন ধরণের নারী:
১- দু’ বোনকে একসাথে বিয়েতে রাখা। আর তাতে প্রবেশ করবে,
• আপন দু’ বোন।
• বৈপিত্রেয় দু’ বোন।
• বৈমাত্রেয় দু’ বোন।
• দুধ-সম্পর্কের দু’বোন।
চাই তাদেরকে একই মজলিসে বিয়ে করুক বা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিয়ে করুক, কোনোভাবেই একসাথে রাখা যাবে না।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে…. দুই বোনকে একত্র করা, আগে যা হয়েছে, সেটা ভিন্ন কথা। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
[সূরা আন-নিসা: ২৩]

২- কোনো মহিলা ও তার সাথে অপর কোনো নারীকে বিয়ে করা, যাদের একজন পুরুষ হলে তাদের মধ্যকার কোনো বিয়ে নিষিদ্ধ হতো। সুতরাং অন্য কেউ তাদের দু’জনকে একই সময়ে বিয়েতে আবদ্ধ করতে পারে না। আর এর আওতায় পড়বে,
– কোনো মহিলা ও মহিলার ফুফু (যে কোনো প্রকার ফুফু, দুধ-সম্পর্কের হলেও)।
– কোনো মহিলা ও মহিলার খালা (যে কোনো প্রকার খালা, দুধ-সম্পর্কের হলেও)।
– কোনো মহিলা ও মহিলার বোনের মেয়ে (যে কোনো প্রকার বোন)।
– কোনো মহিলা ও মহিলার ভাইয়ের মেয়ে (যে কোনো প্রকার ভাই)।
– কোনো মহিলা ও মহিলার মেয়ের মেয়ে।
– কোনো মহিলা ও মহিলার ছেলের মেয়ে।
কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কোনো মহিলা ও তার ফুফুকে একই সময়ে বিয়েতে একসাথ করা যাবে না। কোনো মহিলা ও খালাকে একসই সময়ে বিয়েতে একসাথ করা যাবে না।”

অনুরূপ অপর হাদীস,
“কোনো মহিলাকে তার ফুফুর ওপর বিয়ে করা করা যাবে না, অনুরূপ কোনো ফুফুকেও তার ভাইয়ের কন্যার সাথে বিয়ে করা যাবে না, কোনো মহিলাকে তার খালার ওপর বিয়ে করা যাবে না, অনুরূপ কোনো খালাকেও তার বোনের কন্যার ওপর বিয়ে করা যাবে না। বড় বোনের ওপর ছোটবোন, কিংবা ছোটোবোনের ওপর বড় বোনকে বিয়ে করা যাবে না”।
[আবু দাঊদ, হাদীস নং ২০৬৫; তিরমিযী, হাদীস নং ১১২৬; ইরওয়াউল গালীল ৬/২৯০; সহীহ সনদে]

৩- একই সময়ে চারের অধিক স্ত্রীকে বিয়ে বন্ধনে রাখা যাবে না। কারণ,
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তোমরা নারীদের মধ্যে যাদেরকে উত্তম মনে কর তাদের বিয়ে কর, দুই, তিন, চার পর্যন্ত। আর যদি তোমরা ইনসাফ না করার ভয় কর তবে একটিতে সীমাবদ্ধ থাক”।
[সূরা আন-নিসা: ৩]

অনুরূপ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসে এসেছে, এক লোক দশজন স্ত্রী সহ ইসলাম গ্রহণ করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে চারটি পছন্দ করে বাকীগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
[আবু দাঊদ, ২২৪১; ইরওয়াউল গালীল, ১১৮৫; সহীহ সনদে]

খ. যেসব নারী সাময়িক বাধা থাকার কারণে হারাম। আর তা কয়েক প্রকার নারী:
১- কোনো মহিলা অপর কারও তালাক বা মৃত্যুজনিত ইদ্দতে থাকলে তাকে বিয়ে করা হারাম।
২- কোনো মহিলা তার স্বামী কর্তৃক তিন তালাক দিলে স্বামীর জন্য হারাম।
৩- কোনো মহিলা আহলে কিতাব ব্যতীত অন্য কোনো প্রকারের কাফের হলে তাকে বিয়ে হারাম।
৪- কোনো মহিলা দাসী হলে দাসী অবস্থায় বিয়ে করা হারাম।
৫- কোনো মহিলা দাসের মনিব হলে দাসের জন্য হারাম।
৬- কোনো মহিলা কারও স্ত্রী হলে অন্যদের জন্য হারাম।

কারণ আল্লাহ বলেন, “আর নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া সব সধবা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ”
[সূরা আন-নিসা: ২৪]

দুই. যাদের সাময়িক হারাম হওয়ার ব্যাপারে মতভেদ আছে, তারা হচ্ছেন,
১- হজ্জ বা উমরার ইহরাম অবস্থায় বিয়ে করা। এ বিয়ে মালেক, শাফে‘ঈ ও আহমাদ এ তিন ইমামের নিকট জায়েয নাই। কিন্তু ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহর নিকট জায়েয আছে।


২- ব্যভিচারীনী মহিলাকে বিয়ে করা, যখন তার যিনার বিষয়টি জানা যাবে, যতক্ষণ না সে তাওবাহ করবে ও ইদ্দত শেষ না হবে। “আল্লাহ বলেন,”। [সূরা আন-নূর: ৩] কিন্তু ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহর নিকট এ বিয়ে জায়েয হবে। তবে ইদ্দত শেষ হওয়া পর্যন্ত তার সাথে উপগত হবে না।

৩- কোনো মহিলা অসুস্থতার কারণে হারাম হওয়া। আবু হানীফা ও শাফে‘ঈর মতে এ বিয়ে জায়েয। আর ইমাম মালেক বলেন, জায়েয হবে না। ইমাম মালেক এর অপর মতে, তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ করে দেয়া মুস্তাহাব।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button